অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে চাঁদে পাড়ি জমাতে চলেছে চন্দ্রযান-২। প্রথমে চন্দ্রযান-২ -এর উৎক্ষেপণের দিন ধার্য হয়েছিল ১৪ই জুলাই। সেই দিন চন্দ্রযান-২ উৎক্ষেপণের জন্য যখন গোটা দেশ অপেক্ষারত, ঠিক সেই সময়েই এক দরিদ্র মা-বাবা তাঁর ছেলের সাফল্যের অপেক্ষার সময় গুনছিলেন হুগলি জেলার শিবপুর গ্রামে।
অপেক্ষারত অবস্থাতেই কেটে যায় সারাটা রাত। আর তার পরেই খবর আসে কিছু যান্ত্রিক ত্রুটির ফলে স্থগিত হয়ে গিয়েছে চন্দ্রযান-২ -এর চন্দ্র-যাত্রা। এরপরেও আশা ছাড়েননি সেই দরিদ্র মা-বাবা। তাঁর ছেলের হাতেই যে সাফল্য পাবে চন্দ্রযান-২। সেটা তারা ধরেই নিয়েছিলেন। কারণ চন্দ্রযান- ২ প্রকল্পের ডেপুটি ডিরেক্টর তো তাঁদের সন্তান চন্দ্রকান্ত কুমার। পেশায় কৃষক মধুসূদন কুমার হুগলির গুড়াপের শিবপুরের বাসিন্দা। সেই পরিবারেরই বড় ছেলে চন্দ্রকান্ত কুমার। চন্দ্রযান-২ মিশনের ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর। তিনি স্যাটেলাইট সিস্টেমের ইনচার্জও যা চাঁদের রোভার এবং পৃথিবীতে মিশন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে একটি যোগাযোগ নিশ্চিত করার পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর আগে চন্দ্রযান-১ অভিযানেও একটি অ্যান্টেনা বানিয়েছিলেন চন্দ্রকান্ত।
দরিদ্র কৃষক পরিবার থেকে উঠে আসা চন্দ্রকান্ত ২০০১ সালে ইসরো তে যোগদান করেন। তারপরে কেটে গিয়েছে দীর্ঘ ১৮ টা বছর। এই ১৮ বছরে ছেলে ঠিক কী কী করছে তাও সঠিক ভাবে জানতেন না বাবা মধুসূদন। শুধু জানতেন ছেলে বৈজ্ঞানিক। দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা এই চন্দ্রকান্তর ভাই শশিকান্তও বর্তমানে ইসরো-তে কাজ করছেন।
মধুসূদনবাবুর কথায় ছেলে চন্দ্রকান্ত কিছুদিন আগেই বাড়ি থেকে ঘুরে গিয়েছে তাও জানতে দেননি কোন কিছুই। তার কিছুদিন পরেই খবর দেন তাঁদের আবিষ্কৃত চন্দ্রযান-২ চাঁদের পথে পাড়ি দিতে চলেছে। এই সংবাদ শোনার পর থেকেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে মা-বাবার মন। এর পরে আসতে শুরু করে শুভেচ্ছা বার্তা। তার পর থেকেই অপেক্ষা শুরু হয় চন্দ্রযান-২ উৎক্ষেপণের। কিন্তু কিছু যান্ত্রিক ত্রুটির ফলে চন্দ্রযান-২ -এর চন্দ্র যাত্রা তখনকার জন্য বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু মধুসূদন বাবুর কথায় সেই দিন যদি ওই চন্দ্রাযান-২ চাঁদের উদ্দশ্যে যাত্রা করত তবে তা সফল হত না। কিন্তু তা হয়নি। তখন যাত্রা না করতে পারলেও সমস্ত যান্ত্রিক ত্রুটি কাটিয়ে চন্দ্রযান-২ -এর এই যাত্রা সফল হবে এমনটাই আশা করছেন মধুসূদনবাবু।