গত চার বছর ধরে ঘরের বাইরে শিকল বন্দি হয়ে রয়েছেন এক যুবক। খাস বাংলার ঘটনা। বসিরহাট মহকুমার মাটিয়া থানার ধানুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের হাজরাতলার এই অমানবিক দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত সকলে।
২৪ বছর বয়েসি রাজীবের বাবা রাজকুমার হালদার একজন রং মিস্ত্রি। তাঁর মা মারা গিয়েছেন বছর দুয়েক আগে। তাঁর আচরণ আপাত স্বাভাবিক। ঠিক কেন তাঁকে শিকলে বাঁধা? সাংবাদিকের প্রশ্নের কোনও উত্তরই এলাকাবাসীরা দিতে পারেনি। রাজকুমার হালদারের কৈফয়ত, রাজীব বারবার বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তাই তাঁকে বেঁধে রাখা হয়। দিনের বেলা সে নিজের বাড়িতেই বাইরে বাগানে আর রাত হলে বারন্দায় তালা মারা অবস্থায় পড়ে থাকে। নেই একা বাথরুমে যাওয়ার অধিকারও। পরনে ময়লা ছেঁড়াখোড়া গামছা, স্থির দৃষ্টিতে চেয়ে আছেন শূন্য়ে। বাকশক্তি নেই তাঁর।
রাজীবের বাবা আরও জানান, ছেলেকে নিয়ে গিয়েছেন এনআরএস আরজি করের মত হাসপাতালে, কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। কিন্তু রোগটা কী, কেনই বা চিকিৎসা জরুরি, প্রশ্ন করা হলে এড়িয়েই গিয়েছেন রাজকুমার হালদার। সমাজকর্মী ছন্দক বাইন ও সহেলী দাস গোটা ঘটনাকে নজরে এনেছেন। তাঁদের রাজীবের বাবা জানিয়েছেন, অনেকেই তাঁর দিকে সমবেদনার দৃষ্টিতে তাকায়। কেউ আবার কটাক্ষও করে। প্ৰশ্ন উঠেছে, মানুষ কতটা পিছিয়ে থাকলে এই পরিণতি হতে পারে একজন তরতাজা যুবকের? ঘটনার কথা পুলিশে জানান দিলে, পুলিশ গোটা বিষয়টা দেখে গিয়েছে. কিন্তু অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। শিকল খোলা হয়নি রাজীবের পায়ের। এই অবস্থায় রাজীবের দায় কে নেবে, কে জানাবে মানবাধিকার কমিশনকে?