
Indian Cricket Team: মাঠের ভিতর এবং ড্রেসিংরুমে দলের ক্যাপ্টেনকেই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হয়। সেটা প্রথম একাদশ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কিংবা ড্রেসিংরুমের কোনও সমস্যা, ক্যাপ্টেনই ফাইনাল ডিসিশন বা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গায় থাকেন।
এই বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন একাধিক প্রাক্তন তারকা। প্রসঙ্গত, রোহিত শর্মা সরে যাওয়ার পর, ইংল্যান্ড সফরে ভারতীয় টেস্ট দলের নতুন অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন শুভমান গিল। ব্যাটার হিসেবে তিনি নিঃসন্দেহে সফল। কারণ, একের পর এক সেঞ্চুরি আসছে তাঁর ব্যাট থেকে। কিন্তু প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে তাঁর অধিনায়কত্ব নিয়ে। অধিনায়ক হিসেবে কি স্বাধীনভাবে দল পরিচালনা করতে পারছেন? না কি কোচ গৌতম গম্ভীর তাঁকে ক্রমাগত নিয়ন্ত্রণ করছেন?
ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজ় জে চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে, সেখানে লাঞ্চ বিরতির সময় আলোচনায় বসেন ইংল্যান্ডের দুই প্রাক্তন অধিনায়ক নাসের হুসেন এবং মাইকেল ভন। সেই প্যানেলে ছিলেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক সুনীল গাভাসকার নিজেও। সেখানেই গম্ভীর-শুভমানের সম্পর্ক নিয়ে যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন ভারতের এই প্রাক্তন তারকা। তাঁর কথায়, ‘‘দলের কোচ টেস্ট ম্যাচের জন্য টিমকে তৈরি করে দেবেন। এরপর দল খেলতে নামলে দায়িত্ব অধিনায়কের হাতে। পরিস্থিতি অনুযায়ী, মাঠের মধ্যে অধিনায়ককেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সেখানে কোচের কোনও ভূমিকা থাকে না। এমনকি, কোন ১১ জন দলে খেলবে এবং ব্যাটিং অর্ডার কেমন হবে, এইসব নিয়ে কোচ এবং অধিনায়কের মধ্যে আলোচনা নিশ্চয়ই হবে। কিন্তু সেটা দিনের খেলা শুরুর আগে কিংবা বিরতিতে অথবা খেলা শেষের পর কোচ তাঁর পরামর্শ দিতে পারেন।’’
অন্যদিকে, মাইকেল ভনের মতে, ‘‘টেস্ট ক্রিকেটে কোচিংয়ের সঙ্গে সাদা বলের ক্রিকেটের কোচিংকে আবার গুলিয়ে ফেললে হবে না। দুটো সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। যেমন ব্রেন্ডন ম্যাকালাম অত্যন্ত ঠান্ডা মাথার একজন মানুষ এবং নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে চলেন। তাছাড়া টেস্ট ক্রিকেট দীর্ঘ সময়ের এবং শক্ত খেলা। প্রতিদিন ক্রিকেটারদের দিকে আলাদা আলাদাভাবে নজর দিতে হয়। সবথেকে বড় বিষয়, টেস্ট ক্রিকেটে ম্যান ম্যানেজমেন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। ক্রিকেটারদের মানসিকতা ঠিক রাখতে হয়। কারণ, মাঠে নেমে তারা যাতে খেলাটা উপভোগ করতে পারে, সেটা দেখতে হয়। টি-২০ বা একদিনের ক্রিকেটের মতো বিষয়টাকে ভাবলে চলবে না।"
ইংল্যান্ডের আর এক প্রাক্তন অধিনায়ক নাসির হুসেন বলছেন, "রিকি পন্টিং, ব্রায়ান লারা, গ্রেম স্মিথের কথা বলতে পারি। এখনকার অধিনায়কদের মধ্যে বেন স্টোকস, প্যাট কামিন্সের কথাও বলব। অধিনায়ক হিসাবে এরা ড্রেসিংরুমেও যথেষ্ট সাহসী। অধিনায়ককে বোঝাতে হয় যে, দলটা তার। শুভমান এই সিরিজ় থেকে অনেক কিছু শিখবে। অধিনায়কত্বও শিখতে হয়। অধিনায়ককে নিজের উপস্থিতি বোঝাতে হয় দলের মধ্যে। কেমন দল নিয়ে খেলতে চাইছে, সেটা পরিষ্কার করে বলতে হয়। নাহলে শক্তিশালী অধিনায়ক হওয়া যথেষ্ট কঠিন একটা বিষয়। শুভমান এখনও সেই পর্যায় পৌঁছোতে পারেনি।’’
এদিকে গাভাসকার আরও যোগ করেন, ‘‘আমাদের সময় কোচ থাকত না। প্রাক্তন ক্রিকেটাররাই ম্যানেজার বা সহকারী ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ন পালন করতেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলা অনেক সহজ ছিল। তাই বিরতিতে বা খেলার আগে-পরে পরামর্শ নেওয়া যেত। অর্থাৎ, কোচ-অধিনায়কের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত, এটা আমার পক্ষে বলা একটু কঠিন। আমি অধিনায়ক থাকার সময়, তেমন কোনও প্রাক্তন ক্রিকেটারকে দলের সঙ্গে পাইনি। উইং কমান্ডার দুরানি বা রাজ সিংহ দুঙ্গারপুর ছিলেন। একবার এরাপল্লি প্রসন্নকে পেয়েছিলাম। তিনি দারুণ সাহায্য করেছিলেন সেই সময়।’’
উল্লেখ্য, ভারতীয় দলের ড্রেসিংরুমের পরিবেশ নিয়ে জল্পনা চলছে সেই অস্ট্রেলিয়া সফর থেকেই। অধিনায়ক বদলের পরেও, ইংল্যান্ড সফরে আলোচনা উঠছে সেই একই বিষয় নিয়ে। তাহলে কি গম্ভীর নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছেন তাঁর দলকে? ফলে, অধিনায়ক নিজেও অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। তবে বারবার গম্ভীর জমানায় ভারতের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।