সম্প্রীতির এক অনন্য নিদর্শন, হিন্দু মায়ের শবদেহ কাঁধে তুলে নিলেন আজিজুর-লালনরা

 

  • পূর্ব বর্ধমানের গলসি গড়ল সম্প্রীতির নিদর্শন
  • হিন্দু মায়ের শবদেহ কাঁধে তুলে নিল মুসলিম সন্তান
  • অন্তিম সংস্কারের যাবতীয় খরচ বহন
  • গত ৬ মাস ধরে চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন
     

Asianet News Bangla | Published : Dec 27, 2019 5:54 AM IST / Updated: Dec 27 2019, 11:30 AM IST


সম্প্রীতির নজির গড়ল পূর্ব বর্ধমানের গলসি। এখানকার গলিগ্রামের বাসিন্দা সরস্বতী দাস কয়েকমাস আগে মারণ ব্যাধিতে আক্রান্ত হন। গরীব দুঃস্থ পরিবারে চিঠকমত খাবার কেনার সামর্থ নেই, সেখানে চিকিৎসা করানো হয়ে উঠেছিল দায়। সরস্বতীর স্বামী ভৈরব দাস আগে পঞ্চায়েতে কাজ করলেও এখন কোনও কাজ নেই। মাঠে ঘাস কেটে সামান্য রোজগার করে কোনওরকমে চলছিল সংসার। স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে যেতে হত বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু গাড়ি করে সরস্বতীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার খরচ যোগানো অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। অসহায় পরিবারে অবস্থা দেখে পাসে এসে দাঁড়ান গ্রামের দুই মুসলিম যুবক আজিজুর রহমান ও লালন শেখ। 

আরও পড়ুন : কাজাখস্তানে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, বিমানবন্দরের কাছেই শতাধিক যাত্রী নিয়ে ভেঙে পড়ল বিমান

দীর্ঘ প্রায় ছ'মাস ধরে সরস্বতী দাসের চিকিৎসার খরত যোগাচ্ছিলেন আজিজুর ও লালন। কিন্তু সবচেষ্ট ব্যর্থ করে মারা যান সরস্বতী দেবী। মৃত্যুর খবর পেয়েই গলিগ্রামে ভৈরত দাসের বাড়িতে পৌঁছন দুই যুবক। ভেঙে পড়েন কান্নায। এরপর ধর্মীয় বিভেদ ভুলে প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের সঙ্গে সরস্বতী দেবীর দেহ কাঁঝে তুলে নেন আজিজুর ও লালন। শ্মশানযাত্রী হন তাঁরা। বহন করেন সরস্বতী দাসের সৎকারের সমস্ত খরচ। 

আরও পড়ুন : পড়তে চান 'ভূত বিদ্যা', সুযোগ দিচ্ছে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়

নিজের সন্তানের মতোই সবসময় পাশে ছিলেন আজিজুর ও লালন। ওঁয়ার আমার কাছে দেবতুল্য। স্ত্রীকে হারিয়ে কান্না ভেজানো গলায় বলতে ভুললেন না সরস্বতীদেবীর স্বামী ভৈরব দাস। জেঠিমার দুরবস্তা দেখার পর সমস্ত দায়িত নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন আজিজুল ও লালন, জালানে সরস্বতীদেবরী দেওরের ছেলে । 

আজিজুল ও লালনের ঋণ শোধ করার নয়। মুক্তকন্ঠে স্বীকার করছে সরস্বতীর পরিবার। কিন্তু এসব নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নন আজিজুর ও লালন। মানবিকতার জন্যই পাশে দাঁড়িয়েছিলাম বলেলন দুই যুবক। মানুষ হিসাবেই এই কাজ করেছেন জানালেন দু'জনে।
 

Share this article
click me!