নিখোঁজ সিপিএম নেতার টুকরো টুকরো দেহ উদ্ধার হল অজয় নদীর চর থেকে। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের দুবরাজপুর থানা এলাকায়। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে খুনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই এক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদেরকে এ দিনই বোলপুর আদালতে তোলা হবে।
গত ১৮ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ ছিলেন নানুরের বাসাপাড়ার সিপিএম অঞ্চল সম্পাদক সুভাষচন্দ্র দে। তিনি নিজে এলআইসি এজেন্ট ছিলেন। বোলপুরে বিমা সংস্থার অফিসে যাবেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন ওই সিপিএম নেতা। কিন্তু তিনি না ফেরায় পরের দিনই নানুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সুভাষবাবুর ভাই লখিন্দর দে। তদন্তে নেমে পুলিশ খোঁজমহম্মদরপুর গ্রামের বাসিন্দা মতিউর রহমান এবং তাঁর স্ত্রী সোনালি বিবির খোঁজ পায় পুলিশ। অভিযোগ, সোনালির সঙ্গেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন সুভাষবাবু। আর তারই জেরে এই খুন বলে জানতে পারে পুলিশ। এ দিন সকালেই একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অজয় নদীর চর থেকে সিপিএম নেতার বস্তাবন্দি মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযোগ পাওয়ার পরে নিখোঁজ সিপিএম নেতার মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখে তল্লাশি শুরু হয়। সুভাষবাবুর মোবাইলের শেষ টাওয়ার লোকেশন দেখাচ্ছিল দুবরাজপুরে অজয় নদীর চর সংলগ্ন এলাকাতেই। তার আগে খোঁজমহম্মদপুরে তার টাওয়ার লোকেশন মেলে। এর পরেই মতিউর এবং তার স্ত্রীর খোঁজ পায় পুলিশ। তাদের আটকে করে জেরা করতেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পুলিশ জানতে পারে, বিমা করানোর সূত্রেই মতিউরের পরিবারের সঙ্গে পরিচয় হয় সুভাষবাবুর। জেরায় মতিউর দাবি করেছে, তার স্ত্রীর সঙ্গে সুভাষবাবুর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তা নিয়ে ক্ষোভ ছিল মতিউরের মনে। ঘটনার দিন বিকেলে সুভাষবাবুকে বাড়িতে বসে থাকতে দেখতে পেয়ে মাথা ঠিক রাখতে পারেনি মতিউর। পুলিশ মতিউর জানিয়েছে, প্রথমে লোহার রড দিয়ে পিছন দিক থেকে সুভাষবাবুর ঘাড়ে আঘাত করে সে। সুভাষবাবু নীচে পড়ে যেতেই ধারাল অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয় তাঁকে। এর পর মাথা, পা শরীর থেকে আলাদা করে দু'টি চটের বস্তায় ভরে আট কিলোমিটার দূরে অজয় নদীর চরে নিজেই পুঁতে দিয়ে আসে মতিউর। পুরো ঘটনাটাই জানত মতিউরের স্ত্রী সোনালিও। নিহত সিপিএম নেতার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ।