পথচারী এক মহিলাকে বাঁচাতে গিয়ে ব্রেক ফেল করে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে উল্টে পড়ল পাথর বোঝাই একটি এলপি ট্রাক। রাস্তার পাশে বসে থাকা একই পরিবারের পাঁচ জন সদস্যের উপরেই পাল্টি খেয়ে বাঁধের নিচে গড়িয়ে পড়ল পাথর বোঝাই লরিটি। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় তিনজন।
পুজোর মুখে মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা। মৃত তিন এবং আহত দুই।শোকস্তব্ধ এলাকাবাসী। পথচারী এক মহিলাকে বাঁচাতে গিয়ে ব্রেক ফেল করে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে উল্টে পড়ল পাথর বোঝাই একটি এলপি ট্রাক। রাস্তার পাশে বসে থাকা একই পরিবারের পাঁচ জন সদস্যের উপরেই পাল্টি খেয়ে বাঁধের নিচে গড়িয়ে পড়ল পাথর বোঝাই লরিটি। মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় তিনজন। গুরুতর আহত হয় আরও দুইজন। মঙ্গলবার মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হরিশচন্দ্রপুর থানার দৌলতনগর গ্ৰাম পঞ্চায়েতের বটতলি গ্ৰামের ভালুকা দিল্লী দেওয়ানগঞ্জ রাজ্য সড়কে।
স্থানীয়দের উদ্যোগে শুরু হয় উদ্ধার কাজ।মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা আইসি দেওদূত গজমের এবং ভালুকা ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ঝোটন প্রসাদের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন চাঁচল মহকুমার পুলিশ আধিকারিক শুভেন্দু মন্ডল,হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লক বিডিও বিজয় গিরি।
মেশিন দিয়ে ট্রাকটিকে তোলার চেষ্টা করা হয়। দুর্ঘটনার জন্য বেপরোয়া গতিকে দায়ী করছেন এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয়দের অভিযোগ রাস্তা ছোট হওয়ার কারনে এই দূর্ঘটনা। এই ছোট রাস্তা দিয়ে বড় বড় লরি যাতায়াত করে। এদিন যে লরিটি দূর্ঘটনার মুখে পড়েছে সেটি বিহারের কাটিহার যাচ্ছিল।
আচমকা পাথর বোঝাই লরিটি রাস্তা ছাড়িয়ে পাশে খাদে গিয়ে একটি বাড়ির সামনে উল্টে যায়। সেখানে একটি গাছের নিচে বসেছিল দুই শিশু সহ ৫ জন। লরির নিচে চাপা পরে যায় তারা। উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্র নিয়ে গেলে তিন জনকে মৃত বলে ঘোষণা করে চিকিৎসকরা। মৃতের নাম লুসি মন্ডল(৫) লক্ষী মন্ডল (২৫) আরতি মন্ডল (৪৫)। বাকি এক শিশু সহ দুজনের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। এদের নাম নির্মলা মন্ডল (৪৫), প্রিয়াংশু মন্ডল(১)। ঘটনার পর লরি চালক পালিয়ে যায়। ঘটনার খবর পেয়েই ওই এলাকায় ছুটে যান এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী তাজিমুল হোসেন ও জেলা পরিষদের শিশু নারী ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ মর্জিনা খাতুন।সাথে ছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তোবারক হোসেন। পাশাপাশি সব রকম ভাবে পরিবারের পাশে থাকা আশ্বাস দিয়েছে মন্ত্রী তাজমুল হোসেন। অন্যদিকে স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরাতে ক্রেন দিয়ে উল্টে যাওয়া লরিটি উঠানোর চেষ্টা করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা শেখ তালেব বলেন, আমরা এসে দেখছি ট্রাক উল্টে আছে। তার নিচে চাপা পড়েছিল পাঁচজন। লরি ওভারলোড ছিল। স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর আলম বলেন, অত্যন্ত মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। এর আগেও বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। রাস্তা অত্যন্ত সংকীর্ণ থাকায় এরকম ঘটনা ঘটছে। আমরা দাবি জানাচ্ছি রাস্তা যাতে চওড়া করা হয়। আর প্রশাসন মৃতদের পাশে দাঁড়াক।
এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন বলেন, অত্যন্ত মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। তিনজন মারা গেছে এবং দুই জন আহত। আমরা সব রকম ভাবে পাশে আছি। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যে দুই লক্ষ টাকা দেওয়া হয় চেষ্টা করবো যাতে তারা পায়।
হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তবারক হোসেন চৌধুরী বলেন, আমরা একটি মিটিং এ ছিলাম খবর পাওয়া মাত্র ছুটে আসি। আমাদের মন্ত্রীও ছিলেন তিনি প্রথমে এসেছিলেন। চারজন মারা গেছে একজন শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। উদ্ধার কার্য চলছে পুলিশ উদ্ধার করছে এলাকাবাসীও সহযোগিতা করেছে। মন্ত্রী সমগ্র ঘটনা রাজ্য সরকারকে জানাবে অবশ্যই সরকার পাশে দাঁড়াবে।
পুজোর প্রাক্কালে এই ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকা জুড়ে। এলাকাবাসীর দাবি সরকার যাতে সব রকম এই পরিবারের পাশে দাড়ায়। সাথে রাস্তা তৈরী করার জোড়ালো দাবিও তুলেছে স্থানীয় মানুষজন। কারণ এই রাস্তায় দুর্ঘটনা এই প্রথম নয়। দুর্ঘটনার কারণ সহ সমগ্র ঘটনার তদন্ত করছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ।