বিজেপির 'শুভেন্দু ক্ষেপণাস্ত্র' সামলাতে আসরে কল্যাণ, অমিত শাহের দাবি ওড়ালেন তৃণমূল সাংসদ

  • মেদিনীপুরে বিজেপিতে যোগ দিলেন শুভেন্দু অধিকারী
  • অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগদান শুভেন্দুর
  • মুখ্যমন্ত্রীকে একযোগে আক্রমণ শানালেন শুভেন্দু ও অমিত শাহ
  • পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন কল্যাণ বন্দ্য়োপাধ্যায়
     

Sudip Paul | Published : Dec 19, 2020 3:38 PM IST / Updated: Dec 19 2020, 09:09 PM IST

মেদিনীপুরের সভা থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী সহ ১০ জন বিধায়ক, এক জন সাংসদ সহ একঝাঁক শাসক দলের নেতা-কর্মী। তারপরই সভামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চাচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী ও অমিত শাহ। একইসঙ্গে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপি সরকার আসতে চলেছে বলে জানিয়েছেন অমিত শাহ ও শুভেন্দু অধিকারী। মেদিনীপুরের সভা শেষে পাল্টা জবাব দিতে আসরে নামে তৃণমূল কংগ্রেস। সাংবাদিক বৈঠক থেকে শুভেন্দুকে সরাসরি 'আদর্শহীন, বিশ্বাসঘাতক' বলে তোপ দেগেছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের কেউ মুখ্যমন্ত্রী হতে চান না বলেও, অমিত শাহকে দবাব দিয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে ২১ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে শনিবার মেদিনীপুর কলেজ মাঠ থেকে নিজের রাজনৈতিক কেরিয়ারের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। সাংবাদিক বৈঠক থেকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অধিকারীর পরিবার তন্ত্রের বিশ্বাস যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন শুভেন্দু। ২০১৪ সালে লোকসভায় জিতে আবার ২০১৬-তে ফিরে আসেন শুধু মন্ত্রী হওয়ার জন্য। শুধু আপনার জন্য একটা উপনির্বাচন করতে হয়েছিল। কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছিল তাতে। শুভেন্দু বলছেন, দলটা একেবারে পচে গিয়েছে। তাহলে এতদিন আপনি ছিলেন কেন? এক, আপনার ব্রেনের থিঙ্কিং প্রসেসটা অত্যন্ত স্লো যে আপনার বুঝতে বুঝতেই ১০ বছর সময় লেগে গেল। নইলে বুঝতে হবে যে নিজের ডিফেন্সের জন্য পর পর মিথ্যে কথা বলে গেলেন'। শুভেন্দুর অমিত শাহকে প্রণাম করা নিয়েও এদিন কটাক্ষ করেছেন কল্যাণ। মন্ত্রীত্ব, জেলা পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব, একাধিক পজ সব কিছু নিয়েই তৃণমূলের পক্ষ থেকে শুভেন্দু একহাত নেন কল্যাণ। এদিন কল্যাণ দাবি করেন, ‘নন্দীগ্রাম আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নামেই লাখে লাখে মানুষ সেখানে ছুটে গিয়েছেন। উনি যদি অত বড় নেতাই হবেন, তাহলে ১৯৯৬ সালে ভোটে হারলেন কেন? ২০০১ সালে হারলেন কেন? ২০০৪ সালে হারলেন কেন’? একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, যেই যেই জেলার দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু, সেখানেই সেখানেই ভোট বেড়েছে বিজেপির। এর থেকেই বোঝা যায় কত বড় চক্রান্ত করেছেন। সঙ্গে ২০২১-এর নির্বাচনের জন্যও শুভেন্দুকে চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন কল্যাণ। তিনি বলেন, ‘২০২১ এর নির্বাচনে নন্দীগ্রাম থেকেই নির্বাচনে লড়ুন। আসন বদলাবেন না। দেখাবো লড়াই কাকে বলে’। কল্যাণ বলেন, নন্দীগ্রামে ৪০ শতাংশ মুসলিম ভোট। জিতবে কী করে? ফলে শুভেন্দু ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে গিয়ে শাসক দল আগামি দিনেও যে আক্রমণাত্বক রাস্তা নেবেন, তা এদিনের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য থেকে পরিস্কার।

শুধু শুভেন্দু অধিকারী নয়, অমিত শাহের আক্রমণের জবাব দিতে গিয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের কেউ মুখ্যমন্ত্রী হতে আগ্রহী নন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী বানিয়েছে বাংলার মানুষ। তাঁর দীর্ঘ আন্দোলনের জন্য এই পদ পেয়েছেন তিনি।’ একইসঙ্গে পরিবারতন্ত্র ইস্যুতে বিজেপিকে আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, ‘কার নির্দেশে আপনি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর আপনার ছেলেকে বিসিসিআই-এর সেক্রেটারি করতে হলো?’একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে শাহের দল ভাঙানোর অভিযোগ খারিজ করে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক ইতিহাস জানেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কংগ্রেস থেকে বহিষ্কারের পর তিনি নতুন দল গঠন করেছিলেন। তিনি কোনও দলে যোগদান করেননি।’  একইসঙ্গে বিজেপিকে দুর্নীতিবাজ, দাঙ্গাবাজ ও গুন্ডাবাজদের দল বলেও কটাক্ষ করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে দিনভর তপ্ত রইল শীতের শনিবাসরীয় বাংলার রাজনীতি।
 

Share this article
click me!