শনিবার হেস্টিংসে বিজেপি পার্টি অফিসের সামনে থেকে ৫১টি তাজা বোমা পাওয়ার ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য্য। রবিবার সংবাদমাধ্যমে সামনে এই বিষয়ে সরব হন তিনি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন ৫১টি বোমা পাওয়ার ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত। বিজেপির ওপর হামলা চালাতেই এই বোমাগুলি পার্টি অফিসের সামনে রাখা হয়েছে। রাজ্যে সন্ত্রাস করে বেড়াচ্ছে তৃণমূল, আর বিজেপির নেতাকর্মীদের মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হচ্ছে।
শমীক ভট্টাচার্য বলেন এই ধরণের ঘটনা এখন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কোথাও অপরাধ হলেই তা বিজেপির ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে। এত পুলিশি পাহারা সত্ত্বেও কীভাবে ওখানে এত পরিমানে বোমা উদ্ধার হল, সেটা প্রসাসনই বলতে পারবে। কারণ এর সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক রয়েছে। ওখানে বোমা রাখার পিছনে বিজেপির কোনও হাত নেই।
এদিকে, পয়লা জুন কাঁথি থানায় বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ও সৌমেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। সে প্রসঙ্গে শমীক ভট্টাচার্য বলেন তৃণমূলে থাকলে দেবতা আর তৃণমূল ছাড়লেই দানব, এই তত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে তৃণমূল। এই ঘটনাতেও সেই তত্বই উঠে আসছে।
শমীক ভট্টাচার্য বলেন, শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ রাখাল বেরা গ্রেফতার হওয়া রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। তিনি বলেন রাখাল বেরা একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষ। আর শুভেন্দু কবে শেষ তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী ছিলেন, সেটা মানুষ ভুলতে বসেছে। এতদিন পরে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে কেন ও এই ঘটনার মধ্যে রহস্য কি, সময় আসলেই সেটা মানুষ বুঝতে পারবে।
এদিকে, শনিবার রাতে কলকাতার হেস্টিংস-এ বিজেপির কার্যালয়ের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় অন্তত ৫১টি অপরিশোধিত বোমা। একটি ফলের ঝুড়ির মধ্যে বোমাগুলির রাখা ছিল বলে জানা গিয়েছে। বম্ব ডিসপোসাাল স্কোয়াডের বিশাল দল এসে ওই বোমাগুলি উদ্ধার করে। উপস্থিত ছিল পুলিশ-ও। কে বা কারা এই বোমাগুলি বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয় এবং হেস্টিংস থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরে ওই বোমাগুলি রেখে গেল, তা এখনও জানা যায়নি। তবে শনিবার রাতে এই বোমা উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়।
ফল নিয়ে যাওয়ার জন্য যে খড়ের গাদা ব্যবহার করা হয়, একটি ঝুড়ির মধ্যে তার মধ্যেই লুকোনো ছিল বোমাগুলি। ১ টি-২টি নয়, একেবারে ৫১টি। জানা গিয়েছে গোপন সূত্রে খবর পেয়েছিল লালবাজারের বম্ব স্কোয়াড। তারাই হেস্টিংস থানার সহযোগিতায় বোমাগুলি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। প্রথমে হেস্টিংস থানার পক্ষ থেকে বোমা উদ্ধারের ঘটনা স্বীকার না করা হলেও, পরে তা মেনে নেন পুলিশ আধিকারিকরা।
স্বাভাবিকভাবেই সপ্তাহান্তে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় ওই এলাকায়। প্রশ্ন উঠছে এক পিছনে কি কোনও গভীর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে? বিজেপি কার্যালয়ে কি কেউ বা কারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল? তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, এই বোমা উদ্ধারের ঘটনা থেকে কার্যক্ষেত্রে রাজনৈতিক সুবিধা পাবে বিজেপিই। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার অবনতি নিয়ে প্রশ্নটা জোরালো করা যাবে।
এই ঘটনা নিয়ে রাত পর্যন্ত কোনও বিজেপি নেতা কোনও মন্তব্য করেননি। মন্তব্য আসেনি শাসকদলের পক্ষ থেকেও। পরে রবিবার সকালে সাংবাদিকদের সামনে মুখ খোলেন শমীক ভট্টাচার্য।