এক লটারিতেই কোটিপতি হয়ে চমকে দিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরেরমেদিনীপুর সদর ব্লকের শিরোমনি এলাকার বাসিন্দা শিশির নন্দী। আর তারপরেই প্রাণ ভয়ে আশ্রয় নিলেন স্থানীয় থানায়।
লটারির নেশা(Lottery Addiction) রয়েছে কমবেশি বহু মানুষেরই। একদানেই বাজিমাত করার নেশায় নিঃস্ব হয়েছেন আরও কত মানুষ। আবার রাতারাতি লাখপপতি হয়ে গিয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম না। তবে এক লটারিতেই (lottery tickets) কোটিপতি হয়ে চমকে দিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের(West Midnapore) মেদিনীপুর সদর ব্লকের শিরোমনি এলাকার বাসিন্দা শিশির নন্দী। আর তারপরেই প্রাণ ভয়ে আশ্রয় নিলেন স্থানীয় থানায়। এদিকে পেশায় রাজমিস্ত্রির সহযোগী হিসাবে মজুরের কাজ করেন শিশির। সারাদিন কাজের শেষে সন্ধ্যের পর অবসর সময় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডার মাঝেই মাঝেমধ্যে লটারির টিকিট কিনতেন তিনি। শুক্রবার সন্ধ্যায় তার এই টিকিট কেনার নেশাই ভাগ্যের পরিবর্তন এনে দেয়।
শুক্রবার রাত আটটা নাগাদ পাড়ার লটারির দোকানে এসে শিশির জানতে পারে এক কোটি টাকার লটারি পড়েছে তারই টিকিটে। এই অপ্রত্যাশিত বিশাল অঙ্কের টাকা দেখে প্রথম বিশ্বাসই করতে পারেনি শিশির। পরিবারের লোকজনও আচমকা এই লক্ষ্মীলাভের কথা শুনে প্রথমে হতচকিত হয়ে যায়। সাড়া পড়ে যায় গোটা পাড়ায়। আর তাতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে শিশিরের পরিবার। প্রাণ ভয়ে দ্বারস্থ হন পুলিশের কাছে। পুলিশের কাছে খবর দিয়ে রাতেই সপরিবারে প্রতিবেশীদের সাহায্যে কোতোয়ালি থানায় হাজির হয়ে যান শিশির নন্দী। ছোট্ট দুই শিশু বাবা-মা ও প্রতিবেশীদের নিয়ে সারারাত থানার ভেতরেই আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন- ভাইরাল ব্যক্তিগত ছবি, প্রেমিকের ব্ল্যাক মেলিংয়ের জেরে আত্মঘাতী ছাত্রী
থানার ভেতর থেকেই এদিন বাবা শক্তি নন্দী বলেন, "এত টাকার হিসাব জানি না। কেউ কোনও ভাবে আক্রমণ করতে পারে সেই আশঙ্কায় পুলিশের সাহায্য নিয়ে থানায় রয়েছি। এবার হয়তো ভাগ্য বদলাচ্ছে। কোন জমি জায়গা নেই আমাদের। হয়তো এবার হাল ফিরবে। ভাবছি বিঘে চারেক জমি কিনে নিজেদের ছোট একটা বাড়ি বানাব।" এদিকে শিশিরের পরিবারের আচমকা এই ভাবে লক্ষ্মীলাভে খুশি প্রতিবেশীরাও। এই প্রসঙ্গে শিশিরের প্রতিবেশী টুলু হাজরা বলেন," এরা সকলেই খেটে খাওয়া দিনমজুর। এত টাকা পেয়ে যাওয়াতে সবাই ভয়ে রয়েছে। তাই এদেরকে সকলকে নিয়ে থানায় এসে রাত থেকে আশ্রয় নিয়েছি। পুলিশ নিরাপত্তা দিয়েছে। টিকিট থেকে টাকা পাকাপাকি ভাবে শিশিরের অ্যাকাউন্টে আসতে সমস্ত সহযোগিতা করবে বলে আশ্বাসও পেয়েছি পুলিশের কাছ থেকে।”
আরও পড়ুন- আইন বাতিলেই মিটছে না সমস্যা, কেন ফের নতুন করে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা
এদিকে লটারি প্রাপ্তি শিশিরের পরিবারে সুখের সময় নেমে এলেও, এই লটারির নেশাতেই বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে গিয়েছেন কত মানুষ। এমনকী একবার বড় অঙ্কের টাকা পেয়ে অতিরিক্ত লোভ সামলাতে না পেরে ফের লোভের সাগরে তলিয়ে গিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। তাই অতিরিক্ত লটারির নেশা থেকে সর্বদাই মানুষকে বিরত থাকতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে শিশিরের মতো দিন আনি দিন খাওয়া মানুষের পরিবারে লটারির জোরে সুখের সময় নেমে আসায় খুশি সকলেই।