মহালয়ার আগেও এসেছিল হড়পা বান, জল বেড়েছিল নবমীতেও, প্রশ্নের মুখে মালবাজারের প্রশাসনিক তৎপরতা 

কয়েকদিন আগের বান আসার জায়গাতেই তৈরি করা হয়েছিল অস্থায়ী বাঁধ। নদীর চরে উঠতে দেওয়া হয়েছিল সাধারণ মানুষদের। নবমীতে বেড়েছিল নদীর জল, সঙ্গে ছিল বৃষ্টির পূর্বাভাসও।

যেখানে বার বার নদীর বান আসে, সেখানেই কেন বাঁধ তৈরি করে বুধবার প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল? দশমীর সন্ধ্যায় জলপাইগুড়িতে সেই বাঁধকেই ভেঙেচুরে সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেল হড়পা বান। স্থানীয়দের কথায় যাকে বলা হয় ‘পাগলা বান’। ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন আট জন মানুষ। জখম হয়েছেন ৩০ জন। পুলিশ দাবি করেছে যে, এখন আর কোনও ব্যক্তি নিখোঁজ নেই। কিন্তু, এই মর্মান্তিক ঘটনায় স্পষ্ট আঙুল উঠেছে জেলা প্রশাসনের গাফিলতির দিকে।


নবান্ন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে এই ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছেন। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুর সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। জেলার বিসর্জনের ঘাটগুলির পরিকাঠামো এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথাযথ মানের রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখারও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। জেলা প্রশাসনের তরফে নবান্নকে দেওয়া প্রাথমিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, মাল এলাকায় কোনও বৃষ্টি হয়নি, তবে মাল নদীতে হড়পা বান হয়েছে। ভুটান থেকে যে জলপ্রবাহ আসে, তাতেই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে নদীর জল তিন গুণ বেড়ে যায়। তাতেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। যদিও এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলেনি জেলা প্রশাসন। 

Latest Videos

কিন্তু, নবান্নকে রিপোর্ট দেওয়ার পরেও, কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন চাপা দেওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে যে, মহালয়ার আগের দিনই হড়পা বান এসেছিল মাল নদীতে, সেই বানের জলের তোড় ভাসিয়ে নিয়ে গেছে অস্থায়ী বাঁধ। খড়কুটোর মতো ভেসে চলে গেছে বাঁধ তৈরির কাজে পাথর তোলার জন্য নদীখাতে নামা একটা বিশাল ট্রাক। তাহলে, এত কিছু জেনেও, সেই জায়গাতেই প্রশাসন আবার কেন বাঁধ তৈরি করল? কেন এত দর্শনার্থী এবং প্রতিমাবাহী লরিকে সেই জায়গাতেই নদীর মাঝের চরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হল? প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তা আর সচেতনতা দেখা গেল না কেন? দ্বিতীয়ত, মালবাজারে নবমীর দিনও বৃষ্টি হয়েছে। উত্তরবঙ্গে নিয়মিত বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া দফতর। তাহলে কি প্রশাসন সেই পূর্বাভাসে কান দেয়নি? তৃতীয়ত, মাল নদীর ঘাট তৈরির দায়িত্বে ছিল মাল পুরসভাও, দিনভর ঘাট তৈরির কাজ করেছিলেন পুরকর্মীরা। নবমীর দিন প্রচণ্ড বৃষ্টিতে নদীর জল বেড়ে গিয়েছিল। তখনও কেন এড়িয়ে গিয়েছিলেন পুরকর্তারা?

জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা এই নিয়ে নির্বাক রয়েছেন। মালবাজারের চেয়ারম্যান স্বপন সাহা বলেন, ‘‘পাহাড়ি মাল নদীকে বাগ মানানোর কোনও চেষ্টা আমরা করিনি। আমরা দীর্ঘদিনের প্রথা মেনে যে ভাবে ঘাট করা হয়, সেটাই করেছিলাম।’’ বিরোধীদের অভিযোগ শুনে তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ নিয়ে রাজনীতি করা বেদনাদায়ক।’’

জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানিয়েছেন, ‘‘নদীতে কীসের বাঁধ কোথায় দেওয়া ছিল সেই বিষয়ে জানা নেই। মাল নদীতে যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, গত ২০ বছরের রেকর্ডে এমন ঘটনা ঘটেনি। পর্যাপ্ত সিভিল ডিফেন্স, পুলিশ উপস্থিত ছিলেন। হঠাৎ করে জল বেড়ে যায়, প্রায় ৩০ জন ভেসে যান। তার মধ্যে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন আর কোনও নিখোঁজের খবর নেই। তবে এনডিআরএফ তল্লাশি চালাচ্ছে।’’


আরও পড়ুন-
শ্রীগৌরী সাওয়ান্তের চরিত্রে সুস্মিতা সেন, প্রকাশ পেল তৃতীয় লিঙ্গের চরিত্রে ‘তালি’-র প্রথম ঝলক
সিটি হলে একের পর এক রক্তাক্ত লাশ, মেক্সিকোতে ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডে ১৮ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু
৬৬ জন গাম্বিয়ান শিশুর মৃত্যু! ভারতে তৈরি সর্দিকাশির সিরাপ নিয়ে এবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তা

Share this article
click me!

Latest Videos

Suvendu Adhikari Live: এগরায় জনসভা শুভেন্দুর, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
'কুমিল্লা ছেড়ে চলে যা' কুমিল্লায় বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতোর মালা! | Bangladesh News |
'একটা আস্ত অশিক্ষিত...গোটা রাজ্যটাই জঙ্গিদের হাতে' কড়া বার্তা শুভেন্দুর | Suvendu Adhikari
Viral Video! আবাসের টাকা ঢুকতেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাটমানি চাইছেন TMC কর্মী | Murshidabad Latest News
‘Bangladesh-কে মারতে হবে না চোখ দেখালেই যথেষ্ঠ’ বাংলাদেশকে ধুয়ে দিলেন Dilip Ghosh | Bangladesh News