স্বামী ছেড়ে গেছেন। নিজের ভরণপোষণের জন্য মাত্র ২০ দিনের কন্যাশিশুকে ১৫ হাজার টাকায় বাসন্তীতে বিক্রি করে দিল মা। যদিও বারুইপুর থানার পুলিসের তৎপরতায় বুধবার বিকেলে চুনাখালি থেকে উদ্ধার করা হয় ওই শিশুকে। গ্রেফতার করা হয়েছে, শিশুর মা পূজা সরদার সহ দুই রিসিভার বিশ্বদেব সরদার ও শর্মিষ্ঠা সরদারকে। ধৃতদের বৃহস্পতিবার বারুইপুর আদালতে তোলা হবে।
পুলিস সূত্রে খবর, সাত-আটমাস আগে বারুইপুরের কল্যাণপুর পঞ্চায়েতের পশ্চিম মাধবপুরের গৃহবধূ পূজা সরদারের স্বামীর সাথে বিচ্ছেদ হয়। তার শ্বশুরবাড়ি ছিল মন্দিরবাজারে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পূজা ২০ দিনের শিশু কন্যা প্রসব করলেও বেশ কিছুদিন ধরে শিশুর আওয়াজ পাচ্ছিলেন না তাঁরা। যদিও শিশু না থাকলেও পূজাকে দেখে অস্বাভাবিক লাগছিল না প্রতিবেশীদের। আর এর জেরেই তাদের মনে সন্ধেহ হয়। গ্রামের বাসিন্দারা বুধবার দুপুরে বারুইপুর থানায় এসে থানার আইসিকে সব জানান।
এরপরই পুলিস গৃহবধূ পূজা সরদারকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জেরায় পুলিস জানতে পারে, পূজা সরদার তার কল্যাণপুরের নিহাটার এক আত্মীয়র সূত্র ধরে নিজের ২০ দিনের শিশুকে বাসন্তিতে বিক্রি করেছে। এই খবর জানতে পেরেই এসআই গোপাল মন্ডলের নেতৃত্বে পুলিস অভিযুক্তকে নিয়েই বাসন্তির চুনাখালি বড়িয়াতে রওনা হয়। শিশু কেনার দায়ে বিশ্বদেব সরদার ও শর্মিষ্ঠা সরদারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা যায়, শিশুর ভরণপোষণের কথা ভেবেই নিজের ২০ দিনের শিশু ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিল পূজা। এই কাজে তাঁকে সাহায্য করেছিল পূজারই বাপের বাড়ির আত্মীয় উজ্জ্বলা বালা।
পুলিস জানতে পেরেছে,এই উজ্জ্বলা বালার খুড়তুতো দাদা হল বিশ্বদেব সরদার। এই বিশ্বদেব সরদারদের কোনও সন্তান ছিল না। পুলিসের কাছে পূজা স্বীকার করেছে, সে নিজে স্বামী পরিতক্তা, তার উপর তার সন্তানকে পালন করার জন্য কোনও টাকা তার কাছে ছিল না। নিজের ভরণ পোষণ চালাবার জন্য সে ২০ দিনের শিশুটিকে বিক্রি করেছিল।