কাজের সুবাদে থাকতেন সৌদি আরবেই। হাজি হতে চেয়েছিলেন নদিয়ার দুই যুবক। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল! মদিনা থেকে মক্কার যাওয়ার পথে পথ দুর্ঘটনায় মারা গেলেন দু'জনই। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে শান্তিপুরে।
শান্তিপুর শহরের মালঞ্চ এলাকার বাসিন্দা হাকিম আলি। বছর দুয়েক আগে শপিং মলে কাজ করতে সৌদি আরবে যান তিনি। মাস আটেক বাদে আরবে কাজ করতে যান মঙ্গল আহমেদ নামে আরও এক যুবক। তাঁর বাড়িও শান্তিপুরের মালঞ্চ এলাকায়ই। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, কালীপুজো বাড়ি দু'জনের একসঙ্গেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল। বাড়ি ফেরার আগে হজে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন হাকিম ও মঙ্গল। মুসলিমদের কাছে সৌদি আরবের মক্কা অত্যন্ত পবিত্র শহর, তীর্থস্থান। যাঁরা মক্কায় তীর্থ করতে যান, তাঁদের হাজি উপাধি দেওয়া হয়। শান্তিপুরের ওই দুই যুবকও তেমনটাই চেয়েছিলেন। কিন্তু তীর্থ করা তো দুর, মক্কায় পৌঁছতেই পারলেন না তাঁরা। মাঝপথে বাস দুর্ঘটনায় মারা গেলেন কাশিম ও মঙ্গল।
পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, গত ১৬ অক্টোবর মদিনা থেকে মক্কা যাওয়ার জন্য বাসে উঠেছিলেন কাশিম মঙ্গল। বাসের উঠার আগে ফোনে বাড়ির লোকেরা সঙ্গে কথাও বলেছিলেন তাঁরা। কিন্তু তারপর থেকে কাশিম ও মঙ্গলের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষপর্যন্ত সৌদি আরবে কর্মরত তাঁদের বন্ধুদের ফোন করে পরিবারের লোকেরা। জানা যায়, মদিনা থেকে যে বাসে চেপে মক্কা যাচ্ছিলেন কাশিম ও মঙ্গল, মাঝপথে সেই বাসটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। বাসটিতে আগুন লেগে যায়। আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছে ওই দুই যুবক। ঘটনার আকস্মিকতায় শোকের দিশেহারা হয়ে গিয়েছে কাশিম আলি ও মঙ্গল আহমেদের পরিবারের লোকেরা। সরকারের কাছে দেহ দেশে ফিরিয়ে আনার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
সবার আর্থিক সামর্থ্য থাকে না বা সুযোগ হয় না। তবে জীবনে অন্তত একবার মক্কা হজ করতে যাওয়াটা ধর্মীয় কর্তব্য বলে বলে মনে করেন মুসলিমরা। বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এ রাজ্যে থেকে সৌদি আরবের মক্কা হজ করতে বহু ইসলাম ধর্মালম্বী মানুষ। হজযাত্রীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয় রাজ্য সরকার।