আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মিলে গেল দুই বাংলা, অমর একুশের সম্মানে নত কাঁটাতার

বাংলাদেশ, ভারত তো বটেই সঙ্গে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় এমনকি সুদূর মিশর দেশে, কানাডা, ফিলিপাইনস, রাশিয়া, চিলি, নিউজিল্যান্ড, সিডনি অ্যাসফিল্ড পার্কেও জমায়েত ঘটে বহু ভাষা প্রেমীদের। এই দিনটি পালিত হয় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে।

ভারত (India) বাংলাদেশের (Bangladesh) যৌথ উদ্যোগে হিলি স্থলবন্দরে পালিত হল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (International Mother Language Day)। সোমবার স্থলবন্দরে (Land Port) দুই দেশের সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর (Border guards) নজরদারিতে পালন করা হয় ভাষা দিবস। ভাষা আন্দোলনে শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে দুই দেশের মধ্য পুষ্প স্তবক দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করা হয়।

উল্লেখ্য, দু’টো আলাদা রাষ্ট্র পশ্চিম ও পূর্ব পাকিস্থান। কিন্তু সকল দণ্ডমুণ্ডের কর্তা মহম্মদ আলি জিন্নার ঘোষণায় চার কোটি চল্লিশ লক্ষ মানুষের মাতৃভাষার উপর যখন সমন জারি হল “উর্দুই এক মাত্র ভাষা। তখনই চারিদিকে বাতাসে বিপ্লবের গন্ধ ছড়িয়ে পরে। ক্রমশ মাতৃভাষার জিগিরে উত্তাল হয়ে ওঠে আন্দোলন। গড়ে ওঠে ভাষা আন্দোলন কমিটি। ১৯৫২-এ পত্রিকায় ছাপা হয় “বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করিতে জনগণ শেষ রক্তবিন্দু দেবে”।  এরপর দাবিকে পূর্ণ মর্যাদা প্রদান করে ১৯৫২ এর ২১ ফেব্রুয়ারি হয়ে উঠল, “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি”। 

Latest Videos

সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলা চত্বর রূপ পেয়েছিল ভয়াবহ রণক্ষেত্রের। পুলিশের গুলিতে পলকেই শেষ হয়ে গেল তরতাজা পাঁচ পাঁচটি প্রাণ। ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ হল আবদুস সালাম, রফিক উদ্দিন আহমেদ, আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, শফিউর রহমানের নাম। নিজের মাতৃভাষাকে রাষ্ট্রভাষার সম্মান দিতে কতই না সংগ্রাম, রক্তক্ষরণ, থেমে থাকেনি প্রাণ হারানোর মত ঘটনাও। যা বিশ্বে কোনও দেশ বা জাতির স্মৃতিতে খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু রয়ে গেছে বর্তমান বাংলাদেশের “উনিশশো বাহান্নর রক্তিম পুষ্পাঞ্জলি” হয়ে।

সীমান্তের ওপারের বাংলার দৌলতে সব বাঙ্গালির অর্জন আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস। ১৯৫১-এর ২১ ফেব্রুয়ারি যেমন ঢাকায়, তেমন ১৯৬১-এর ১৯মে বরাক উপত্যকার শিলচরেও বাংলা ভাষা রক্ষায় প্রাণ দিয়েছিলেন ভাষা প্রেমিকারা। বিশ্বে কিছু অর্জন করতে গেলে তার চড়া দাম দিতে হয় এমনকি প্রাণ দিতে হয়। সেই সূত্রে একুশে ফেব্রুয়ারি সেই মহক্ষণ। দীর্ঘ দিন পর রাষ্ট্রসংঘ ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর এই দিনটিকে ‘মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। বাংলাদেশ, ভারত তো বটেই সঙ্গে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় এমনকি সুদূর মিশর দেশে, কানাডা, ফিলিপাইনস, রাশিয়া, চিলি, নিউজিল্যান্ড, সিডনি অ্যাসফিল্ড পার্কেও জমায়েত ঘটে বহু ভাষা প্রেমীদের। এই দিনটি পালিত হয় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে।

৭০ তম বর্ষে হিলি স্থল বন্দরের শূন্যরেখায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে হাকিমপুর পৌরসভার মেয়র এ এনএম জামিল হোসেন চলন্ত, হাকিমপুর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান  মোঃ শাহিনুর রেজা শাহিন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার লিয়াকত আলী এবং ভারতীয়দের পক্ষ থেকে জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটির আহ্বায়ক নবকুমার দাস, উজ্জীবন সোসাইটির সম্পাদক সূরজ দাস, নবদিগন্ত সমাজকল্যাণ সংগঠনের সম্পাদক অমিত সাহা, সমাজকর্মী অমূল্য রতন বিশ্বাস, হরিপদ সাহা প্রমুখ। 

তবে করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ছোট করেই পালিত হয় ভাষা দিবস। এদিন সকালে শূন্যরেখা হয়ে ওঠে ছিল দুই দেশের আবেগ, আত্মা, স্মৃতিচারণের মিলন ক্ষেত্র। অন্যদিকে, হিলি সারদাভবন পাঠাগারে আপনজন সংস্থার তরফে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়।

Share this article
click me!

Latest Videos

‘Bangladesh-কে মারতে হবে না চোখ দেখালেই যথেষ্ঠ’ বাংলাদেশকে ধুয়ে দিলেন Dilip Ghosh | Bangladesh News
Suvendu Adhikari Live: এগরায় জনসভা শুভেন্দুর, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
PM Modi Live : কুয়েতে Gulf Spic-এর ভারতীয় কর্মীদের সঙ্গে আড্ডা মোদীর, দেখুন সরাসরি
প্রেমের আড়ালে লক্ষাধিক টাকা লুঠ! প্রতারণার নেপথ্যে চাঞ্চল্যকর কাহিনি | South 24 Parganas News Today
‘Mamata Banerjee আজ TMC-র মুখ্যমন্ত্রী আছেন কাল জামাতের মুখ্যমন্ত্রী হবেন’ বিস্ফোরক Sukanta Majumdar