বুথ স্তরের অফিসারদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। একদল অফিসারকে দিল্লি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়েছে বিশেষ প্রশিক্ষণের জন্য। সূত্রের খবর এই প্রশিক্ষণে বিএলওদের স্পষ্ট করেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা নির্বাচন কমিশনের অধীনে কাজ করেন।
বছর ঘুরলেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে তৎপরতা তুঙ্গে। অন্যদিকে ঘর গুছাতে শুরু করে দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যেই বুথ স্তরের অফিসারদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। একদল অফিসারকে দিল্লি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়েছে বিশেষ প্রশিক্ষণের জন্য। সূত্রের খবর এই প্রশিক্ষণে বিএলওদের স্পষ্ট করেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা নির্বাচন কমিশনের অধীনে কাজ করেন। প্রশিক্ষণেই জোর দেওয়া হয়েছে ভোটার লিস্টের নিবিড় সমীক্ষা বা স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা SIR এর ওপর। বিহারে যে পদ্ধতিতে ভোটার তালিকা সংশোধন করা হয়েছে সেই প্রক্রিয়াতেই কি বাংলার ভোটার তালিকা নিয়ে কাজ করা হবে? নির্বাচন কমিশনের গতিবিধিতে তেই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে।
26
চাপে BLO-রা
বিএলওদের দেওয়া নির্দেশিকায় কমিশন স্পষ্ট করে দিয়েছে তাদের কাজ করতে হবে কমিশনের অধীনেই। কোনও রকম পক্ষপাত করতে তারা পারবে না। কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের কথা অগ্রাহ্য করলে হতে পারে জেল ও জরিমানা। কতদিনের জেল বা কত টাকার জরিমানা হতে পারে তাও কমিশনের নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূমের জনসভা থেকে বিএলওদের স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিএলও-রা এই রাজ্যেই কর্মী- তা যেন তারা মনে রাখেন। ভোটাদের যেন কোনও ভাবেই হেনস্থা না করেন। সবমিলিয়ে নির্বাচন ইস্যুতে বিএলওদের ওপর চাপ ক্রমশই বাড়ছে। নির্বাচন কমিশন যে প্রক্রিয়ায় বিএলওদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে তেমন প্রশিক্ষণ এর আগে কখনও দেয়নি কমিশন। কমিশন সূত্রের খবর রাজ্যে যদি ভোটার তালিকা সংশোধন হয় তাহলে এই প্রশিক্ষণ প্রয়োজন হবে। কমিশনের কাজ ত্রুটিপূর্ণ ও দ্রুত করা যাবে। সমীক্ষার নির্দেশিকাগুলি হলঃ
36
বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা
SIR কার্যকর করতে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে বিএলওদের। কোনও বাড়ির কতজন সদস্য, কে মৃত, কে অন্যত্র থাকেন- নথি সংগ্রহ করতে হবে। প্রত্যেক বাড়িতে দিতে হবে SIR সংক্রান্ত ফর্ম। নির্দিষ্ট সময়ের পরে সেই ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে। তা নির্বাচন কমিশনে জমা করতে হবে।
যদি কোনও বাড়ি সমীক্ষার সময় তালাবন্ধ অবস্থায় থাকে তাহলে কী করবেন বিএলওরা? নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে বলা রয়েছে তালা বন্ধ বাড়িতে ফর্ম দিতে হবে। বাড়ির কোনও একজন বাসিন্দার ফোন নম্বর সংগ্রহ করে বিষয়টি জানাতে হবে। পরিবারের সদস্যদের থেকে সময় নিয়ে সেই ফর্ম কী করে পুরণ করতে হবে তা বুঝিয়ে দিতে হবে। কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী তালা বন্ধ থাকা বাড়িতে একাধিকবার যেতে হবে।
56
প্রয়োজনীয় নথি
বিহারের SIRএর জন্য ১১টি নথি নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই রাজ্যের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত কোনও নথির উল্লেখ করা হয়নি প্রশিক্ষণ নির্দেশিকায়। তবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বিএলওদের যে ভোটার তালিকা সংশোধনের ক্ষেত্রে মিলিয়ে দেখার জন্য একাধিক নথি থাকবে। যে কোনও একটি নথি মিলে গেলেই তালিকায় নাম তোলা যাবে। বিএলওদের জন্য একটি অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। সেটির ডাউনলোড করতে বলা হয়েছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে বিএলওরা দের ভোটার কার্ড ও আধার কার্ড সংযুক্ত করে দিতে হবে।
66
নজির ম্যাপ
পুর নিগম বা পুরসভা এলাকার বাড়ির হোল্ডিং নম্বর থাকলেও পঞ্চায়েত এলাকায় অনেক ক্ষেত্রেই বাড়ির ফোন নম্বর থাকে না। SIRপ্রক্রিয়ার জন্য বাড়ির নম্বর দিয়েই মানচিত্র তৈরি করতে হবে। কমিশন এটিকে বলছে নজির ম্যাপ। দুটি বুথ নিয়ে একটি গ্রামপঞ্চায়ের আসন। এক্ষেত্রে দুটি বুথের জন্য দুটি পৃথক ম্যাপ তৈরি করতে হবে বিএলওদের। এর জন্য স্থানীয় প্রবীণদের সাহায্য নিতে পারবেন বিএলওরা। তবে তার জন্য একটি গোষ্ঠী তৈরি করতে হবে।