তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে শুভেন্দু অধিকারী
তবে তাঁর বাবা ও দুই ভাই এখনও দলেই
কঁথির জনসভায় তাঁরা না থেকেও উপস্থিত থাকলেন
শুভেন্দু ছোঁড়া পরিবারতনত্রের শেল তার দিকেই ফিরিয়ে দিল তৃণমূল
তৃণমূল ছেড়ে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর, বুধবার, পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি-তে প্রথম সভা করল তৃণমূল কংগ্রেস। সৌগত রায় এবং ফিরহাদ হাকিম ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলার প্রায় সব নেতাই। শুধু দেখা মেলেনি অধিকারী পরিবারের কারোর। শুভেন্দু অধিকারী গেরুয়া শিবিরে ঢুকে গেলেও, তাঁর বাবা সাংসদ শিশির অধিকারী, বিধায়ক ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী ও কন্টাই পুরসভার প্রধান সৌমেন্দু অধিকারীরা- এখনও তৃণমূলেই রয়েছেন। সভায় না আসলেও, সভামঞ্চে অনেকবারই আলোচিত হল তাঁদের কথা। পরিবারতন্ত্রের আক্রমণ শুভেন্দুকেই ফিরিয়ে দিল তৃণমূল।
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ই যে তাঁর সবচেয়ে বড গাত্রদাহ, তা বিজেপির জার্সিতে প্রথম সভাতেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন শুভেন্দু। বিজেপি নেতাদের সুরে সুর মিলিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে তুলছেন পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ। এদিনের সভায় সেই পরিবারতন্ত্রের আক্রমণই তাঁর দিকে ফিরিয়ে দিলেন সৌগত রায় ও ফিরহাদ হাকিম। শুরুটা করেন তৃণমূলের বিশিষ্ট সাংসদই। কাঁথির কর্মসূচিতে মানুষের ভিড় দেখে উচ্ছ্বসিত সৌগত বলেন, মানুষের ভিড় বলে দিচ্ছে 'কাঁথি কোনও পরিবারের জমিদারি নয়'।
এরপর এই বিষয়ে তীব্র আক্রমণ শানান রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। প্রসঙ্গত দল ছাড়ার আগে থেকেই তাঁর সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর বাকযুদ্ধ চলছিল। ফিরহাদ সম্পর্কে শুভেন্দু মন্তব্য করেছিলেন, ফিরহাদের মতো লিফটে নয়, সংগ্রাম করে পার্টির নেতা হয়েছেন তিনি। এদিন শুভেন্দুর গড়ে দাঁড়িয়েই তার জবাব দেন ফিরহাদ। বলেন, লিফটে করে তিনি নন, শুভেন্দুই নেতা হয়েছেন। বরং তিনিই সিঁড়ি দিয়ে উঠেছেন। আন্দোলন করে আজকের জায়গায় পৌঁছেছেন। ফিরহাদের দাবি তরুণ ছাত্রনেতা থেকে শুভেন্দুকে তুলে এনে মমতা বন্দ্যো বিধানসভার টিকিট কিংবা পরবর্তীকালে লোকসভা নির্বাচনের টিকিট দিয়েছিলেন তিনি শিশির অধিকারীর ছেলে বলেই। নাহলে আজ তাঁকে খুঁজে পাওয়া যেত না।
অন্যদিকে ফিরহাদ জানান, তাঁর বাবা কোনওদিন রাজনীতি করতেন না। তিনি ববার পরিচয়ে নেতা হননি। এদিনের সভা থেকে বিজেপি-র বিরুদ্ধেও পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ আনেন তৃণমূল মন্ত্রী। সভামঞ্চ থেকে, বিজেপি-তে আজ প্রতিষ্টিত খ্যাতনামা নেতাদের সন্তানদের নাম উল্লেখ করেন তিনি। এমনকী অমিত শাহ-র ছেলে জয় শাহ কোনও বড় ক্রিকেটার কিংবা ভাষ্যকার না হয়েও কীভাবে বিসিসিআই-এর সেক্রেটারি কীভাবে হলেন, সেই প্রশ্নও তোলেন।
শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি-তে যোগ দিলেও তাঁর পরিবারের অন্য তিন রাজনীতিবিদ কী করবেন, সেই নিয়ে জল্পনা জরি রয়েছে। তাঁর বাবা তথা কাঁথির তৃণমূল সাংসদ, শিশির অধিকারী শরীর খারাপের দোহাই দিয়ে মুখ বন্ধ রেখেছেন। কিছু জানাননি ছোটভাই, কন্টাই পুরসভার প্রধান সৌমেন্দু অধিকারীও দলত্যাগ কিংবা বিজেপি-তে যোগদানের বিষয়ে কিছু জানাননি। তবে, শুভেন্দু অধিকারীর মেজভাই, তমলুকের বিধায়ক দিব্যেন্দু অধিকরী দিন তিনেক আগেই বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শেই তিনি তৃণমূল করেন। তই তিনি তৃণমূলেই আছেন, আগামীদিনেও থাকবেন। তবে এদিনের সভায় তাঁদের অনুপস্থিতি নিয়ে নতুন করে জল্পনা বৃদ্ধি পেয়েছে।