এইচ-১ বি'র পর এবার পড়ুয়াদের ভিসা বাতিলের পথে আমেরিকা, আশঙ্কার মেঘ ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে

  • সম্প্রতি এইচ-১ বি ভিসা বন্ধ করেছে আমেরিকা
  • এবার বিদেশি পড়ুয়াদের ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত
  • যারা অনলাইনে ক্লাস করছেন তাঁদের ওপর প্রযোজ্য
  •  বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের আমেরিকা থেকে বার করে দেওয়া হবে

Asianet News Bangla | Published : Jul 7, 2020 8:02 AM IST / Updated: Jul 07 2020, 05:08 PM IST


চলতি বছর আর এয়ই-১ বি ভিসা দেবে না আমেরিকা। আগেই সেই কথা জানিয়ে দিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের ফলে সবচেয়ে সমস্যায় পড়েন ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর। এবার আশঙ্কার মেঘ ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের সামনে। কারণ মার্কিন সরকার জানিয়ে দিয়েছে, যে সব বিদেশি ছাত্রছাত্রীরা অনলাইনে ক্লাস করছেন, তাঁদের আমেরিকার ভিসা প্রত্যাহার করা হবে। 

করোনা সংক্রমণের ভয়ে বিশ্ব জুড়েই বন্ধ রয়েছে স্কুল-কলেজ। ফলে পড়াশোনার জন্য মার্কিন মুলুকেও ভরসা সেই অনলাইন ক্লাস। এর মধ্যে মার্কিন ইমিগ্রেশন দফতর জানিয়েছে, যদি কোনও কলেজ পুরোপুরি অনলাইন শিক্ষা দেয়, তবে সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিদেশি পড়ুয়াদের ভিসা প্রত্যাহার করা হবে। হয় তাঁরা অন্য কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন অথবা দেশ ছাড়বেন। তা না হলে তাঁদের বাধ্য হয়ে প্রত্যর্পণ করতে হবে।

আরও পড়ুন: চিনের আস্কারাতেই ভারতের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছিল ভুটান, বাধা পরছে নাগপাশে এবার বুঝেছে থিম্পুও

এখনও পর্যন্ত গোটা বিশ্বের মধ্যে আমেরিকাতেই করোনা সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। এই অতিমারীর মধ্যেই ২০২০-র পরবর্তী সেমিস্টারের জন্য মার্কিন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আবেদনপত্র নেওয়া শুরু করেছে। হাভার্ডের মত বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের জন্য তারা অনলাইনে কোর্সে ইনস্ট্রাকশন দেবে। মার্কিন ইমিগ্রেশন দফতরের  এই সিদ্ধান্তে কতজন বিদেশি পড়ুয়া সঙ্কটে পড়তে চলেছেন  তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে বিদেশি ছাত্রছাত্রীরাই  বহু মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজস্বের প্রধান উৎস, বেশিরভাগ সময় পুরো টিউশন ফি দিয়েই পড়েন তাঁরা। এই অবস্থায় ভারতীয় ছাত্রছাত্রীরাই সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশনের তরফে জানানো হয়েছে, ২০১৮-১৯ এর শিক্ষাবর্ষে আমেরিকায় ১০ লক্ষ বিদেশি পড়ুয়ারা এসেছিলেন। আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার জন্য এপর্যন্ত যত পড়ুয়ারা ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৫.৫ শতাংশই বাইরে থেকে এসেছেন। এর ফলে ২০১৮ সালে বিদেশি ছাত্রদের থেকে আমেরিকার আয় হয়েছিল ৪৪৭০ কোটি ডলার। 

আরও পড়ুন: চিনে মহামারির আতঙ্ক তৈরি করা বিউবনিক প্লেগ কতটা মারাত্মক হতে পারে, জানুন এর উৎস ও উপসর্গ

সোমবার আমেরিকার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট বিভাগের তরফে বলা হয়েছে, যে পড়ুয়ারা অনলাইনে ক্লাস করছেন, তাঁদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। নয়তো এমন কোনও কোর্সে ভর্তি হতে হবে যেখানে ব্যক্তিগতভাবে ক্লাসে হাজির হওয়া জরুরি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশ মন্ত্রক স্থির করেছে, অনলাইনে ক্লাস করা যায় এমন কোর্সের জন্য যারা আবেদন করেছেন, তাঁদের ভিসাই প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। আগামী দিনে ওই ধরনের ছাত্রদের আর ভিসা দেওয়া হবে না।

যা বোঝা যাচ্ছে তাতে এফ-১ ও এম-১ ভিসা হোল্ডারদের ওপর প্রযোজ্য হবে এই ইমিগ্রেশন গাইডলাইন। এই ভিসা মূলত পান তাঁরা, যাঁরা শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক কোর্সের জন্য আমেরিকায় আসেন। ২০১৯-এ মার্কিন বিদেশ দফতর ৩৮৮,৮৩৯টি এফ ভিসা ও ৯,৫১৮ টি এম ভিসা দিয়েছে। তবে যে পড়ুয়ারা কলেজে গিয়ে ক্লাস করেন, তাঁদের ওপর এই নির্দেশের কোনও প্রভাব পড়বে না। যে এফ-১ পড়ুয়ারা আংশিক অনলাইন ক্লাস করেন, তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় যদি জানিয়ে দেয়, তাঁদের কোর্স সম্পূর্ণ ডিজিটাল নয়, তবে তাঁরাও প্রভাবিত হবেন না এতে। কিন্তু এম-১ বৃত্তিমূলক বিষয় পড়ুয়া এবং এফ-১ ইংরেজি ভাষার প্রশিক্ষণ নেওয়া পড়ুয়াদের আর অনলাইনে ক্লাস করতে দেওয়া হবে না।

বেশ কয়েকদিন থেকেই বিদেশি কর্মীদের ভিসা দেওয়ার ব্যাপারে কড়াকড়ি শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। চলতি বছরে ইতিমধ্যেই এইচ-১ বি  ভিসা দেওয়া বন্ধ হয়েছে। আগামী দিনে শুধুমাত্র অতি দক্ষ এবং খুব বেশি বেতনের কর্মীদেরই আমেরিকায় ওয়ার্ক ভিসা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
 

Share this article
click me!