মুম্বইয়ে খুন কোন্ননগরের চিত্রশিল্পী, ডিজাইন চুরি করতেই কি গলা কেটে হত্যা

  • মুম্বইয়ের গোরেগাঁওতে খুন বাঙালি আর্ট ডিরেক্টর 
  • মৃতের নাম কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী
  • হুগলির কোন্ননগরের বাসিন্দা ছিলেন কৃষ্ণেন্দু
  • ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরেই খুন, ধৃত ১
     

debamoy ghosh | Published : Aug 12, 2019 7:44 AM IST / Updated: Aug 12 2019, 01:19 PM IST

মুম্বইয়ে রহস্যজনকভাবে খুন হলেন এক বাঙালি চিত্রশিল্পী। মৃত যুবকের নাম কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী। তিনি হুগলির কোন্ননগরের বাসিন্দা। 

জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ের গোরেগাঁওতে নিজের ফ্ল্যাটের অদূরেই কৃষ্ণেন্দুর দেহ উদ্ধার হয়। ওই যুবককে খুনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান,ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরেই খুন হতে হয়েছে ওই চিত্রশিল্পীকে। খুনের অভিযোগে মহম্মদ ফুরকান খান নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

জানা গিয়েছে, গত ৯ অগাস্ট থেকে আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যান কৃষ্ণেন্দু। ২০০৮ সাল থেকে মুম্বইতেই থাকতেন তিনি। প্রথমে টিউশন দেওয়া এবং একটি প্রোডাকশন হাউজে কাজ করলেও ধীরে ধীরে কৃষ্ণেন্দুর কাজ জনপ্রিয় হয়। কয়েক বছর আগে নিজেরই একটি প্রোডাকসন হাউজ খোলেন তিনি। 

কৃষ্ণেন্দু গত পাঁচ বছর ধরে কাজের চাপে তাঁর কোন্ননগরের বাড়িতে আসতে পারেননি। কিন্তু প্রতিদিনই মাকে ফোন করতেন তিনি। কৃষ্ণেন্দুর মুম্বইয়ের বন্ধু চিন্ময় মণ্ডল জানান, আর্ট ডিরেক্টর হিসেবে দারুণ সুনাম অর্জন করেছিলেন কৃষ্ণেন্দু। বিভিন্ন বড় বড় অনুষ্ঠান স্থল কৃষ্ণেন্দুর তৈরি করা ডিজাইন দিয়ে সাজানো হতো। কৃষ্ণেন্দুর তৈরি করা ডিজাইন কয়েক লক্ষ টাকার বিনিময়ে কিনে নিত বিভিন্ন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা বা ডেকরেটররা। 

কৃষ্ণেন্দুর বন্ধু চিন্ময়বাবুর অভিযোগ, এরকমই একটি ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে গত ৯ অগাস্ট সন্ধ্যায় মহম্মদ ফুরকান নামে পেশায় এক ডেকরেটরের কাছে গিয়েছিলেন কৃষ্ণেন্দু। সঙ্গে ছিল তাঁর ল্যাপটপ। তার মধ্যেই বেশ কিছু নতুন ডিজাইন ছিল। অভিযোগ, ওই ডিজাইন চুরি করতেই খুন করা হয় কৃষ্ণেন্দুকে। 

গত ৯ তারিখ ফুরকানের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পর থেকেই কৃষ্ণেন্দুর কোনও খোঁজ মেলেনি। এর পর পুলিশে অভিযোগ জানান চিন্ময়বাবু। শেষ পর্যন্ত রবিবার গোরাগাঁওয়ের নিজের ফ্ল্যাটের কাছেই একটি খাদের মধ্যে থেকে কৃষ্ণেন্দুর গলা কাটা দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে অভিযুক্ত ফুরকান খানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আরও দুই অভিযুক্তের খোঁজ চলছে। 

সোমবার সকালেই কৃষ্ণেন্দুর মৃত্য়ুর খবর তাঁর কোন্ননগরের বাড়িতে এসে পৌঁছয়। চিত্রশিল্পী হিসেবে সুনাম অর্জন করার জেরেই কৃষ্ণেন্দুকে খুন করা হয়েছে বলে তাঁর মায়ের অভিযোগ। পরিচিতরা জানাচ্ছেন, অত্যন্ত মিশুকে এবং হাসিখুশি স্বভাবের ছিলেন কৃষ্ণেন্দু। নবগ্রাম বিদ্যাপীঠ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পরে দমদম আর্ট কলেজে ভর্তি হন তিনি। এর পর পুণেতে গিয়ে একটি সার্টিফিকেট কোর্সও করেন। তার পর পাকাপাকিভাবে মুম্বইতে চলে যান কৃষ্ণেন্দু। কোন্ননগরের বাড়িতে আঁকার খাতা, বড় বড় ক্যানভাসে ছড়িয়ে রয়েছে কৃষ্ণেন্দুর স্মৃতি। ঘটনার খবর আসার পরেই তাঁর মামাতো ভাই মুম্বই রওনা দিয়েছেন। 

Share this article
click me!