বিধানসভায় মমতার 'অবাক করা' মন্তব্যে মোদীকে ছাড়, ঘুরিয়ে টার্গেট অমিত শাহকে


 দিল্লিতে মোদীর সঙ্গে বৈঠক করলেও এই রাজ্যে তিনি একাধিক সভায় প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেন। তিনি বলেন, দিল্লিতে নেতাজির স্ট্যাচু  উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থেকে রাজ্য়ে সুভাষচন্দ্র বসুকে শ্রদ্ধা জানান। আর সেই অনুষ্ঠানে কেন্দ্রের আমন্ত্রণ পদ্ধতির কড়া সমালোচনা করেন তিনি।

Saborni Mitra | Published : Sep 19, 2022 6:25 PM IST

জুলাই মাসে স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট গ্রেফতার করেছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁর ঘনিষ্ট সহযোগী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। তারপরই গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। স্কুল শিক্ষক দুর্নীতিণ্ডে তৃণমূল সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টা কমিটির প্রধানকেও গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই। তৃণমূল কংগ্রেস যখন একদিকে কেন্দ্রীয় সংস্থার সক্রিয়তা নিয়ে সরব হয়েছে, তখনই রাজ্য বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় রাজ্যে কেন্দ্রীয় সংস্থার অতিসক্রিয়া নিয়ে প্রধামমন্ত্রীকে ছাড় দিলেন। তিনি দাবি করেছেন বিজেপি নেতাদের জন্যই কেন্দ্রীয় সংস্থা সক্রিয়া হয়েছে। তিনি আরও দাবি করেছেন বিজেপি নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকদের ঘনিষ্টতা রয়েছে। 

যাইহোক মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের এই মন্তব্য বিরোধীরা সরব হয়েছে। রাজ্যে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সংস্থা সক্রিয়া হওয়ার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় গত ৫ অগাস্ট দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন। একান্তে তাঁরা কথা বলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন রাজ্যের পাওনাগণ্ডা নিয়েই কথা বলতে তিনি দিল্লি এসেছেন। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ ছিল রাজ্যের কেন্দ্রীয় সংস্থার সংক্রিয়তা সামাল দিতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করছেন মমতা। বাম আর কংগ্রেস এককাঠি সুর চড়িয়ে 'মমতা-মোদী সেটিং'এর তত্ত্বও প্রচার করেছিল। যা নিয়ে পরবর্তীকালে তীব্র সমালোচনা করেছিলেন মমতা। তিনি জানিয়েছিলেন রাজ্যে ১০০ দিনের কাজের টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার। একাধিক পাওনা আটকে রেখেছে- সেই জন্যই তাঁর দিল্লি যাত্রা। 

অন্যদিকে দিল্লিতে মোদীর সঙ্গে বৈঠক করলেও এই রাজ্যে তিনি একাধিক সভায় প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেন। তিনি বলেন, দিল্লিতে নেতাজির স্ট্যাচু  উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থেকে রাজ্য়ে সুভাষচন্দ্র বসুকে শ্রদ্ধা জানান। আর সেই অনুষ্ঠানে কেন্দ্রের আমন্ত্রণ পদ্ধতির কড়া সমালোচনা করেন তিনি। 

অন্যদিকে এই রাজ্যে ইডি-সিবিআই তৎপরতা নিয়েও প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেন। তাঁর কথায় কেন্দ্রীয় সরকারের অঙ্গুলি হেলনেই এই কাজ হচ্ছে। তবে এদিন সম্পূর্ণ ঘুরে গিয়ে মমতা বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন না রাজ্যে ইডি সিবিআই তৎপরতার পিছনে মোদীর হাত রয়েছেন। কার্যত তিনি অমিত শাহকে টার্গেট করেন। বলেন বর্তমানে সিবিআই প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অধীনে নেই। স্বারাষ্ট্রমন্ত্রকের দফতরের অধীনে রয়েছে। এই মন্তব্য করে কার্যত তিনি নাম না করে অমিত শাহকেই টার্গেট করেন। 

যাইহোক মোদী-মমতার রাজনৈতিক আক্রমণ এই রাজ্যে নতুন নয় দীর্ঘদিন পুরনো। বিধানসভা ভোটের সময় মোদী মমতাকে 'ও দিদি' বলে সম্বোধন করেন। যা ভালোভাবে নেয়নি তৃণমূল। পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসও মোদীর লম্বা দাঁড়ি নিয়ে আক্রমণ করেছিল। 

Share this article
click me!