কন্যা সন্তানের জন্ম হলেই মিলবে সরকারি সাহায্য। রবিবার সকালে এমনই প্রলোভন দেখিয়ে বর্ধমানের অনাময় হাসপাতাল থেকে এক দম্পতির সদ্যোজাত শিশুকন্যাকে চুরি করা হয়। শেষ পর্যন্ত পুলিশের তৎপরতায় সোমবার দুর্গাপুরে মধুমিতা রায় নামে এক মহিলার কাছ থেকে উদ্ধার হয় চুরি যাওয়া শিশুকন্যাটি।
পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে জানতে পারে, ওই মহিলা সন্ধ্যাবেলা বাসে করে দুর্গাপুর আসছেন। কাঁকসা টোল প্লাজার কাছে ওই মহিলাকে পুলিশ শিশু সমেত একটি বাস থেকে আটক করে। কিন্তু প্রথমে হাসপাতালের কাগজপত্র দেখিয়ে পুলিশকে বোকা বানান ওই মহিলা। এর পরে সোমবার সকালে দুর্গাপুর থেকেই শিশু সমেত ওই মহিলা ও তার স্বামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন- টাকা পাইয়ে দেওয়ার ফাঁদ,মায়ের থেকে শিশু নিয়ে চম্পট মহিলা
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে বর্ধমানের রায়নার সিপটা উত্তরপাড়ার এলাকার বাসিন্দা রিমা মালিক গত শুক্রবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একটি শিশুকন্যার জন্ম দেন। রবিবার তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়। সেই সময় এক অপরিচিত মহিলা রিমাদেবী এবং তাঁর স্বামী সন্দীপ মালিকের কাছে যায়। ওই মহিলা তাঁদের বোঝায়, কন্যাসন্তানের জন্ম দিলেই সরকারের পক্ষ থেকে ৭ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তিনি ওই দম্পতির কাছে জানতে চান তাঁরা ওই টাকা পেয়েছেন কি না। এর পরই ওই অপরিচিত মহিলা দম্পতিকে বলেন টাকা পেতে গেলে অনাময় হাসপাতালে যেতে হবে। সরকারি সুবিধার কথা ভেবে অনাময় হাসপাতালে যেতে রাজি হন সন্দীপবাবু এবং রিমাদেবী। এর পর হাসপাতালে পৌঁছে ওই মহিলা রিমাদেবীর কাছ থেকে সদ্যোজাত শিশুকন্যাকে কোলে নিয়ে দম্পতিকে অপেক্ষা করতে বলে। এর পরেই শিশু সমেত উধাও হয়ে যায়।
অনেকটা সময় গড়িয়ে গেলেও ওই মহিলা শিশুটিকে নিয়ে না ফিরলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান ওই দম্পতি। তারা সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে দেখেন এক মহিলা শিশুকন্যাকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে। ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশের তরফে আশপাশের থানাগুলিকেও সতর্ক করা হয়। কাঁকসা থানার পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রবিবার সন্ধ্যায় পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাঁকসা টোল প্লাজার কাছে নিখোঁজ শিশুর সন্ধানে একটি সরকারি বাসে তল্লাশি চালায়। শিশুটি ওই বাস থাকলেও পুলিসকে বোকা বানাতে অভিযুক্ত মহিলা এবং তার স্বামী হাসপাতালের নথিপত্র দেখায়। পুলিশ সেই মূহুর্তে ওই অভিযুক্ত দম্পতিকে শিশু সহ ছেড়ে দেয়। কিন্তু পরে নিজেদের ভুল বুঝতে পারে কাঁকসা থানার পুলিশ।
এর পরে তদন্তে নেমে দুর্গাপুরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সত্যাজিৎ পল্লি এলাকা থেকে সোমবার ফের ওই অভিযুক্ত দম্পতিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছ চুরি যাওয়া শিশু কন্যাটিকে উদ্ধার করা হয়। অভিযুক্ত মহিলার অবশ্য দাবি, সে-ই ওই শিশুকন্যার জন্ম দিয়েছে।