ভুতে ধরেছে! এই আশঙ্কাতে ওঝা ও গুনিনকে দিয়ে রাতভর চলল ঝাঁড়-ফুক। মধ্যযুগীয় কুংস্কারের বলি দুই শিশু, গুরুতর অসুস্থ আরও দু'জন। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের গাজোলে। এদিকে এই ঘটনা পরেও হুঁশ ফেরেনি স্থানীয় বাসিন্দাদের। বরং আতঙ্ক গ্রাস করেছে তাঁদের। ভূতের ভয়ে অনেকে বাড়ি থেকে বেরোতেও ভয় পাচ্ছেন!
মারা গিয়েছে সফিকুল আলম ও ফিরোজ রহমান। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি কোহিনুর খাতুন ও শাবনুর খাতুন। এদের সকলেই বাড়ির গাজোলের আলাল পঞ্চায়েতে কদমতলী গ্রামে। প্রাথমিক তদন্তে জানা দিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে বাড়ির কাছেই জঙ্গলে খেলা করছিল ওই চারজন শিশু। সন্ধেবেলা বাড়ি ফিরে জ্ঞান হারায় তারা। পরিবারের লোকেদের দাবি, তাদের মুখ থেকে নাকি গ্যাঁজলাও বেরোচ্ছিল! ঘটনাটি জানাজানিতে হতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে আশঙ্কা জাগে, সফিকুল, ফিরোজ, কোহিনূর ও শাবনুকে ভূতে ধরেছে। শিশুদের নিয়ে যাওয়া হয় গুনিন ও ওঝাদের কাছে। রাতভর চলে ঝাঁড়ফুক। শনিবার ভোরে যখন শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে, তখন ওই চারজন শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন পরিবারের লোকেরা। মালদহ মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যায় সফিকুল। বাকি তিনজনকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। ভর্তি হওয়ার কিছুক্ষণ পর মৃত্যু হয় ফিরোজেরও। কোহিনূর ও শাবনুর চিকিৎসা চলছে। তবে তাদের শারীরিক অবস্থা গুরুতর বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ট্রেনে কাটা পড়েছে হাত, জখম বৃদ্ধার দিকে ফিরেও তাকালেন না যাত্রীরা
শনিবার সকালে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে অসু্স্থ শিশুদের দেখতে আসেন গাজোলের তৃণমূল বিধায়ক দীপালি বিশ্বাস। পরিবারে লোকেদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতন করতে কদমতলী গ্রামেও যান বিধায়ক। কিন্তু ঠিক কী কারণে হঠাৎ করে দু'জন শিশুর মৃত্যু হল? তা এখনও স্পষ্ট নয়। দু'জনের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনায় হতবাক সকলেই।