আর্থিক অনটন লেগেই ছিল পরিবারে। আর তাই পেটের টানে ফুল বিক্রি করতে পুরুলিয়া থেকে সুদূর পটনায় পাড়ি দিয়েছিলেন। কিন্তু, সেখানে বজ্রাঘাতে মৃত্যু হল পুরুলিয়ার বলরামপুর থানার বানজারা সম্প্রদায়ের চারজনের। তাদের নাম যমুনা সিং(৪৫),কানাইয়া সিং (১৮),কৌশল দেবী (৩৫),সরস্বতী দেবী (১০)। এছাড়া এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দু'জন।
করোনা পরিস্থিতির জেরে রাজ্যে জারি রয়েছে কড়া বিধিনিষেধ। এদিকে এই পরিস্থিতিতে কাজ হারিয়েছেন অনেকেই। এছাড়া বন্ধ রয়েছে অনেক কাজই। তাই করোনা পরিস্থিতির জেরে আর্থিক অনটনের মুখোমুখি হয়েছিলেন পুরুলিয়ার বানজারা সম্প্রদায়ের বাসিন্দারাও। আর সেই কারণেই পটনায় গিয়ে ফুল বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন কয়েকজন। সেই মতো কয়েকদিন আগেই চারজন বলরামপুর থেকে ট্রেনে করে পটনার ফতুয়া এলাকায় যান ফুল বিক্রি করতে।
এদিকে শুক্রবার ফতুয়ায় মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। সেই সময় স্টেশনের কাছেই অবস্থিত একটি গাছের তলায় আশ্রয় নিয়েছিলেন ওই চারজন। তাঁদের সঙ্গে আরও দু'জনও ওই গাছতলায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। ঠিক সেই সময় ওই গাছের উপর একটি বাজ পড়ে। আর তার ফলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় চারজন। আহত আরও দু'জন।
এরপর আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন সেখানেই চিকিৎসাধীন তাঁরা। আর মৃতদেহগুলিকে স্থানীয় নালন্দা মেডিকেল কলেজ হসপিটালে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে পটনায় পৌঁছান মৃতদের পরিবারের সদস্যরা। ময়নাতদন্তের পর দেহগুলি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
দুটি অ্যাম্বুলেন্সে করে দেহগুলি আজ বলরামপুর পাঁড়কিডি এলাকায় নিয়ে আসা হয়। কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃতদের পরিবারের সদস্যরা। এরপর নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে মৃতদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। এই ঘটনার ফলে শোকেরছায়া নেমে এসেছে পাঁড়কিডির বানজারা বস্তি এলাকায়।
কয়েকদিন আগেই বজ্র-বিদ্যুৎ সহ প্রাকবর্ষার বৃষ্টি নেমেছিল কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায়। ঝোড়ো হাওয়া আর বৃষ্টির সঙ্গে ঘন ঘন পড়ছিল। আর বজ্রপাতে ছয় জেলায় মোট২৭ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে হুগলিতে ১১, মুর্শিদাবাদে ন'জন প্রাণ হারান। এছাড়া বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর মিলিয়ে মোট সাতজনের মৃত্যু হয়।