ভক্ত বা অনুগামীরা সেলফি তুলতে এলে সাধারণত খুশিই হন রাজনৈতিক নেতারা। বড়মাপের নেতাদের কাছে গিয়ে সেলফি তোলার সুযোগও সবসময় পান না রাজনৈতিক দলের সাধারণ কর্মী বা সমর্থকরা। কিন্তু প্রিয় নেতার সঙ্গে সেলফি তুলতে গিয়ে ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতাই হলো বাঁকুড়ার এক সিপিএম কর্মীর। সেলফি তুলতে গিয়ে উল্টে নেতার থেকে ধমক খেতে হল তাঁকে। কারণ প্রবীণ ওই নেতার যে সেলফি তোলাই এক্কবারে না পসন্দ!
সেলফি তুলতে গিয়ে সিপিএম-এর তরুণ ওই সমর্থক যে নেতার বকুনি খেয়েছেন, তিনি বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। সোনামুখিতে নাগরকিত্ব আইন, এনআরসি, এনপিআর-এর বিরোধিতায় মিছিল বের করেছিল সিপিএম। সোনামুখীর পনেরোটি ওয়ার্ডে ঘোরে সেই মিছিল। মিছিল এবং দলীয় সভার আগে এক দলীয় কর্মীর বাড়িতে যান বিমানবাবু। সেখানেই সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য রাখছিলেন তিনি। আর তখনই ঘটে যায় এই ঘটনা।
আরও পড়ুন- সিপিএম- কংগ্রেসের পরকীয়া চলছে, নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কটাক্ষ মুকুলের
বিমানবাবু যখন সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন, তখন তাঁর পাশে দাঁড়ানো দলেরই এক তরুণ সমর্থক বিমানবাবুরর সঙ্গে সেলফি তোলার চেষ্টা করেন। এনআরসি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতেই বিষয়টি নজরে পড়ে বিমানবাবুর। সঙ্গে সঙ্গে হাতে থাকা কাগজ দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে ওই যুবককে ধমক দেন বিমানবাবু।
রীতিমতো ক্ষুব্ধ এবং বিরক্ত প্রবীণ ওই নেতাকে বলতে শোনা যায়, 'আমি সেলফি পছন্দ করি না। সেলফি যাঁরা করে তাঁরা আমার সামনে থাকুক তাও চাই না। কারণ তাঁরা সেলফিশ, সেলফ- সেন্টারড্ হয়। তাাঁরা নিজেরটা ভাবে, অন্যেরটা ভাবে না।'
বিমানবাবুর ধমক খেয়ে বেশ কিছুটা থতমত খেয়ে যান তরুণ ওই সমর্থক। ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্যান্য কর্মী, সমর্থকরাও এই কাণ্ড দেখে হেসে ফেলেন। ওই সেলফি শিকারী ধমক দিয়ে অবশ্য ফের এনআরসি-র বিরোধিতায় বিক্ষোভ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন বিমান বসু।
সিপিএম সূত্রের খবর, মোবাইলের থেকে এখনও ল্যান্ডলাইন ফোনেই কথা বলতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন বিমান বসু। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মতো তিনিও ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না বলেই জানাচ্ছেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা।
তবে সেলফি বিড়ম্বনায় অবশ্য শনিবার বাঁকুড়ার সভাতেও বিরক্তি প্রকাশ বিমান বসু। সেখানেও এক সমর্থক তাঁর সঙ্গে সেলফি তুলতে গেলে ধমক দেন বিমান বসু। সভায় এনআরসি, নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় বক্তব্য রাখার মাঝেও সেলফি নিয়ে নিজের অসন্তোষ আড়াল করেননি বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান।