হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অনুব্রত মণ্ডলকে তলব করেছে সিবিআই। এদিন বিকেল সাড়ে ৫টায় তাঁকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে।
স্বস্তি নেই তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের। শুক্রবারই একএসকেএম হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন। কিন্তু শনিবার বিকেলেই তাঁকে হাজিরাদেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা বা সিবিআই। শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার মধ্যেই তাঁকে সিবিআই-এর নিজাম প্যালসের দফতরে হাজিরা দিয়ে হবে- তেমনই জানিয়েছে সূত্র। গরুপাচারকাণ্ডেই এদিন অনুব্রত মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন সিবিআই কর্তারা। তবে অনুব্রত সিবিআই দফতরে যাবেন কিনা তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন।
গত ৬ এপ্রিল সিবিআইএর আধিকারিকদের সামনে হাজিরা দেওয়ার জন্যই বীরভূম তেকে কলকাতায় এসেছিলেন জেলার তৃণমূল সভাপতি তথা দাপুটে নেতা। হাজিরা দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে রওনাও দিয়েছিলেন। কিন্তু সিবিআই দফতরে যাওয়ার আগেই তিনি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন যে তাঁকে গাড়ি ঘুরিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।
তারপর থেকে প্রায় ১৬ দিন অনুব্রত মণ্ডল এসএসকেএম-এর উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন। শুক্রবারই তাঁকে ছেড়ে দেন চিকিৎসকরা। তবে এক মাস তাঁকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও হাসপাতাল সূত্রের খবর। পাশাপাশি হালকা ডায়েট দেওয়া হয়েছে। আপাতত অনুব্রত কলকাতা চিনারপার্কের বাড়িতেই থাকবেন।
কিন্তু হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অনুব্রত মণ্ডলকে তলব করেছে সিবিআই। এদিন বিকেল সাড়ে ৫টায় তাঁকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে। তবে অনুব্রত আইনজীবী সঞ্জীব কুমার দাঁ জানিয়েছেন, তৃণমূল নেতা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরই চিঠি দিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছিলেন সিবিআই কর্তাদের। এবারও তেমন চিঠি দিয়ে সমস্তটাই জানাবেন তিনি। চিকিৎসকা অনুব্রত মণ্ডলকে কী নির্দেশ দিয়েছেন তাও বিস্তারিত জানাবেন। তারপর সিবিআই কর্তারা কী সিদ্ধান্ত নেন তারওপরই নির্ভর করছে তৃণমূলের দাপুটে নেতার পরবর্তী পদক্ষেপ।
অনুব্রত মণ্ডল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্য়ান্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত রাজ্যরাজনীতিতে। তাঁকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্নেহভরে কেষ্ট বলেও সম্বোধন করে থাকেন। তবে বর্তমানে রাজ্যরাজনীতিতে কিছুটা হলেও চাপে পড়েছেন তিনি। কারণ গরুপাচারকাণ্ডের পাশাপাশি অনুব্রতর নাম জড়িয়েছে বাগটুইকাণ্ডেও। বীরভূমের রামপুরহাটের বাগটুই গ্রামে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দারা। এই ঘটনায় আবারও প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। জেলা সভাপতি হিসেবে এক কিছুটা দায় অবশ্যই অনুব্রত মণ্ডলের কাঁধেও রয়েছে। তাঁর সঙ্গে রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের দলীয় বিবাদও প্রকাশ্যে এসেছে বাগটুইকাণ্ডকে কেন্দ্র করে। এই বাগটুইঘটনার তদন্তের ভার পড়েছে সিবিআই-এর হাতে।