Bankura: ছেলের অত্যাচারে ঘরছাড়া, কোর্টের নির্দেশে পুলিশি পাহারায় বাড়ি ফিরলেন অশীতিপর বৃদ্ধা

স্বামী গোপাল দত্তর ছিল গুড়ের ব্যবসা। ব্যবসার আয়ে স্বামী বাঁকুড়া শহরের পালিতবাগানে কিনেছিলেন মস্ত বাড়ি। চার মেয়ে ও ২ ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়ে বড় করেছিলেন শেফালি দত্ত। তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছিল আগেই।

Asianet News Bangla | Published : Nov 28, 2021 5:30 PM IST / Updated: Nov 29 2021, 01:10 AM IST

ছোট ছেলে (Son) ও পুত্রবধূর (Daughter-in-Law) অত্যাচার সয়ে মুখ বুজে ছিলেন বৃদ্ধা (Old Lady)। কিন্তু, বৃদ্ধার উপর অত্যাচারের সীমা ক্রমশ বেড়েই চলেছিল। একদিন ছোট ছেলে ও পুত্রবধূ তাঁকে বের করে দিয়েছিলেন বাড়ি থেকে। তখন মেয়ের (Daughter) বাড়িতে তাঁর আশ্রয় জুটেছিল। তারপর দীর্ঘ লড়াই। শেষে হাইকোর্টের (Kolkata High Court) নির্দেশে নিজের বাড়িতে ফিরলেন বাঁকুড়ার পালিতবাগান এলাকার অশীতিপর বৃদ্ধা শেফালি দত্ত। সুবিচার পেয়ে খুশি ৮৬ বছরের ওই বৃদ্ধা। 

স্বামী গোপাল দত্তর ছিল গুড়ের ব্যবসা। ব্যবসার আয়ে স্বামী বাঁকুড়া শহরের পালিতবাগানে কিনেছিলেন মস্ত বাড়ি। চার মেয়ে ও ২ ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়ে বড় করেছিলেন শেফালি দত্ত। তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছিল আগেই। অবিবাহিত এক মেয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। এরপর ১৯৯৪ সালে স্বামীর মৃত্যু হয়। মেয়ে ও স্বামীকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে যাওয়া শেফালি ভেবেছিলেন বাকি জীবনটা কোনও মতে কাটিয়ে দেবেন নিজের বাড়িতেই ছেলেদের কাছে। কিন্তু, আমরা যা ভাবি তা অনেক সময়ই হয় না।

২০০৫ সালে ছোট ছেলে প্রবীরের বিয়ের পর থেকে সংসারে নেমে আসে অশান্তি। শুরু হয় শেফালির উপর ছোট ছেলে ও বউমার অত্যাচার। বৃদ্ধার অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই ছোট ছেলে প্রবীর ও পুত্রবধূ শম্পা তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করতে শুরু করেছিলেন। বাঁকুড়া শহরের পালিতবাগানের বিশাল বাড়ি ও সম্পত্তি তাঁদের নামে লিখে দেওয়ার জন্য বৃদ্ধার উপর বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করছিলেন প্রবীর ও শম্পা। এদিকে বৃদ্ধা রাজি না হওয়ায় বাড়তে থাকে অত্যাচারের পরিমাণ। শেষ পর্যন্ত চলতি বছর ১৯ জুলাই মারধর করে বৃদ্ধা মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন প্রবীর। 

নিরুপায় হয়ে অশীতিপর বৃদ্ধা আশ্রয় নেন আসানসোলে মেজো মেয়ে সুজাতা নাগের বাড়িতে। সেখান থাকা অবস্থাতেই নিজের বাড়ি ফিরতে ও সুবিচার পেতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। চলতি মাসের ২৪ তারিখ হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বাঁকুড়া সদর থানার আইসিকে নির্দেশ দেন যে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার সঙ্গে ওই বৃদ্ধাকে যে তাঁর নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সেই নির্দেশ অনুযায়ী, আজ বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ ওই বৃদ্ধাকে বাঁকুড়া শহরের পালিতবাগানে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দেয়।

দীর্ঘ চারমাস পর নিজের বাড়িতে ফিরতে পেরে স্বাভাবিকভাবেই আবেগঘন হয়ে পড়েন বৃদ্ধা। বৃদ্ধাকে তাঁর বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে পেরে খুশি তাঁর আইনজীবীও। তবে অশীতিপর মায়ের তোলা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত প্রবীর দত্ত ও শম্পা দত্ত। 

Share this article
click me!