মমতার ক্যারিশমা অটুট, তবু কেন বাংলার ভোটে পাল্লা ভারি বিজেপি-র দিকে

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যারিশমা এখনও অটুট

কিন্তু রাজনীতির চোরাবালিতে ডুবে যাচ্ছে তাঁর দল

প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে তিন-চার মেয়াদে গদি ধরে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রীরা

কেন বাংলায় ভোটের পাল্লা ভারি বিজেপি-র দিকে

 

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুইলচেয়ার এগিয়ে চলেছে। কিন্তু রাজনীতির চোরাবালিতে ডুবে যাচ্ছে তৃণমূল। দিদিকে মাথায় তুলে রাখা তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন দলে দলে। প্রতিবেশী বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার বা ওড়িশার নবীন পট্টনায়ক যেখানে তিন-চার বারেও গদি ধরে রেখেছে, সেখানে ‘মা-মাটি-মানুষে’র নেত্রী মমতার এত তাড়াতাড়ি আসন টলমল হল কেন?

রাজনীতির কারবারিদের মতে, বাংলা ছেড়ে মমতার কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হওয়ার পুরনো উচ্চাকাঙ্খায় লুকিয়ে রয়েছে সমস্যার বীজ। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী বাংলায় ভোট ক্যাম্পেনে এসে ‘রাষ্ট্রপতি ভবনে দাদা (প্রণব মুখোপাধ্যায়) পশ্চিমবঙ্গে দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) আর দিল্লিতে ভাই'য়ের (নিজে) শাসন-সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। মমতা তাতে সাড়া দেননি। কেন্দ্রে জোটের সরকার নিয়ন্ত্রণ করার উচ্চাশা পেয়ে বসেছিল তাঁকে। ঘনিষ্ঠ বৃত্তে থাকা কিছু স্তাবকের বুদ্ধিতে মমতা বিজেপিকে তার প্রধান প্রতিপক্ষ করলেন ২০১৪-র ভোটে।

Latest Videos

আর এভাবেই বিজেপি ঢুকে পড়ল পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য রাজনীতিতে। ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে যেখানে মাত্র ৬ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বিজেপি, ২০১৪ সালে সেটা বেড়ে দাঁড়াল প্রায় ১৭ শতাংশে। ততদিনে নরেন্দ্র মোদী আর অমিত শাহ বুঝে গিয়েছেন, মমতাকে দলে টানা কার্যত অসম্ভব। তাই মমতার ডান হাত মুকুল রায়কে কাছে টেনে প্রথম খাঁড়ার ঘা-টা মারল বিজেপি। মমতার হয়ে তৃণমূলের সাংগঠনিক দেখভালের কাজটা এতদিন মুকুলই করতেন। সেই ফাঁকা জায়গায় কাছের যে মানুষটিকে বসানোর চেষ্টা করলেন মমতা, তাকে ভাল চোখে দেখল না দলের অন্য নেতারা।

পারিবারিক পক্ষপাতের কারণে মমতার সঙ্গে দলের একাংশর দূরত্ব যখন বাড়ছে, শেষ পেরেকটা ঠুকলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। মমতা চিরকাল তাঁর দলের নেতাদের নিজ এলাকায় ইচ্ছেখুশি দাদাগিরি করতে দিয়েছেন। আচমকা প্রশান্তের লোকেদের ‘নাক গলানো’ বিরক্তির মাত্রা ছাড়াল। শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো প্রথম সারির তৃণমূল নেতারা সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে একে-একে যোগ দিলেন বিজেপিতে।
মমতা বলছেন, ‘বদরক্ত’ বেরিয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু আপামর বাঙালি সেই নিয়ে ভাবিত নয়। ক্ষমতার বেড়িতে কে বা ভাল? বরং বাড়ির কাছে একটা কল-কারখানা হলে কিছু কর্মসংস্থান হয়। গত দশ বছরে শিল্পায়ণ স্তব্ধ বাংলায়। নতুন কল-কারখানা হয়নি। সরকারি চাকরিতে নিয়োগ বন্ধ প্রায়। কাজের খোঁজে ভিটেমাটি ছেড়ে ভিন্‌ রাজ্যে পাড়ি দিতে হচ্ছে ছেলেমেয়েদের। লোকজন মনে করছে, কেন্দ্রে আর বাংলায় যদি একই দলের সরকার হয়, তাহলে হয়তো উন্নয়নের পালে হাওয়া লাগবে। নতুন কল-কারখানা তৈরি হবে। বাড়ির ছেলে বাড়িতে ফিরতে পারবে। শিল্প-সংস্কৃতিতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে সোনার বাংলা।
আপাতত এই স্বপ্নই বিজেপি-র ভোটে তুরুপের তাস।
 

Share this article
click me!

Latest Videos

Narendra Modi Live: আদিবাসী গর্ব দিবস পালনে মোদী, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
'কলকাতার ম্যাডাম আমাকে হারাতে সংখ্যালঘুদের ভুল বুঝিয়েছে' নাম না করে মমতাকে তোপ শুভেন্দুর
Suvendu Adhikari Live: পূর্ব মেদিনীপুরের বাজকুলে জনসভা শুভেন্দুর, দেখুন সরাসরি
‘এবার সনাতনীদের এক হতে হবে’ হিন্দুদের উদ্দেশ্যে যা বললেন শুভেন্দু অধিকারী | Suvendu Adhikari
‘জনগণের কষ্টের টাকায় মুখ্যমন্ত্রী উৎসব করবেন!’ মমতাকে ধুয়ে দিলেন সুকান্ত, দেখুন কী বললেন | Sukanta M