
PM Modi On TMC: বছর ঘুরলেই ছাব্বিশের নির্বাচন। তার আগে শুক্রবার বঙ্গ সফরে এসে দুর্গাপুরের জনসভা থেকে বাংলার শাসক শিবির তথা তৃণমূল কংগ্রেসকে আরও একবার একাধিক ইস্যুতে তুলোধনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi News)। আসন্ন ভোটে যে গেরুয়া শিবির যে তৃণমূল কংগ্রেসকে একচুলও জায়গা ছাড়বে না এদিনের সভা থেকে সেই কথায় ঠারেঠারে বোঝালেন প্রধানমন্ত্রী। মুখ খুললেন বাংলার সাম্প্রতিক অশান্তি, অরাজকতা নিয়ে।
সম্প্রতি কসবা ল কলেজে যে গণধর্ষনের ঘটনা ঘটেছে তা নিয়েও সরব হন মোদী। বাংলায় নারী ও মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে রীতিমত আক্রমণ শানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ''ভাবুন একবার যেখানে মুর্শিদাবাদের মত দাঙ্গা, ছোট ঘটনায় হিংসা হয় আর পুলিশ একটি পক্ষের হয়ে কাজ করে, যেখানে ন্যায়ের কোনও আশা না থাকলে সেখানে কিভাবে বিনিয়োগ সম্ভব। এখানে রাজ্য সরকার মানুষের প্রাণ এবং দোকানের সুরক্ষা দিতে পারে না। তাই বিনিয়োগকারীরা চিন্তিত।''
‘’আমি জানি, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি দেখে কোনও শিল্পপতি এখানে বিনিয়োগ করতে চাইলেও তাঁরা যখন দেখেন এখানে কিভাবে সিন্ডিকেট হয়, তৃণমূল তোলা তোলে, ধমক দেয়, ভাংচুর করে তখন তারাও ভয়ে চলে যায়। তৃণমূলের গুণ্ডা ট্যাক্স বাংলায় বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি করছে। এখানে সরকার শুধু নিজেদের নেতাদের খোলাখুলি দুর্নীতির অনুমতি দিয়ে রেখেছে। তাই বহু সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে চলে গেছে। তাই এখানে যুব সম্প্রদায় এগিয়ে যেতে পারছে না, রাজ্যের বেহাল দশা। তাই আজ সবাই বলছে তৃণমূল হাটাও বাংলা বাঁচাও।''
তিনি আরও বলেন, ''তৃণমূলের মা মাটি মানুষের সরকারে বাংলার মেয়েদের সঙ্গে যে অন্যায় হচ্ছে যেখানে হৃদয় ভারাক্রান্ত হয় এবং প্রবল রাগ ও হয়। যা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে তা খুব চিন্তার। প্রাইমারি এডুকেশন হোক বা উচ্চশিক্ষা হোক সব জায়গায় একই অবস্থা। হাজার হাজার শিক্ষকদের চাকরি গিয়েছে। এর কারণ হল একমাত্র তৃণমূলের দুর্নীতি। এর ফলে চাকরিহারা পরিবারগুলোতে সমস্যা তো হচ্ছেই পাশাপশি পড়ুয়াদের ভবিষ্যত অন্ধকারে। পরিস্থিতি এমন যে কোর্ট ও বলছে এটা সিস্টেমেটিক দুর্নীতি। তৃণমূল বাংলার বর্তমান এবং ভবিষ্যত উভয়কেই সংকটে ফেলে দিয়েছে।''
তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়া করে একই সঙ্গে আরও বলেন, ‘’পশ্চিমবঙ্গের হাসপাতাল সুরক্ষিত নয়। আপনারা দেখেছেন মহিলা ডাক্তারের উপর অত্যাচার হওয়ার পর তৃণমূল কিভাবে অপরাধীদের আড়াল করতে উঠে পড়ে লেগেছিল। এই ঘটনার পর পরই দেখা গেল তৃণমূলের এক সদস্য এক বোনের উপর অত্যাচার করল। তৃণমূলের বড় নেতা, মন্ত্রী তাকে বাঁচাতে চাইছিল। এরকম বহু উদাহরণ রয়েছে। এই নির্মমতা থেকে বাংলাকে মুক্ত করতে হবে।''
শুধু তাই নয়, পশ্চিমবঙ্গে কেন বিজেপি সরকার দরকার? তার একাধিক কারণ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ''পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সরকার দরকার। কারণ, দিল্লি থেকে পাঠানো প্রতিটি টাকা যাতে আপনারা পান। গরিব কল্যাণ, আদিবাসী কল্যাণের টাকা পুরো দেশে পেলেও এখানে হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় যোজনা হয় চলতে দেওয়া হয় না, নয় দুর্নীতি হয়। রোড, রেল, টেলিকম সহ বহু প্রকল্প এখানে আটকে পড়ে রয়েছে। পুরো দেশে প্রতি ঘর জল প্রকল্প চলছে। কোনও কোনও রাজ্যে কাজ শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের কোনও জেলায় এমন একটি জেলা নেই যেখানে ১০০% কাজ হয়েছে।''
‘’পিএম যোজনার ঘর মিলছে না। পাঁচ লক্ষ টাকার বিমা যুক্ত আয়ুষ্মান ভারত গোটা দেশে চলছে। কিন্তু তৃণমূল নির্মমতার সঙ্গে এই প্রকল্প লাগু হচ্ছে না। বাংলার কেউ যদি ইন্টারভিউ, ঘুরতে বা কোনও কাজে অন্য রাজ্যে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে তাহলে আয়ুষ্মান ভারত কার্ড না থাকায় বিনামূল্যে চিকিৎসা পারছেন না। গরfব হোক বা আদিবাসী সবাইকে বঞ্চিত করছে তৃণমূল সরকার। বিজেপি এলেই এই সব যোজনার লাভ পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি মানুষ পাবেন। বিজেপি পশ্চিমবঙ্গকে সংকট থেকে বের করতে বদ্ধপরিকর।''
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।