জাওয়াদ নিয়ে যথেষ্ঠ তৎপর রয়েছে নবান্ন। বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত সেচ,বিদ্যুৎ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এছাড়াও খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম।
ধীরে ধীরে শক্তিক্ষয় হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের। রবিবার দুপুরেই তা পুরীর কাছে পৌঁছে যাবে বলে মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে। দুর্বল হয়ে তা নিম্নচাপে পরিণত হবে। তবে পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের কোনও প্রভাব পড়বে না। শুধু শনিবার রাত থেকে রবিবার বিকেল পর্যন্ত উপকূলের জেলাগুলিতে ঘণ্টায় ৪০ কিমি বেগে হওয়া বইবে। শনিবার রাত থেকে দক্ষিণবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভারী বৃষ্টি হবে। আর রবিবার দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি কলকাতা, দুই মেদিনীপুর ভারী বৃষ্টি হবে। তবে এই কয়েকটা দিন উত্তাল থাকবে সমুদ্র। সেই কারণে মৎস্যজীবীদের সোমবার পর্যন্ত সমুদ্রে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সোমবার বিকেল থেকে আকাশ পরিষ্কার হতে শুরু করবে। অবশ্য রাজ্যে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব না পড়লেও নাগরিকদের সুরক্ষায় কোনও রকম ফাঁক রাখতে চাইছে না প্রশাসন।
জাওয়াদ নিয়ে যথেষ্ঠ তৎপর রয়েছে নবান্ন (Nabanna)। বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত সেচ,বিদ্যুৎ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এছাড়াও খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম। তার মাধ্যমে গোটা বিষয়ের উপর নজর রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিব। পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার উপরে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। এই দুই জেলার বেশি সংখ্যক মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এখনও পর্যন্ত ১৪ হাজার ৩৭৫ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৪২টি ত্রাণ শিবির তৈরি করা হয়েছে। ১১৫টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
প্রস্তুত রয়েছে কলকাতা পুরসভাও। কলকাতার (Kolkata) সবকটি বাতিস্তম্ভ খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। কোথাও কোনও বিদ্যুতের তার খোলা রয়েছে কিনা বা ফিডার বক্স খোলা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কলকাতা পুরসভা, CESC এবং পুলিশকে নিয়ে একটি পর্যবেক্ষণ টিম তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই দলটি কলকাতায় সমন্বয় রেখে কাজ করে যাবতীয় ঝড় পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী কাজগুলি সারবে। ২৪ ঘণ্টা কলকাতা পুরসভায় রয়েছেন কর্মীরা। সেখানে বিশেষ কন্ট্রোল রুমও (Control Room) খোলা হয়েছে। নিকাশি পাম্পিং স্টেশনগুলিতে কোনওরকম পাম্প খারাপ হয়েছে কিনা তাও আগেভাগে দেখে নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুরসভার তরফে। প্রয়োজন হলে অতিরিক্ত পাম্পও যুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের কোনও প্রভাব পড়বে না। কিন্তু, তা সত্ত্বেও আগে থেকেই এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে রাজ্য সরকার। কলকাতার পাশাপাশি অন্য জেলাতেও সতর্কতামূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হয়েছে। দুর্যোগ আসার আগে উপকূলের জেলাগুলিতে চূড়ান্ত সতর্কতার ছবি ধরা পড়ছে। তিনদিন সমুদ্র ও নদীতে সবাইকে নামতে নিষেধ করা হয়েছে। এমনকী, মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।