বনগাঁ পুরসভার আস্থাভোট নিয়ে রাজ্যকে বেনজির প্রস্তাব দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে তাঁর প্রস্তাব, নির্বিঘ্নে আস্থা ভোট করাতে ভোটাভুটি হোক জেলাশাসকের দফতরে। এমন কী, সেখানে জেলার পুলিশ সুপারকে উপস্থিত থাকার কথাও বললেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন- আস্থা ভোট ঘিরে তুলকালাম বনগাঁয়, সংঘর্ষের মধ্যেই ফাটল স্টান গ্রেনেড, দেখুন ভিডিও
গত মঙ্গলবার বনগাঁয় আস্থাভোট নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে। বিজেপি-র অভিযোগ, আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তাদের বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরকে আস্থাভোটে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরকে পুরসভার মধ্যেই আটকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ। এই নিয়ে বিজেপি সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে পুলিশের। শেষ পর্যন্ত তৃণমূল দাবি করে, তারা পুরবোর্ড দখল করেছে।
আরও পড়ুন- মুকুলের খাসতালুকেই খেলা ঘোরাচ্ছে তৃণমূল, হালিশহরের পর এবার কাঁচরাপাড়াও
ঘটনার পরদিনই ফের বিষয়টি হাইকোর্টে গোচরে আনেন বিজেপি কাউন্সিলররা। এ দিন সেই মামলার শুনানিতেই বনগাঁয় আস্থাভোট ঘিরে গন্ডগোলে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়। এর পরেই রাজ্যের এজি-র উদ্দেশে তিনি, নিরাপত্ত সুনিশ্চিত করতে তাহলে জেলাশাসক বা মহকুমাশাসকের দফতরে আস্থা ভোটের আয়োজন করা হোক। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভালের জন্য সেখানে পুলিশ সুপারকে রাখার প্রস্তাবও দেন বিচারপতি। যদিও, এ দিন এই মামলায় কোনও নির্দেশ দেয়নি আদালত। সোমবার ফের এই মামলার শুনানি হবে হাইকোর্টে।
অন্যদিকে এ দিনই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত হয়ে গেল হালিশহর পুরসভার আস্থাভোট। এ দিন বেলা তিনটের সময় আস্থাভোট ছিল হালিশহর পুরসভায়। কিন্তু এ দিন আস্থাভোট নিয়ে হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন কয়েকজন বিজেপি কাউন্সিলর। এর পরেই ২৭ জুলাই পর্যন্ত আস্থাভোট স্থগিত করে দেন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়। এ ক্ষেত্রে সরাসরি রাজ্য সরকারের ভূমিকাতেই ক্ষোভপ্রকাশ করেন তিনি। বিচারপতি অভিযোগ করেন, ১৬ জুলাই আস্থা ভোটের নোটিস দেওয়ার তিনদিনের মধ্যে শুক্রবারই আস্থা ভোটের ডাকা হয় হালিশহরে। বিচারপতি অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশের অপব্যব্যাখ্যা করে তাড়াহুড়ো করে আস্থা ভোট ডাকা হয়েছে হালিশহরে। এমন জালিয়াতি দেখে রাজ্য চুপ করে থাকতে পারেনা বলেও মন্তব্য করেন ক্ষুব্ধ বিচারপতি। আগামী ২৩ জুলাই ফের এই মামলার শুনানি হবে। এ দিন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় ক্ষোভের সঙ্গে মন্তব্য করেন, 'বনগাঁয় চেয়ারম্যান আস্থা ভোট করতে দিলেন না। আর হালিশহরে রাজ্য তাড়াহুড়ো করছে।'