
রাজ্যের কোভিড সক্রমণের গ্রাফ যেখানে লাগামছাড়া সেই পরিস্থিতিতে কী রাজ্য সরকারের গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন করা উচিৎ। বিগত বেশকিছু দিন ধরেই এই প্রশ্ন নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। একদিকে যেখানে সুরক্ষা বিধি মেনে মেলা করার কথা বলেছিলেন শাসক দলের নেতা কর্মীরা। অপরদিকে বিরোধীদের অভিযোগ ছিল এই পরিস্থিতিতে গঙ্গেসাগরের মত মেলার আয়োজন আত্মহত্যার সামিল। পক্ষে-বিপক্ষে কম বাকযুদ্ধ হয়নি। শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টে হয়েছে মাললাও। শুক্রবার অবশ্য রাজ্য সরকারে পক্ষেই রায় দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। সুরক্ষা বিধি মেনে শর্তসাপেক্ষে মেলা করার অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি আদালত তিন সদস্যের নজরদারি কমিটি গড়ে দিয়েছে। যেখানে থাকছেন রাজ্যের কোনও প্রতিনিধি, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা (বা তাঁর কোনও প্রতিনিধি) এবং রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান (বা তাঁর কোনও প্রতিনিধি)। বাধ্য হয়ে আদালতের নির্দেশকে মেনে নিতে হয়েছে সকলকেই।
আদালতের নির্দেশ রাজ্য সরকার পর্যাপ্ত সুরক্ষা বিধি,কোভিড টেস্ট ক্য়াম্প, ভ্যাকসিনেসন ক্যাম্প, ইত্যাদি সহযোগে মেলার আয়োজন করলেও চিকিৎসকদের মাথায় কিন্তু ক্রমশ চওড়া হচ্ছে চিন্তার ভাঁজ। কারণ কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় আমরা দেখেছিলাম কুম্ভমেলার পর কীভাবে ঝড়ের গতিতে বেড়েছিল সংক্রমণ। এবার গঙ্গাসাগর মেলাতেও রাজ্য সরকারের হিসেবে অনুয়ায়ী ৫ লক্ষাধিক লোক সমাগমহতে পারে। তার থেকে বেশি হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। ফলে এত লোকের মেলায় আদৌ সামাজিক দূরত্ব, কোভিড বিধি মানা কী সম্ভব। পার্কস্ট্রিটে বড় দিনের উৎসব ও নতুন বছরের বেলগাম উৎসবের ফলে করোনা সংক্রমণকোন মাত্রা গিয়েছে আমরা প্রতিদিন দেখছি। কীভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে তা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে ৫ লক্ষাধিক বেশি মানুষের গঙ্গাসাগর মেলা সুপার বাংলায় কোভিডের সুপার স্প্রেডার হয়ে উঠবে না তো, এই প্রশ্ন কিন্তু ইতিমধ্যযেই ভাবাচ্ছে চিকিৎসক থেকে শুরু করে ্নেককেই।
শুক্রবার রাজ্য়েপ দৈনিক সংক্রমণ ১৮ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। শুধু কলকাতাতেই সংক্রমণ প্রা সাড়ে সাত হাজার। চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীরা বলছেন এই সংখ্য়াা দৈনিক ৩০ থেকে ৩৫ হাজারে পৌছতে পারে। সেই পরিস্থিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকেরা আসছে গঙ্গসাগর মেলায়। ইতিমধ্যেই কয়েকজন পূণ্যার্থীর কোভিড রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। বিরোধীদের অভিযোগ ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি করতে গিয়েই গঙ্গা সাগর মেলা বন্ধ করার সৎ সাহস দেখাতে পারেনি নবান্ন। একদিকে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ করলে পাছে বিজেপি কোনও ইস্যু খাড়া করে কিনা সেই ভাবনা রয়েছে। একইসঙ্গে রাজ্যের হিন্দু তারউপর সামনেই উত্তর প্রদেশ নির্বাচন। গঙ্গাসাগর মেলায় প্রচুর লোক আসেন উত্তর প্রদেশ থকে। ফলে যতই সুপাপ স্প্রেডার হওয়ার আশঙ্কা থাক না ভোট যে বড় বালাই।