টাকা আদায় ও মাসোহারাই নেওয়ার শুধু নয়, বিভিন্ন সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করে অন্যত্র বিক্রিও করে দেওয়া হত। পুলিশ সেজে কীই না করেছে চারজন প্রতারক। অবশেষে তাদের গ্রেফতার করল দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থানার পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই চক্রের যে মূল পাণ্ডা, সে আবার আবগারি দপ্তরের প্রাক্তন আধিকারিকরা। ধৃতদের সকলেরই বাড়ি যাদবপুরে।
পুলিশ সেজে প্রতারণার চক্রের মূল পাণ্ডা শঙ্করপ্রসাদ নন্দী। সে একসময়ে আবগারি দপ্তরের আধিকারিক ছিল। তার শাগরেদ ছিল সুমন পোদ্দার, মিঠুন দে ও অরূপ মিত্র নামে আরও তিনজন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, গত জানুয়ারি মাস থেকে পুলিশ সেজে প্রতারণার কারবার চালাচ্ছিল ওই চারজন। প্রতারণার কারবার চলত বাইপাসের আশেপাশের এলাকায়। রোজ রাতেই বাইপাস লাগোয়া এলাকার জুয়া, সাট্টা-সহব বিভিন্ন ধরণের বেআইনি কারবার চলে। পুলিশ জানিয়েছে, যারা জুয়া, সাট্টা বা অন্যকোনও বেআইনি কারবারের সঙ্গে যুক্ত, পুলিশ সেজে তাদের কাজ থেকে টাকা আদায় করত শঙ্কপ্রসাদ ও তার সঙ্গীরা। এমনকী, নিয়মিত মাসোহারাও নিত তারা। এতেও অবশ্য ক্ষান্ত হয়নি প্রতারকরা। বিভিন্ন সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করে অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েও টাকা রোজগার করত 'নকল পুলিশ'রা। শেষপর্যন্ত গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার রাতে বাইপাসের ধারে ভিআইপি ধাবা থেকে অভিযুক্ত শঙ্করপ্রসাদ ও তার তিন সঙ্গীকেই গ্রেফতার করেছে সোনারপুর থানার পুলিশ।
কিন্তু এই প্রতারণার চক্রে হদিশ কীভাবে পেল পুলিশ? দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ রশিস মুনির খান জানিয়েছেন, দিন কয়েক আগে দুই লক্ষ টাকা না পেয়ে এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে যায় অভিযুক্তেরা। গোপন সূত্রে সেই খবর পান সোনারপুর থানার পুলিশ আধিকারিকরা। ধৃতদের কাছ নগদ ১৭ হাজার টাকা, ৫টি মোবাইল, গাঁজা, এমনকী একটি গাড়িও উদ্ধার করেছে তদন্তকারীরা।
কখনও বিমা কোম্পানির এজেন্ট, তো কখনও ব্যাঙ্ক কর্মী সেজে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতারকদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। দিন কয়েক আগেই উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুরে গ্রাহকদের সঙ্গে পাঁচ লক্ষ টাকার প্রতারণার করার অভিযোগ উঠেছিল রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের কর্মীর বিরুদ্ধে। বিমার টাকা ফেরত দেওয়ার নামে আবার খাস কলকাতায় প্রতারণার কারবার চলছিল। ঘটনায় ৩ জন মহিলা- সহ ষোলোজনকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগরের সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।