পাঁচ মাস বেতন নেই, জেলায় জেলায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কোভিড হাসপাতাল

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা: সুকুমার দে বলেন, জেলায় কোভিড সংক্রমণ নেই। হাসপাতালে রোগী আসছে না

Parna Sengupta | Published : Mar 15, 2022 5:04 PM IST

রাজ্যের অন্যান্য কোভিড হাসপাতালের (Covid Hospital) মত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার (South Dinajpur district) বালুরঘাট (Balurghat) কোভিড হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। মূলত করোনার সংক্রমণ (Corona Virus) কমার জন্য কোভিড হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। ১৬ই মার্চ অর্থাৎ বুধবার থেকে বালুরঘাট নাট্য উৎকর্ষ কেন্দ্রে থাকা কোভিড হাসপাতাল বন্ধ হচ্ছে। জেলায় সংক্রমণ না থাকায় আপাতত সেই হাসপাতালটি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। 

কোভিড হাসপাতাল বন্ধ করার ফলে কর্মহীন হয়ে পড়ল প্রায় ২৪ জন স্বাস্থ্য কর্মী। যারা মূলত অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন। এদিকে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে একটি করোনা ইউনিট রাখা হচ্ছে। করোনা সংক্রমিত গুরুতর রোগী হলে তাকে সেখানেই চিকিৎসা করা হবে বলে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে। অন্যদিকে কর্মহীনদের দাবি কঠিন পরিস্থিতিতে তারা পরিষেবা দিয়েছিলেন। সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এখন তাদের পাশে দাঁড়াক সরকার। বকেয়া বেতনের পাশাপাশি বিকল্প কাজের দাবি জানিয়েছেন কর্মহীন স্বাস্থ্য কর্মীরা। 

জানা গেছে, করোনা যখন শিরে সংক্রান্তি অবস্থা তখন বালুরঘাট শহর লাগোয়া চকবাখরে অবস্থিত নাট্য উৎকর্ষ কেন্দ্রকে করোনা হাসপাতাল করে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তর। যেখানে শেষ পর্যন্ত মোট ৮৫টি বেড ছিল। যার মধ্যে ৯টি সিসিইউ বেড ছিল। গত এক মাস থেকে ওই হাসপাতালে একজন রোগীও নেই। জেলা জুড়ে সাকুল্যে দু'একজন করে সংক্রমণ হচ্ছে। যার ফলে তারা বাড়িতে থেকেই সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে। 

এছাড়াও ওই হাসপাতালের কাজের জন্য বেশ কয়েকজন অস্থায়ী নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। মোট নার্স ছিল ১৩ জন, কোভিড যোদ্ধা ৪ জন ও সহকারী হিসেবে আরও ৭ জন ছিলেন। এই ২৪ জনের মধ্যে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ২০ জনকে নিয়োগ করেছিল। বাকি ৪ জন কোভিড যোদ্ধা রাজ্য থেকে নিয়োগ করা হয়েছিল। এদিকে কোভিড হাসপাতাল বন্ধের ফলে কার্যত তারাও কাজ হারাচ্ছেন। কি করে এখন তাদের দিন চলবে তা ভেবেই শিউরে উঠছেন।

এবিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা: সুকুমার দে বলেন, জেলায় কোভিড সংক্রমণ নেই। হাসপাতালে রোগী আসছে না। যার ফলে নাট্য উৎকর্ষ কেন্দ্রের করোনা হাসপাতালটি আমরা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছি। আপাতত বালুরঘাট সদর জেলা হাসপাতালে একটি আলাদা করোনা ইউনিট খোলা হচ্ছে। সেখানেই সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসা করা হবে। কবে বন্ধ হবে, তা এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে খুব শীগ্রই তা বন্ধ হবে।

অন্যদিকে এবিষয়ে কোভিড হাসপাতালে অস্থায়ী কর্মী মৃত্যুঞ্জয় দেব চৌধুরী বলেন, তিনি আগে রেলে শ্রমিকের কাজ করতেন৷ তারপর প্রায় ২ বছর আগে এই কাজে ঢোকেন। এখন শুনছেন কাল থেকে কাজ থাকবে না। এদিকে এখনো ৫ মাসের বকেয়া বেতন বাকি রয়েছে। কি করে এখব সংসার চলবে? বাড়ি অসুস্থ মা আছে। আবার হয়তো দিন মজুরের কাজ করতে হবে। তাদের দাবি সরকার ও প্রশাসনের কাছে তাদের বকেয়া বেতন দেওয়ার পাশাপাশি করে কর্মে খেতে পারেন এমন কোন বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করা হোক৷ তা না হলে আত্মহত্যা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। 

অন্যদিকে এবিষয়ে শর্বাণী দে ঘোষ নামে আর এক কোভিড হাসপাতালের কর্মী বলেন, স্বামী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। বাড়ি মেয়ে আছে৷ স্কুলে পড়াশুনা করে। এই কাজ চলে গেলে মেয়েকে কিভাবে পড়াশুনা করাবো। সংসারই বা চলবে কি করে। তাদের আবেদন বিকল্প কোন কাজের ব্যবস্থা করে দিল প্রশাসন। 

Share this article
click me!