আবারও কাটমানি বিতর্কে নাম জড়াল তৃণমূল নেতাদের। এবার তৃণমূলের ব্লক সভাপতির সঙ্গে অভিযুক্ত জেলা পরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষ এবং দুই পঞ্চায়েত প্রধানও। জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে উদ্দেশ্যে লেখা খোলা চিঠি হ্যান্ডবিল আকারে ছাপিয়ে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তোলা হয়েছে। ওই তৃণমূল নেতাদের অবশ্য দাবি, সমস্ত অভিযোগই ভিত্তিহীন।
যে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের এক নম্বর ব্লক সভাপতি বিনয় ঘোষ, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ বাবলু ভকত এবং পলসা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জীব রবিদাস। এছাড়াও ডুমুরগ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধানের বিরুদ্ধেও কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে ওই হ্যান্ডবিলেষে সেখানে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে উদ্দেশ্য করে এই নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তোলা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ব্লক সভাপতি বিনয় ঘোষ প্রতিটি পঞ্চায়েত থেকে ২ থেকে ৪ শতাংশ, পঞ্চায়েত সমিতি থেকে ৩ শতাংশ এবং শৌচালয় নির্মাণের কাজ থেকে ৫ শতাংশ করে কাটমানি খাচ্ছেন। এমন কী, কিছু ক্ষেত্রে শৌচালয় তৈরি না করেই টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই টাকার অর্ধেক বিনয় ঘোষ আত্মসাৎ করছেন বলে হ্যান্ডবিলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এর আগেও তৃণমূলের মুরারই ১ নম্বর ব্লক সভাপতি বিনয় ঘোষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে হ্যান্ডবিল ছড়িয়েছিল মুরারইয়ে। সেই সময় সিসিটিভি দেখে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। এবার রেজাউল করিম নামে এক ব্যক্তি অনুব্রত মণ্ডলকে এই খোলা চিঠি লিখে হ্যান্ডবিল ছাপিয়েছেন। যদিও এখনও তাঁর খোঁজ পায়নি পুলিশ।
হ্যান্ডবিলে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, কর্মাধ্যক্ষ বাবলু ভকতের সঙ্গে যোগসাজশ করে শৌচাগার নির্মাণ প্রকল্পের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্নসাৎ করেছেন বিনয়বাবু। ওই হ্যান্ডবিলেই পলসা ও ডুমুরগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধেও স্বজনপোষণের অভিযোগ তোলা হয়েছে হ্যান্ডবিলে। হ্যান্ডবিলের প্রতিলিপি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সি এবং প্রশান্ত কিশোরের কাছেও পাঠানো হয়েছে বলে হ্যান্ডবিলে উল্লেখ রয়েছে। শুধু আর্থিক দুর্নীতিই নয়, বিনয়বাবুর চরিত্র নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে হ্যান্ডবিলে। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, চাকরি দেওয়ার নাম করে মহিলাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন তিনি। লোকসভা নির্বাচনেও ওই তৃণমূল নেতা দলবিরোধী কাজ করেছেন বলে হ্যান্ডবিলে অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা বিনয় ঘোষ বলেন, 'মুরারইতে আমি দলটাকে সঠিক দিশা দেখাতে পেরেছি বলে কিছু মানুষের এখন গাত্রদাহ হচ্ছে। তারাই এসব করেছে। এর আগেও একবার করেছিল। সে সময় পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল। এবারও থানায় অভিযোগ জানাব।' মুরারইয়ের বিধায়ক আব্দুর রহমান বলেন, 'অভিযোগ ভিত্তিহীন। বিনয়বাবু সঠিকভাবে দল পরিচালনা করছেন। তাই তাঁর বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হচ্ছে। আর দুর্নীতি করে থাকলে দলের মধ্যেই তা নিয়ে আলোচনা হবে।' বিজেপি- র জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, 'গোটা দলটাই দুর্নীতিতে ডুবে রয়েছে। এখন কেউ কেউ লুকিয়ে বলার সাহস দেখাচ্ছেন। আমি মনে করি তৃণমূল দলটা সার্কাসের দল। এদের কখনও ভাল সময় আবার কখনও খারাপ সময় যায়। দুর্নীতিই দলটাকে শেষ করবে।'