সেঁজুতি দাস
আর মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা, তারপরেই উমা সপরিবারে হাজির হবেন মর্ত্যে। সারা বছর অধীর আগ্রহে মানুষ অপেক্ষা করে থাকেন দুর্গা পুজোর জন্য। তার মধ্যে কলকাতার পুজো-কে ঘিরে উন্মাদনা বরাবরই তুঙ্গে থাকে। থিম পুজোর দৌড়ে কম বেশী এগিয়ে থাকবে সব ক্লাবই। প্রতি বছরের মতো এবছরও বেহালার দেবদারু ফটকে পুজোয় আসতে চলেছে নতুন চমক।
বাঙালিকে ভালভাবে জানতে হলে, চিনতে হলে এবার পুজোয় অবশ্যই আসতে দেবদারু ফটকে। বাঙালির বারোমাস্যা তুলে ধরতেই এবারের থিম গ্ল্যাডলি বাঙালি। বিশ্বের যে প্রান্তেই আপনি থাকুন না কেন বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যের জন্য বাঙালিকে সবার থেকে আলাদা করতেই পারবূন। যেমন ধরুন বাঙালির বাজার করা, চায়ের ঠেকে তুফান তোলা, আবার রবিবার এলেই কব্জি ডুবিয়ে মাংসভাত খাওয়া। এই সব কিছুতেই বাঙালি একমেব অদ্বিতীয়। এছাড়া বারোমাসে তেরো পার্বন পালনেও বাঙালিকে সবার মাঝে আলাদা করে চিনে নেওয়া যায়। বাঙালির এই ইউনিকনেসই মজার ছলে পুজো মণ্ডপের দু পাশের দেওয়াল জুড়ে রঙ তুলিতে ফুটিয়ে তুলছেন সুম ও মজুমদার। ছবির পাশাপাশি বঙ্গজীবনের অঙ্গ হিসেবে থাকছে বেশ কিছু প্রপসও।
দেবদারু ফটক ক্লাবের সদস্য অরিজিৎ হালদারের কথায়, নানান দুঃখ কষ্ট, টানাপোড়েন রোজকার জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। পুজোর কটা দিন সেসব ভুলে আনন্দে মেতে ওঠে আমবাঙালি। বছরভর এই কটা দিনের অপেক্ষায় থাকে বাঙালি। তাই পুজো দেখে আম আদমি তথা বাঙালি যাতে পুরোপুরি খুশি হতে পারে সে কথা মাথায় রেখেই মণ্ডপ সাজাচ্ছেন দেবদারু ফটক ক্লাব। মণ্ডপ সজ্জার দায়িত্বে আছেন সুমি মজুমদার ও শুভদীপ মজুমদার। মণ্ডপের দুধারের দেওয়াল জুড়ে ছবিগুলি এঁকেছেন সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়। আলোয় রয়েছেন পিনাকী গুহ। আবহসঙ্গীত করছেন তিমির বিশ্বাস ও গৌতম ব্রহ্ম। আর মূর্তির দায়িত্বে রয়েছেন পিন্টু সিকদার। সাবেকী ও থিমের মেলবন্ধনে মূর্তি তৈরি হচ্ছে। চতুর্থীতে অনাথ আশ্রমের শিশুদের হাতে পুজোর উদ্বোধন করবেন ক্লাব কর্তারা। এবার এঁদের পুজোর বাজেট পঁচিশ লক্ষ টাকা। হাতে আর খুব বেশি সময় নেই। তাই এখন জোর কদমে মণ্ডপের কাজ চলছে ।
বাঙালির তিনশো পঁয়ষট্টি দিনের ওঠাপড়ার জীবনের রেখাচিত্রের মজা নিতে একবার ঘুরে আসতেই হবে বেহালার দেবদারু ফটকে।