নিয়ম মেনেই সরকারি লাইসেন্স নিয়ে মদের দোকানে খুলেছিলেন মালিক। গভীর রাতের মদের দোকানে তাণ্ডব চালাল দুষ্কৃতীরা। নৈশপ্রহরীকে খুন করে লুট করা হল নগদ টাকা ও কয়েক পেটি মদের বোতল। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে আসানসোলের হীরাপুরে। ঘটনার পর আর্থিক সাহায্যে দাবিতে মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখান মৃতের পরিবারের লোকেরা। পুলিশকে মৃতদেহ তুলতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
মৃতের নাম রবি ওরাঁও। বাড়ি আসানসোলের হীরাপুরে নতুনডিহি এলাকায়। সকালে ক্ষেতমজুরের কাজ করতেন রবি। রাতে নতুনডিহি এলাকায় একটি মদের দোকান পাহারা দিতেন। পরিবারের লোকেদের বক্তব্য, যবে থেকে ওই মদের দোকানটি খুলেছে, তবে থেকেই ওই দোকানের নৈশপ্রহরীর কাজ করছিলেন রবি। এলাকায় কারও সঙ্গেই তাঁর ঝগড়া বা বিবাদ ছিল না। ভালো মানুষ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। সোমবার সকালে মদের দোকানে বাইরে একটি খাটিয়া রবি ওরাঁও-কে মৃত অবস্থা পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাটি জানাজানি হতেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটবাস্থলে হাজির হন মৃতের পরিবারের লোকেরা। আর্থিক সাহায্যে মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এমনকী, পুলিশ যখন মৃতদেহটি উদ্ধার করতে যায়, তখন হীরাপুর থানার পুলিশকর্মীদেরও বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রায় ঘন্টা তিনেক ধরে চলে। শেষপর্যন্ত মদের দোকানে মালিকের কাছ দুই লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভ তুলে নেন মৃতের পরিবারের লোকেরা।
কিন্তু মদের দোকানের নৈশপ্রহরীকে কেন খুন করল দুষ্কৃতীরা? ওই মদের দোকান থেকে নগদ ৪৫ হাজার টাকা ও বিদেশ মদের বেশ কয়েকটি পেটি খোয়া গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, রাতে দোকানে লুটপাট করতেই এসেছিল দুষ্কৃতীরা। তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন নৈশপ্রহরী রবি ওরাঁও। সম্ভবত সেই কারণে খুন হতে হয়েছে তাঁকে।
এদিকে আসানসোলে হীরাপুর নতুনডিহির যে এলাকা মদের দোকানটি চলে, সেই এলাকাটি বেশ নির্জন। লোকজনের তেমন আনাগোনা নেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, রাতে ওই এলাকা দিয়ে ফেরার পথে প্রায় মদ্যপদের খপ্পরে পড়তে হয়। এমনকী, ওই মদের দোকানটিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্মও চলে বলে অভিযোগ। নৈশপ্রহরীকে খুন ও লুটপাঠের ঘটনার পর মদের দোকানটি বন্ধ করে দেওয়ারও দাবি তুলেছেন এলাকার মহিলারা।