
সদ্যোজাতকে (Newborn) নিয়ে গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি (Gangarampur Super Speciality Hospital) হাসপাতালে মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Exam) দিল এক পরীক্ষার্থী। সোমবার গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের দোতলায় ওই পরীক্ষার্থীর জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ঘটনাস্থলে মোতায়েন ছিল সিভিক ভলেন্টিয়ার (Civic Volunteer)। পাশাপাশি পরীক্ষা দিতে যাতে কোনও রকম সমস্যা না হয় তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা করা হয়। গঙ্গারামপুরের পাশাপাশি আরও এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অসুস্থ অবস্থায় তপন গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা দেন বলে জেলা পুলিশ সুপার (Police Super) রাহুল দে জানান।
জানা গিয়েছে, বংশীহারী থানার সুদর্শননগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী মুখী টুডু। তার মাধ্যমিক পরীক্ষার ভেনু ছিল বংশীহারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে। এদিকে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রবিবার গঙ্গারামপুর হাসপাতালে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হয় সে। সেখানে সন্তানের জন্ম দেয়। গত বৃহস্পতিবার ছুটি দেওয়া হয় মুখীকে। গতকাল ফের শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে গঙ্গারামপুর হাসপাতালে ভর্তি হয় মুখী। বিষয়টি বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে হাসপাতালেই তার পরীক্ষার দেওয়ার ব্যবস্থা করে।
আরও পড়ুন- মাধ্যমিকের প্রথম দিনেই সন্তান প্রসব, কোলে মেয়ে নিয়ে পরীক্ষা দিলেন সদ্য মা
তবে শুধুমাত্র দক্ষিণ দিনাজপুরেই নয়, হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা দেন মালদহের এক পড়ুয়াও। হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার নানারাই গ্রামের বাসিন্দা আনজারা খাতুন(১৮)। হরিশ্চন্দ্রপুর কিরণবালা বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী। এই বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিল আনজারা। ওই গ্রামের যুবক মোহাম্মদ সেলিমের সঙ্গে প্রেম ছিল তার। তিন বছর আগে প্রেম করে তারা বিয়েও করে। সেই বিয়ে মেনে নেয় আনজারার বাবা আমির হোসেন। কিন্তু বিয়ের পরেও পড়াশোনা বন্ধ করেনি আনজারা। দশম শ্রেণীতে সন্তান সম্ভবা হলেও মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডাক্তারেরর পক্ষ থেকে তার সন্তান প্রসবের সময় দেওয়া হয়েছিল ১৬ মার্চ।
কিন্তু, আজ পরীক্ষার দিন সকালেই অসহ্য প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি হয় সে। সকাল সাতটায় কন্যা সন্তান হয় তার। আর তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কন্যা সন্তানকে কোলে নিয়ে পরীক্ষা দিতে বসে যায় আনজারা। এই বছর তাদের পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল হরিশ্চন্দ্রপুর হাইস্কুলে। আনজারার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশি পাহারায় চলে তার পরীক্ষা। প্রথম দিন ছিল বাংলা পরীক্ষা। পরীক্ষাতে ভালো ফলাফল করার ব্যাপারেও আশাবাদী সদ্যোজাত কন্যা সন্তানের মা আনজারা। পড়াশোনার প্রতি তার এই আগ্রহ এবং পরীক্ষা দেওয়ার অদম্য ইচ্ছাকে কুর্নিশ জানাচ্ছে সকলে।
আরও পড়ুন- রাস্তা আটকাতে পারে হাতির পাল, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য পাহারা বনদফতরের