তিনি গলা মিলিয়েছিলেন 'জাস্টিস ফর আর জি কর' স্লোগানে। নির্যাতিতার সুবিচারের দাবিতে রাস্তায় নেমে মিছিল করেছিলেন। সেই প্রতিবাদী তরুণীকেই হতে হল গণধর্ষিতা। আর আশ্চর্যের বিষয় হল তাঁকে যারা ধর্ষণ করল, সেই যুবকরাও সামিল হয়েছিল আরজি করের প্রতিবাদে!
গলা মিলিয়েছিলেন তাঁরা। সেই প্রতিবাদ কর্মসূচিতেই আলাপ, পরিচয়। এর পর ফেসবুকে বন্ধুত্ব। বাড়ছিল ঘনিষ্ঠতা।
আর তার পর সেই 'সংগ্রামী সঙ্গী'র ফাঁদে পড়লেন বছর উনিশের তরুণী। মদ্যপ অবস্থায় ওই তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়াল খড়দহ এলাকায়।
তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে খড়দহ থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম অর্ঘ্য দাস, শুভম ধর। দুজনেরই বেলঘরিয়া বাসিন্দা। নির্যাতিতার বাড়ি খড়দহ থানার এমএস মুখার্জি রোড এলাকায়।
সূত্রের খবর, মাস খানেক আগে সোদপুর ট্রাফিক মোড়ে আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডে ন্যায়বিচার চেয়ে প্রতিবাদে নেমেছিলেন খড়দহের ওই তরুণী।
সেখানেই তাঁর সঙ্গে শুভম নামে যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয়। গলা মিলিয়ে সেই রাতে ‘জাস্টিস ফর আর জি কর’ স্লোগানও তুলেছিলেন। এর পর ফেসবুকে দুজনের বন্ধুত্ব হয়। সোশাল মিডিয়ায় কথোপকথনে দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে।
সেই সূত্রে শনিবার রাতে বন্ধু অর্ঘ্য দাসকে সঙ্গে নিয়ে তরুণীর খড়দহের বাড়িতে যায় শুভম। অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থায় দুজনে তরুণীকে ধর্ষণ করে ভিডিও করে।
সেই ভিডিও দেখিয়ে পরে নির্যাতিতাকে ব্ল্যাকমেল করা হয় বলেও অভিযোগ। এসব ঘটনার পর ভয় উপেক্ষা নির্যাতিতা রবিবার খড়দহ থানার অভিযোগ দায়ের করেন ওই তরুণী।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় দুজনকে। সোমবার ধৃতদের বারাকপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
নির্যাতিতার মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়েছে খড়দহের বলরাম সেবা মন্দির হাসপাতালে।
এই হাসপাতালের চিকিৎসক কৌশিক রায় জানিয়েছেন, ”সমাজের পরিবর্তনও আমাদের আন্দোলনের একটা অংশ। তবুও এই রকম জঘন্য ঘটনা থামছে না। এদিনও একটি কেসের মেডিক্যাল করলাম। মানুষের বিবেক জাগ্রত হওয়ার প্রয়োজন আছে।”