কর্ণাটকের ইয়াদগিরি জেলার গুরমাতকালের এক অভিনব পূজো। গুরমাতকালের কান্দাকুর কোন্দামাই হিল-এর বিছে পূজো। ফি বছর নাগ পঞ্চমীতে এই পার্বত্য এলাকায় এই পুজো হয়। কর্ণাটক ছাড়াও অন্ধ্রপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র থেকে মানুষ আসে এখানে। পাহাড়ের উপরে মন্দিরে হয় বিছে পূজো, শতাব্দী প্রাচীন এই পূজো
চারিদিকে গিজ গিজ করে বিছে, মন্দিরে আসা মানুষের শরীরে উঠে যায়। মানুষও এই দিন এখানে বিছেকে শরীরে নিতে পারলে পূণ্য বলে মনে করে। মানুষের হাতের তালুতে খেলা করে যায় বিছেরা, এমন দৃশ্য ফি বছরই দেখা যায়। কোনও বিছে কাউকে এখানে কামড়েছে এমন কথা শোনাও যায় না। আট থেকে আশি সকলেই এই দিন মন্দিরে এলে বিছেকে হাতে তুলে নেয়।
কোন্ডমাই মন্দিরটি কান্দাকুরের কোন্ডমাই পাহাড়ে অবস্থিত এবং কথিত আছে যে, এই মন্দিরটি ব্রিটিশ আমল থেকেই পাহাড়ের ওপরে বিদ্যমান ছিল। কোন্ডমাই মানে বিছের দেবী। জুলাই-আগস্ট মাসে নগরপঞ্চমীতে পুরো পাহাড় ভরে যাবে লাল বিছেতে। শিশু, মহিলা, যুবক ও বৃদ্ধরা পাথরের নিচ থেকে এই বিছেগুলি বের করে এবং সারা শরীর বেয়ে এদের উঠতে দেয় এবং শরীরে বিছে বেয়ে চলার রোমাঞ্চকর মুহূর্তগুলি উপভোগ করে। কর্ণাটক এবং সমগ্র মহারাষ্ট্রে নাগ পঞ্চমীর শুভ দিনে ভক্তরা কেউটে সাপকে বিশেষ পুজো দিয়ে থাকেন। কিন্তু, কোন্ডমাই পাহাড়ে এক অনন্য উপায়ে পুজো করা হয় শুধুমাত্র বিছেদের। প্রতিবেশী অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা এবং মহারাষ্ট্র সহ দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে হাজার হাজার ভক্ত ইয়াদগিরি জেলার গুরমাটকাল তালুকের কান্দাকুর কোন্ডমাই পাহাড়ে অনুষ্ঠিত বিছে মেলার সাক্ষী হয়ে থাকলেন। ভক্তরা এই দিনে এই বিছেদের নিজেদের শরীরের ওপর ঘোরাফেরা করতে দেন। কিন্তু, অবিশ্বাস করলেও একথা একদম সত্যি যে, এখানকার বেশিরভাগ বিছেই কাউকে কামড়ায় না। নিজেদের শরীরের ওপর বাওয়া শেষ হলে মানুষ আবার তাদেরকে মাটিতে নামিয়ে দেন। কিছু ভক্ত বিশ্বাস করেন যে, তাঁরা যদি সেখানে 'আধার' অর্থাৎ পবিত্র ছাই প্রয়োগ করেন, তাহলে বিষ অদৃশ্য হয়ে যাবে এবং কোনও ব্যথা হবে না। যাঁরা এর আগে বিছের কামড় খেয়েছেন, তাঁরা নিজে এই পরীক্ষাটি করে সুফল পেয়েছেন। যে ভক্তরা নাগ পঞ্চমীর দিনে এই বিশেষ পবিত্র স্থানে যান তাঁরা তাঁদের শরীরের ওপর বিছের আনাগোনা উপভোগ করেন।