ডাম্পিং গ্রাউন্ডে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় বহরমপুর শহরের নোংরা আবর্জনা বিভিন্ন সময় রাস্তার উপরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। স্থানীয় লিঙ্করোডের কয়েক হাজার বাসিন্দাকে তার খেসারত দিতে হয়
মুর্শিদাবাদে(Murshidabad) প্রথম কেএমডিএ-এর উদ্যোগে (project initiated by KMDA) আধুনিক মানের 'সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট' প্রকল্প (Solid Waste Management project)। মুর্শিদাবাদের সদর শহর বহরমপুরে দীর্ঘদিনের দাবি মেনে এই প্রথম কেএমডিএর যৌথ উদ্যোগে শহরের সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প শুরু করার উদ্যোগ নেওয়া হল। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কেএমডি এর উচ্চ আধিকারিকদের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের মধ্যে দিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ডাম্পিং গ্রাউন্ডে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় বহরমপুর শহরের নোংরা আবর্জনা বিভিন্ন সময় রাস্তার উপরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। স্থানীয় লিঙ্করোডের কয়েক হাজার বাসিন্দাকে তার খেসারত দিতে হয়। বর্ষার সময় শহরের চার-পাঁচটি ওয়ার্ডের বাসিন্দা সবচেয়ে বেশি নাজেহাল হন। তার জেরেই বহরমপুর শহরের সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়িত করার উদ্যোগ নিয়েছে কেএমডিএ।
এদিন থেকে শুরু হয় প্রস্তুতি। কলকাতা থেকে কে এম ডি এর বিশেষ প্রতিনিধি দল এ দিন এসে পৌঁছায় বহরমপুরে। ২০২৫সাল পর্যন্ত ধাপে ধাপে এই প্রকল্পের কাজ চলবে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের অন্যান্য শহরগুলিতেও এই প্রকল্পের জোর দেওয়া হয়েছে। যদিও শহরের বাসিন্দাদের দাবি, এর আগেও এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোনও কিছুই হয়নি। এমনকী শহরের ডাস্টবিনগুলি থেকেও সময়ে আবর্জনা তোলা হয় না।
পুরসভার কো-অর্ডিনেটর নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, এই প্রকল্পের কাজ বিভিন্ন ধাপে হবে। প্রথম পর্যায়ে সাড়ে সাত কোটি টাকা খরচ হবে। ডাম্পিং গ্রাউন্ড যাওয়ার আগেই জৈব ও অজৈব পদার্থগুলি আলাদা করা হবে। তার জন্য বিশেষ মেশিন বসানো হবে। জৈব পদার্থ থেকে সার তৈরি হবে। প্লাস্টিক সহ অন্যান্য অপচনশীল বস্তু নষ্ট করা হবে। প্রজেক্টের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ভবিষ্যতে প্রতিটি বাড়ি থেকে জৈব এবং অজৈব পদার্থ আলাদাভাবে সংগ্রহ করা হবে। কাজের রূপরেখা ইতিমধ্যেই তৈরি করা হয়েছে।
পুরসভা সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, শহরে জনবসতি আগের তুলনায় কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। নোংরা-আবর্জনাও বেড়েছে। সেই কারণেই ডাম্পিং গ্রাউন্ড জায়গা হচ্ছে না। অন্য আরেকটি এলাকায় আবর্জনা ফেলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে কাজপুরোটাই কেএমডিএ করবে। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদও প্লাস্টিক নষ্ট করার জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারা জেলা পরিষদ চত্বরে প্রায় ১৫লক্ষ টাকা খরচ করে বিশেষ মেশিন বসানোর পরিকল্পনা করেছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে প্লাস্টিক সংগ্রহ করে সেখানে আনা হবে।
শহরের বাসিন্দারা বলেন, বহরমপুর শহরের সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের কাজ অনেক আগেই করার দরকার ছিল। এই শহর অত্যন্ত সাজানো-গোছানো। কিন্তু আবর্জনার জন্য এখানকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বহরমপুর বিভিন্ন সমস্যা থেকেও মুক্তি পাবে।