বুধবার ভোরে ইরাকের মার্কিন সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালায় ইরান। ১৫টি ক্ষেপণাস্ত্রে ৮০ জন মার্কিন সেনার মৃত্যুর দাবি করেছিল ইরান। কিন্তু তা উড়িয়ে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের বিবৃতিতে হামলার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে চরম ধন্দ তৈরি হয়েছে।
চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরান সরকার বুধবার দাবি করেছিল এদিন ভোরে পশ্চিম ইরাকের দুটি মার্কিন সেনা ঘাঁটিতে ইরানের ১৫টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে। কিন্তু, কয়েক ঘন্টা যেতে না যেতেই হোয়াইট হাউস থেকে ট্রাম্প দাবি করলেন, ইরান হামলা চালিয়েছে ঠিকই কিন্তু তাতে কোনও আমেরিকানের ক্ষতি হয়নি। কেউ নিহত তো দূরের কথা আহতও হয়নি।
এদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, 'আমাদের সমস্ত সেনারা নিরাপদ, আমাদের সামরিক ঘাঁটি দুটিতে শুধু সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে'। অথচ এর আগে ইরানের জাতীয় টেলিভিশনে বলা হয়েছিল ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ৮০ জন 'মার্কিন জঙ্গি'র মৃত্যু হয়েছে। মার্কিন সেনা ১৫টি ক্ষেপণাস্ত্রের একটিকেও আটকাতে পারেনি।
সেই দাবিকে নস্যাত করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, মার্কিন বাহিনী, যে কোনও রকম হামলার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকে। তবে আপাতত ইরান আর হমলার পথে পা বাড়াবে না বলেই মনে করেন তিনি। এটা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ এবং বিশ্বের জন্যও র জন্যই খুব ভালো বলে মন্তব্য করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এদিনও তিনি দাবি করেন, বেশ কয়েকদিন ধরেই মার্কিন হানায় নিহত ইরানের জেনারেল কাশেম সোলেমানি আমেরিকায় হামলার পরিকল্পনা করছিলেন। কিন্তু, মার্কিন সেনা তাঁর জারিজুরি শেষ করে দিয়েছে। তাই এখন সবকিছু শান্তই থাকবে বলে তাঁর বিশ্বাস।
তবে তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্রধর দেশ হয়ে ওঠার অনুমতি কখনও দেওয়া হবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন ট্রাম্প। সেই সঙ্গে এই বিষয়ে ইরানের সঙ্গে চুক্তি করার জন্য বাকি বিশ্বের দেশগুলিকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। এতে করে বিশ্বকে আরও নিরাপদ এবং আরও শান্তিপূর্ণ স্থান হিসাবে গড়ে তোলা যাবে।
বুধবার আমেরিকার পক্ষে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এসপার প্রথম ইরানের এই হামলার বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে কোনও মন্তব্য তিনি করেননি। গত শুক্রবার বাগদাদ বিমানবন্দরের মার্কিন বিমান হানায় জেনারেল সোলেমানির মৃত্যুর পর থেকেই ইরানের প্রত্যাঘাতের আশঙ্কা করছিল গোটা বিশ্ব। কাজেই ইরানের এই হামলার জন্য মার্কিন সেনা প্রস্তুত ছিল তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু, হামলার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে দুই দেশের দাবির এতটা তফাৎ হওয়ায় সকলের কাছেই বিষয়টি নিয়ে ধাঁধা তৈরি হয়েছে।