জাতীয় সড়ক দখল করেছে দাঙ্গাবাজরা, অবিলম্বে সেনা নামান, রাজ্যপালকে চিঠি শুভেন্দু অধিকারির

Published : Jun 11, 2022, 09:48 AM ISTUpdated : Jun 11, 2022, 09:57 AM IST
জাতীয় সড়ক দখল করেছে দাঙ্গাবাজরা, অবিলম্বে সেনা নামান, রাজ্যপালকে চিঠি শুভেন্দু অধিকারির

সংক্ষিপ্ত

মহম্মদকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বৃহস্পতিবার থেকেই দফায় দফায় বিক্ষোভ এবং দাঙ্গায় অবরুদ্ধ হচ্ছে কলকাতা সংযোগকারী জাতীয় সড়ক। এমনকী উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগকারী জাতীয় সড়কেও একই ছবি দেখতে পাওয়া গিয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় শেষমেশ রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ দাবি করলেন শুভেন্দু অধিকারী।   

জাতীয় সড়ক জুড়ে দখলদারি চালাচ্ছে দাঙ্গাবাজরা। যার জেরে হাওড়া জেলার একটা বিশাল অংশে হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে। জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের সম্পত্তি। সাধারণ জনজীবন ত্রস্ত্র-বিধ্বস্ত। হাওড়া থেকে কলকাতা সংযোগকারী জাতীয় সড়ক এবং কলকাতার বেশকিছু শহরতলির রাস্তায় এই ঘটনা ঘটে চলেছে বৃহস্পতিবার থেকে। এই মর্মে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে আধা সেনা নামানোর লিখিত আর্জি রাখলেন শুভেন্দু অধিকারি। 

রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁর চিঠিতে আরও উল্লেখ করেছেন যে, হাওড়া, উলুবেড়িয়া এবং কলকাতা সংলগ্ন এলাকার দখল নিয়েছে দাঙ্গাবাজরা। এর জেরে অন্তত হাজার দশেক গাড়ি জাতীয় সড়কের উপর আটকে পড়েছে। আটকে রয়েছেন অন্তত এক লক্ষ মানুষ। এই দাঙ্গাবাজরা ভেঙে গুড়িয়ে দিচ্ছে সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি, দোকানপাট, অগ্নিসংযোগ করছে গাড়িতে, মোটরবাইকে। এমনকি আগুন দেওয়া হয়েছে দোকান ও বাড়িঘরেও।  

রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে পাঠানো এই চিঠিতে শুভেন্দু আরও লিখেছেন যে উলুবেড়িয়ায় বিজেপি-র জেলা দলীয় দফতর এবং রঘুদেবপুরে বিজেপি-র দলীয় কার্যালয়েও ভাঙচুর চালিয়ে তা গুড়িয়ে দিয়েছে দাঙ্গাবাজরা। এমনকি শুভেন্দু অধিকারির মতে, পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। রাজ্য সরকার এবং রাজ্য পুলিশ প্রশাসন শুধুমাত্র নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। যার জেরে হিংসার উন্মত্তা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। আর এর জেরে দাঙ্গাবাজরা ভাঙচুর থেকে শুরু করে অগ্নিসংযোগ এবং হিংসাকে অনিয়ন্ত্রিত করার ছাড় পেয়ে গিয়েছে। শুভেন্দু আরও লিখছেন, পরিস্থিতি পুরোপুরি রাজ্য সরকারের হাতের বাইরে। পশ্চিমবঙ্গের এই অঞ্চলের মানুষ অহেতুক এই হিংসার কবলে পড়ছেন এবং অনিচ্ছার সত্ত্বেও এই অনিয়ন্ত্রিত হিংসাকে ভোগ করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাই পরিস্থিতি বিবেচনা করে উপদ্রুত এলাকায় যাতে আধা সেনা নামিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায় তার আর্জি রাখা হচ্ছে। চিঠির অন্তিম অংশে এমন ভাবেই আর্জি রেখেছেন শুভেন্দু অধিকারী। 

বৃহস্পতিবার মুখ্যয়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় সাংবাদিক সম্মেলন করে দাঙ্গাবাজদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন এই হিংসা এবং অবরোধ না থামালে পুলিশ অভিযান হবে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দেখা যায়নি। কোথাও কোনও বিশাল আকারের ধরপাকড় এবং পুলিশি প্রতিরোধ হয়েছে এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও খবর নেই। তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তেমনভাবে দেখা যাচ্ছে না পুলিশকে। আর এরই ফায়দা তুলছে হিংসা করা বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষজন। 
 

বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও একাধিক ভিডিও তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে আপলোড করেছেন। সেই ভিডিও -তে দেখা গিয়েছে হিংসা বিধ্বস্ত হাওড়ার সলপ, ধূলাগড়, বাকড়া, উলুবেড়িয়া অঞ্চলের ছবিটা। চারিদিকে আগুন জ্বলছে। ত্রস্ত-বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে দোকানপাট। পড়ে রয়েছে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া মোটরবাইকের অংশবিশেষ। রাস্তাঘাটে বাসের দেখা নেই। কোনওমতে ছোটা হাতি জাতীয় ট্রাকে করে ঘরের পথ ধরেছেন মানুষ। 

 

এমনকী, শুভেন্দু অধিকারীর পোস্ট করা একটি ভিডিও-তে দেখা গিয়েছে কীভাবে এক মহিলা তাঁর শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে না পেরে রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করছেন। কিন্তু, তাঁকে সাহায্য করার মতো কাউকেই পাওয়া যায়নি। উল্টে এক সিভিক ভলিন্টিয়ার মহিলাকে শান্ত হতে এবং জল খেতে অনুরোধ করছেন। আর ওই ভিডিও-তে দেখা গিয়েছে কীভাবে হিংসায় অংশ নেওয়া মানুষরা রাস্তার উপরে প্রতিবাদের নামে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।  

 

 

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

Samik Bhattacharya: ‘SIR বন্ধ করে দিন তবুও ২০২৬-এ তৃণমূল হারবে!’ চ্যালেঞ্জ শমীকের
এই বাংলাতেই কেন বাবরি মসজিদ? তৃণমূলের গভীর 'গেম প্ল্যান'? কী বললেন শুভেন্দু, অধীর, সুজন, শুভঙ্কর?