আউট্রাম ঘাটে কলকাতা পুরসভার টেস্টিং সেন্টারে সকাল ৭ টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত করোনা পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষার পর দেখা যায় ৯ জন করোনায় আক্রান্ত। কিন্তু, তাতেও তাঁদের বিশেষ একটা হেলদোল দেখা যায়নি। বরং মাস্ক খুলে ঘুরে বেরাতে দেখা গিয়েছে তাঁদের।
রাজ্যে হু হু করে বাড়ছে করোনার (Corona Cases) সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে গঙ্গাসাগর মেলা (Gangasagar Mela) না করার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন অনেকেই। এমনকী, তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে (Kolkata High Court) জনস্বার্থ মামলাও দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু, তাতেও খুব একটা লাভ হল না। সর্তসাপেক্ষে মেলার অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্ট। আর ইতিমধ্যেই গঙ্গাসাগর মেলায় যোগ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুণ্যার্থীরা এসে ভিড় করছেন আউট্রাম ঘাটে (Outram Ghat)। আর সেখানে পুরসভার ক্যাম্পে করোনা রিপোর্ট পজিটিভ (Corona Positive Report) আসা পুণ্যার্থীকে সামাল দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশকে (Police)। শনিবার আউট্রাম ঘাটে গঙ্গাসাগরের ৪০ জন পুণ্যার্থীর করোনা পরীক্ষা (Corona Test) করা হয়। তার মধ্যে ৯ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে বলে জানা গিয়েছে।
শনিবার আউট্রাম ঘাটে কলকাতা পুরসভার টেস্টিং সেন্টারে সকাল ৭ টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত করোনা পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষার পর দেখা যায় ৯ জন করোনায় আক্রান্ত। কিন্তু, তাতেও তাঁদের বিশেষ একটা হেলদোল দেখা যায়নি। বরং মাস্ক খুলে ঘুরে বেরাতে দেখা গিয়েছে তাঁদের। আর ওভাবেই সতীর্থদের সঙ্গে গল্পে মশগুল হয়ে পড়েন তাঁরা। তাঁদের হাবভাব কিছুটা এমন, যেন করোনা তো কি হয়েছে, গঙ্গাসাগরে গেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন- গঙ্গাসাগর মেলা কী কোভিডের সুপার স্প্রেডার হতে চলেছে, চিন্তায় চিকিৎসকরা
তবে শুধুমাত্র আউট্রাম ঘাটে আসা পুণ্যার্থীদের ক্ষেত্রেই নয়, এই বিষয়টি লক্ষ্য করা গিয়েছে গঙ্গাসাগর মেলায় যোগ দিতে আসা সব পুণ্যার্থীর ক্ষেত্রেই। এই মেলায় যোগ দিতে বহু দিন ধরেই বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ রাজ্যে আসতে শুরু করে দিয়েছেন। তার মধ্যে এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যাঁরা করোনা কি সেই নামই শোনেননি, আবার কারও করোনার নাম শুনলেও টিকা কি তা জানেন না। ফলত তা থেকেই স্পষ্ট যে সেখানে যোগ দেওয়া বহু মানুষেরই এখনও পর্যন্ত করোনার টিকা নেননি। তার থেকেই বাড়ছে উদ্বেগ। কারণ এই সব মানুষকে টিকা ও করোনার কথা বোঝানো কতটা কঠিন তা খুব ভালো করেই জানেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া পুণ্যার্থীদের একটা বড় অংশের মুখেই মাস্কের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। কেই আবার নিয়মরক্ষা করার জন্য তা থুতনিতে দিয়ে রেখেছেন। আর এই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই গঙ্গাসাগর করোনার সুপার স্প্রেডার হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
৭ জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টের তরফে জানানো হয়েছে, মেলা হবে শর্তসাপেক্ষেই। তবে মেলায় ভিড় নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছে আদালত। সঙ্গে নজরদারির জন্য তৈরি করে দেওয়া হয়েছে তিন সদস্যের একটি কমিটি। কমিটিতে থাকবেন বিরোধী দলনেতা বা তাঁর প্রতিনিধি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান এবং রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি। ওই কমিটি সাগরে করোনাবিধি মেনে মেলা হচ্ছে কি না সে দিকে নজর রাখবে। এদিকে রাজ্যের দৈনিক সংক্রমণ বাড়ছে লাফিয়ে। এই পরিস্থিতিতে ১৯ হাজার ছুঁতে চলেছে সংক্রমিতের সংখ্যা। আর এর মধ্যে গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন করার ফলে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।