'দিদি কে বলো'র পাল্টা 'দিদিকেই বলছি', সোশ্যাল মিডিয়ায় মোক্ষম জবাব সিপিএম এর

  • 'দিদিকে বলো'র পাল্টা 'দিদিকেই বলছি' 
  • সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল সিপিএম-এর প্রশ্ন
  • রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে করা হয়েছে প্রশ্নগুলি
  • সিপিএম-এর অবস্থান নতুন কোন বিতর্কের জন্ম দিতে পারে
     

debojyoti AN | Published : Jul 30, 2019 6:17 PM IST

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতিশ কুমারের মতই 'ডাইরেক্ট হট লাইন' চালু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, নিতিশ কুমারের সেই মডেলের নেপথ্যের কারিগর প্রশান্ত কিশোর, যার ওপর এখন দায়িত্ব ২০২১ তৃণমূলের জয়ের ধারা অব্যাহত রাখার।  কয়েকবারের বঙ্গ সফরে এসেই ভোট গুরু বুঝে গিয়েছেন  এই মুহূর্তে তৃণমূলের মূল সমস্যা জনবিচ্ছিন্নতা । মনে করা হচ্ছে সেই রোগের দাওয়াই হিসেবেই তিনি বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর মতন এরাজ্যেও চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রীর 'ডাইরেক্ট হট লাইন'- 'দিদি কে বলো'। এই হট লাইনে ফোন করে রাজ্যের যে কোনও মানুষ সরাসরি কথা বলতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে, জানাতে পারবেন তাঁর যে কোন অভিযোগ। লাইন চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ধরে নেওয়া হয়েছে এটি একটি রাজনৈতিক মাষ্টারস্ট্রোক, যার দাপটে স্রেফ উড়ে যাবেন বিরোধীরা। 
 
মাষ্টার স্ট্রোকের তত্ত্বকে  বিরোধীদের মধ্যে সবার প্রথম চ্যালেঞ্জ হানলো সিপিএম। 'দিদিকে বলো' র পাল্টা সোশ্যাল মিডিয়া টিমের মাধ্যমে সিপিএম তৈরি করেছে বেশ কয়েকটি প্রশ্নের একটি সংকলন, যার নাম দেওয়া হয়েছে 'দিদি আপনাকেই বলছি'।  এই প্রশ্নগুলি মূলত রাজ্যের বেশ কিছু বর্তমান ইস্যু কেন্দ্রিক। এই ইস্যুগুলির মধ্যে রয়েছে আইন শৃঙ্খলার সমস্যা থেকে কর্মসংস্থানের কথা। রাজ্যের ক্রমাগত বেড়ে চলা আর্থিক ঋণের বোঝার কথাও তুলে ধরা হয়েছে সিপিএম-এর প্রশ্নে। রাজ্যের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতির দিকে আঙ্গুল তুলে সিপিএম-এর তরফে প্রশ্ন করা হয়েছে এবং জানতে চাওয়া হয়েছে ২০১১ থেকে ২০১৯ অবধি রাজ্যের মোট ঋণের পরিমাণ তিণ গুন বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ। 

মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মতন বছরে দুইলক্ষ বেকারের চাকরি কোথায়? সিপিএম-এর ডিজিটাল পোস্টারে সেই প্রশ্নও তোলা হয়েছে। বাংলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে জানতে চাওয়া হয়েছে বাংলায় এত রাজনৈতিক হিংসা কেন? কেন পুলিশের টেবিলের তলায় ঢুকে নিজেকে রক্ষা করার মতন ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাক্ষী থাকতে হয়েছে এই রাজ্যের মানুষকে?  ২১শে জুলাই এর সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন বাংলায় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে হবে। সি পি এম এর দাবি এই মুহূর্তে রাজ্যে তৃণমূল সরকার, পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি নিজ মুখে স্বীকার করে নিলেন যে রাজ্যে গণতন্ত্র নেই। তাহলে কেন তিনি পদত্যাগ করবেন না?

সিপিএম-এর আরও অভিযোগ, একটা সময় স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন ৭৫ শতাংশ কাটমানি দলীয় তহবিলে জমা করে বাকিটা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিতে। তাহলে এখন কেন তিনি কাট মানি ব্ল্যাক মনি ইত্যাদি অভিযোগে সরব? সিপিএম-এর এই ডিজিটাল প্রশ্নমালায় রয়েছে এমন প্রশ্ন যা তৃণমূল কংগ্রেসকে অস্বস্তিতে ফেলতে পারে। যেমন, সিপিএম-এর প্রশ্ন, কেন চিট ফান্ডের কিছু কর্তা বাদে অন্য কেউ মুখ্যমন্ত্রীর আঁকা ছবি কেনেননি? আলিমুদ্দিন স্ট্রিট-এর সিপিএম-এর রাজ্য সদর দফতর থেকে আরও প্রশ্ন নিক্ষেপ করা হয়েছে। যারমধ্যে অন্যতম প্রশ্ন করা হয়েছে যে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর আমলেই রাজ্যে আরএসএস সহ মৌলবাদী শক্তি গুলির এত বাড়বাড়ন্ত, এবং যার দায় তিনি এবং তাঁর দল কোনও ভাবেই এড়াতে পারে না।  তৃণমূলের তরফ থেকে সিপিএম-এর ডিজিটাল প্রশ্ন-কে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া না হলেও, ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে এই ডিজিটাল পোস্টার। মুখ্যমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে সিপিএম-এর চাঁচাছোলা আক্রমণ রাজ্য-রাজনীতিতে নয়া বিতর্ক তৈরি করতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। 

Share this article
click me!