মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের প্রাণকেন্দ্র ম্য়ানহাটনেই রাষ্ট্রসঙ্ঘের সদর দপ্তর। আমেরিকা রাষ্ট্রসঙ্ঘের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহরও বটে। কিন্তু, খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্টই সাধারণ পরিষদের জলবায়ু সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন না, এমনটাই খবর ছিল। কিন্তু, আচমকাই চলে এলেন, বলা যেতে পারে বন্ধু নরেন্দ্র মোদীর টানে। মোদী জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ নিয়ে বললেন, আর মন দিয়ে শুনলেন ট্রাম্প। মোদী তুলে ধরলেন এর মোকাবিলায় ভারত সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা, দর্শকাসনে হাততালি দিলেন ট্রাম্প।
এদিনের প্রথম দিকের বক্তাদের মধ্যেই নাম ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রীর। তবে তাঁর আগেও কয়েকজন বলেছেন। ততক্ষণ কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেখা পাওয়া যায়নি। কেউ তাতে অবশ্য বিস্মিতও হননি। কারণ, প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসার আগে থেকেই জলবায়ু পরিবর্তনের তত্ত্বকে স্রেফ জালিয়াতি বলে উড়িয়ে দেন তিনি। এযাবতকালে জলবায়ু সম্মেলনে তাঁকে দেখাও যায়নি। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী বক্তৃতা শুরু করার পরই তাঁর আগমন ঘটল।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদে অবিশ্বাসী বন্ধুর সামনেই কিন্তু দৃঢ় কন্ঠে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বললেন, আলোচনা করার দিন শেষ, এবার বিশ্বের কাজ করার সময় এসেছে। জানালেন ভারত মনে করে এক টন প্রচারের থেকে এক আউন্স অনুশীলনও ভালো। সেই সঙ্গে বললেন, এর মোকাবিলায় ভারতের মন্ত্র 'প্রয়োজনে ব্যবহার করো লোভে নয়'।
তারপর তাঁর সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদের মোকাবিলায় কী কী কাজ করছে তার তালিকা তুলে ধরলেন। জানালেন ভারত সৌরশক্তির মতো পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে। ১৫ কোটি পরিবারকে রান্নার গ্যাস দেওয়া হয়েছে। জলসম্পদ উন্নয়ন, দল সংরক্ষণ ও বৃষ্টির জল ধরে রাখার উদ্দেশ্যে দল দীবন মিশন চালু করা হয়েছে। সামনেই ২ অক্টোবর থেকে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে যে গণ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে, তা জানাতেও ভোলননি।
নরেন্দ্র মোদীর পুরো বক্তৃতাই গভীর মনযোগ দিয়ে শুনেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বন্ধুর মুখে জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ শুনে শেষ পর্যন্ত তাঁর বিশ্বাস হয় কি না তা বলা মুশকিল। কারণ নরেন্দ্র মোদীর পর জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেল বক্তব্য রাখা শেষ করতেই যেমন আচমকা এসেছিলেন তেমন ভাবেই বেরিয়ে গেলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।