তাপস দাস, প্রতিনিধি: গত বেশ কয়েকবছর ধরে শিক্ষা বা সংস্কৃতি ছাড়া অন্যান্য বিভিন্ন কারণে সংবাদ শিরোনামে উঠে আসছে বোলপুরের কথা। তার কেন্দ্রে থাকছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্থাপিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। এবারের নির্বাচনেও বিশ্বভারতী প্রসঙ্গ উঠছে। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে উপাচার্যের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের নিন্দা করা হচ্ছে, পৌষমেলার মত কর্মসূচি বন্ধ করা, বা অমর্ত্য সেনের জমি নিয়ে ঝামেলা করার জন্য। মনোনয়ন পত্র দাখিলের দিনও এই প্রসঙ্গ তুলেছেন তৃণমূল প্রার্থী তথা রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ।
আরও পড়ুন: নজরবন্দিকে গুরুত্ব দিতে চান না অনুব্রত মণ্ডল, চান ভোটে দলের হয়ে কাজ করতে
বোলপুর বিধানসভা আসনটি বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। সিপিএম থেকে বিতাড়িত, লোকসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন বোলপুরের সাংসদ। তবে বোলপুর বিধানসভা আসনের লড়াইয়ে বামফ্রন্টের প্রতিনিধিত্ব করেছে আরএসপি-ই। এই কেন্দ্র থেকে পরপর চারবার বিধায়ক হয়েছেন আরএসপি-র তপন হোড়।
২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তপন হোড় হেরে যান তৃণমূল কংগ্রেসের চন্দ্রনাথ সিংহের কাছে। চন্দ্রনাথ সিংহ পেয়েছিলেন ৮৯ হাজার ৩৯৪ ভোট। তপন হোড় পেয়েছিলেন ৭২ হাজার ৭৬৭ ভোট।
আরও পড়ুন: নানুরে কি এবারও অঘটন, লাভ ক্ষতির অঙ্ক কষছে তৃণমূল-বিজেপি
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ফের চন্দ্রনাথ জেতেন ও তপন হোড় হারেন। এবার জয়ের ব্যবধান অনেকটাই বেশি ছিল তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর। তিনি পেয়েছিলেন ১ লক্ষ ১৩ হাজারের বেশি ভোট। আরএসপি প্রার্থী পান ৬৩ হাজার ভোট।
২০১১ সালের ভোটে জেতার পর চন্দ্রনাথ সিংহ মন্ত্রী হয়েছিলেন। তাঁকে দেওয়া হয়েছিল পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের দায়িত্ব। ওই বছরের ডিসেম্বর মাসেই তাঁর দফতর বদল হয়। দেওয়া হয় পরিসংখ্যান বিভাগের দায়িত্ব। ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে ফের দফতর বদল হয় চন্দ্রকান্তর। এবার তাঁকে দেওয়া হয় মৎস্য দফতর। সেই থেকে এ যাবৎ ওই দফতরেরই দায়িত্বে ছিলেন বোলপুরের বাসিন্দা এই তৃণমূল কংগ্রেস নেতা।
২০১১ সালে বোলপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন যিনি, তাঁর নাম দিলীপ ঘোষ, তবে তিনি বর্তমান বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ নন। পেশায় ব্যবসায়ী এই দিলীপ সেবার ৬৩৮১ ভোট পান। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও পদ্ম শিবিরের হয়ে তিনিই প্রার্থী হয়েছিলেন বোলপুরে। পেয়েছিলেন ১৯ হাজার ৫৫৩ ভোট।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কিন্তু বিজেপি অনেকটাই ভাল ফল করে এই বিধানসভা কেন্দ্রে। বোলপুর বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের অসিত মাল ১৬ হাজার ভোটে এগিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী রামপ্রসাদ দাসের চেয়ে। অসিত মাল পেয়েছিলেন ১ লক্ষ ৬ হাজার ১৭২ টি ভোট। রামপ্রসাদ পেয়েছিলেন ৯০ হাজার ৫৬০ ভোট। এই নির্বাচনে বোলপুর কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী রামচন্দ্র ডোম মাত্র ১৪ হাজার ভোট পেয়েছিলেন।
এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী চন্দ্রনাথ সিং, বিজেপির প্রার্থী অনির্বাণ গাঙ্গুলি ও সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী প্রাক্তন বিধায়ক তপন হোড়। বোলপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ অষ্টম তথা শেষ দফায়, ২৯ এপ্রিল।