সুন্দরবনে খুন রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। আর সেই ঘটনার এক মাসেরও বেশি সময় পরে অবশেষে গ্রেফতার করা হল মূল অভিযুক্ত এক দম্পতিকে। ধৃতদের নাম বিমল দাস এবং অনিতা দাস। বৃহস্পতিবার ধৃতদের বারুইপুর জেলা আদালতে পেশ করা হলে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
গত ৮ এপ্রিল সুন্দরবনের আজমলমারির জঙ্গলে একটি পূর্ণবয়স্ক বাঘের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। সেই ঘটনাতেই অভিযুক্ত দাস দম্পতিকেল বৃহস্পতিবার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার নরেন্দ্রপুরে তাদের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত প্রায় একমাস ধরে পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল ওই দু' জন। এমন কী, এই ঘটনার তদন্তে গিয়ে সুন্দরবনে গ্রামবাসীদের হাতে প্রহৃত হন বন দফতরের কয়েকজন অফিসার।
পুলিশ এবং বন দফতরের তরফে জানা গিয়েছে, সুন্দরবনের মধ্য গুড়গুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা এই দম্পতি বাঘের মৃতদেহ উদ্ধারের দিন থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। জেরায় তারা স্বীকার করেছে, গ্রামের আরও তিন বাসিন্দার সঙ্গে তারাও বাঘটিকে ফাঁদে আটকা পড়তে দেখেছিল। বাকি তিন অভিযুক্তের নাম মঙ্গল মান্না, রুকমিণি মান্না এবং তাদের ছেলে প্রফুল্ল মান্না। মূলত হরিণ এবং বুনো শুয়োর শিকারের জন্যই ওই তারের ফাঁদ পাতা হয়। সেই ফাঁদেই আটকে পড়ে বাঘটি। কার্যত তাদের চোখের সামনে ফাঁদে আটকে ধীরে ধীরে মৃত্যু হয় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের।
ঘটনার পরেই অন্যতম অভিযুক্ত মঙ্গল এবং তার স্ত্রী দক্ষিণ ভারতে তাদের ছেলে প্রফুল্লর কাছে পালিয়ে গিয়েছিল। প্রফুল্ল সেখানেই কাজ করে। যারা পশু শিকারের জন্য ফাঁদ পেতেছিল, তাদের মধ্যে প্রফুল্লও ছিল। যদিও প্রফুল্ল বা তার বাবা-মা এখনও ধরা পড়েনি।
প্রফুল্লর সঙ্গেই প্রবোধ মান্না, সদানন্দ হালদার এবং অশোক মণ্ডল নামে তিন ব্যক্তি তার দিয়ে ওই মারণ ফাঁদ পেতেছিল। এই তিনজনকে অবশ্য আগেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শক্ত লোহার তারের পাতা ওই জালে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় বাঘটির। ঘটনাস্থল থেকে একটি হরিণের হাড়গোড়ও উদ্ধার হয়েছিল। এর থেকেই পরিষ্কার, বন দফতরের নজরদারি এড়িয়ে কীভাবে সুন্দরবনের গভীরে চোড়া শিকার অব্যাহত রয়েছে।