ভাটপাড়া উপনির্বাচনের পরে দু' দিন কাটতে চলল। কিন্তু শান্তি ফেরার কোনও লক্ষ্যণই যেন নেই এলাকায়। এ দিন সকালে ফের একদফা উত্তেজনায় পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে যাত্রীভর্তি ট্রেন লক্ষ্য করে বোমা মারা, ইটবৃষ্টি শুরু হয় বলে অভিযোগ। যার জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন রেলযাত্রীরা। দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকে ট্রেন চলাচল। এলাকায় সন্ত্রাসের অভিযোগে বাসিন্দাদের একাংশ রেল অবরোধও করেন। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ দিন সকালে কাঁকিনা়ড়া এবং জগদ্দল রেল স্টেশনের মাঝে ২৯ নম্বর রেল গেটে এলাকায় সন্ত্রাসের প্রতিবাদে রেল অবরোধ শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। যার ফলে শিয়ালদহ-কৃষ্ণনগর শাখার নৈহাটি এবং ব্যারাকপুর স্টেশনের মধ্যে রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অবরোধে আটকে থাকা ট্রেন লক্ষ্য করে অবরোধকারীরা ইট ছোড়ে বলে অভিযোগ। এমন কী, ট্রেন লক্ষ্য করে বোমা মারারও অভিযোগ ওঠে। পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী না থাকায় প্রথমে পরিস্থিতি পুলিশের হাতের বাইরে চলে যায়। ভয় পেয়ে অনেক রেলযাত্রীই ট্রেন থেকে নেমে কাঁকিনাড়া স্টেশনের দিকে ছুটতে থাকেন। পরে বিশাল পুলিশবাহীনী, আরপিএফ এবং কমব্যাট ফোর্স গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার জেরে চার ঘণ্টা বন্ধ থাকে ট্রেন চলাচল। চোদ্দটি লোকাল ট্রেন বাতিল করতে হয়।
গোটা জগদ্দল থানা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা থাকলেও এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ পুলিশ। গোটা ঘটনায় তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর অব্যাহত রয়েছে।
তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, অর্জুন সিংহের নেতৃত্বেই তাঁর অনুগামীরা এই তাণ্ডব চালাচ্ছে। অর্জুনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে এ দিন বারাসতে জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করতে যান জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক, মদন মিত্রের মতো তৃণমূল নেতারা। আজ সন্ধের মধ্য়ে ভাটপাড়া শান্ত না হলে তৃণমূল ভাটপাড়া অভিযানের ডাক দেবে বলে পাল্টা জেলাশাসককে জানিয়ে এসেছে তৃণমূল।
অন্যদিকে অর্জুন সিংহের পাল্টা অভিযোগ, বহিরাগতদের নিয়ে এসে এলাকায় অশান্তি ছড়িয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী মদন মিত্র। তাঁর নতুন দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট প্রচারে ওই এলাকায় গিয়ে বদলা নেওয়ার কথা বলে গণ্ডগোলে উস্কানি দিয়েছেন। পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেও পাল্টা দাবি করেছেন অর্জুন।
বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুর লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গে ভাটপাড়া উপনির্বাচনের ফলও ঘোষিত হবে। সেদিন এলাকার পরিস্থিতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে, তা ভেবে এখন থেকেই পুলিশ প্রশাসনের কর্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।