
বিধানসভা উপনির্বাচনের ফল প্রকাশের দিনই তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয় মিছিল থেকে ছোঁড়া বোমায় মৃত্যু হয়েছিল নাবালিকার। মেয়েকে হারিয়ে শোক ভুলে ক্ষোভে ফুঁসছেন নিহতের মা সাবিনা ইয়সমিন। বর্তমানে তাঁর একমাত্র দাবি তাঁর মেয়ের খুনিদের শাস্তি দিতে হবে। মেয়ের মৃত্যুর বিচার তিনি চান বলেও দাবি করেছেন। ভয়ডর ভুলে সন্তান হারা মা স্থানীয় পুলিশ সুপারের মুখের ওপরই বলে দিয়েছেন, তাঁর আস্থা নিয়ে পুলিশের ওপর।
কালীগঞ্জের মির ফাঁড়ির পুলিশ আধিকারিকরা এদিন নিহত নাবালিকার বাড়িতে গিয়েছিল। নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে যায়। কিন্তু তাতেই রীতিমত অপদস্থ হতে হয় পুলিশ কর্তাদের। কারণ সদ্য-সন্তানহারা সাবিনা ইয়াসমিল বলেন, 'আপনাদের তো শেখানো হয়েছে ঝামেলা লাগুক, শিশুর প্রাণ যাক। কিছুই করবেন না। আপনাদের কাউকে জবাব দিতে হয় না। আপনি আমাকে জবাব দিন। আমার সন্তান ফেরত চাই।' তবে সাবিনা এখানেই থেমে থাকেননি। তিনি বলেছেন, 'কোনও ক্ষমতা নেই আপনাদের। কিছু করতে পারবেন না।' পুলিশ কর্তাদের দলে ছিলেন নদিয়ার পুলিশ সুপার অমরনাথ দে। তিনি নিহতের মায়ের সঙ্গে কথা বলতে যান। পুলিশের ওপর আস্থা রাখতে বলেন। কিন্তু পুলিশ সুপারের মুখে এই কথা শুনে বেজায় চটে যান সাবিনা। তিনি আকও বলেন, পুলিশের ক্ষমতা থাকলে গোটা এলাকা শান্ত থাকতে হত না। তাদেরও সন্তানদের নিয়ে বাড়ি ছাড়া হতে হত না। তিনি বলেন, তিনি বোনের বাড়ি চলে যেতেন। কিন্তু তাঁর মেয়ে অনলাইনে অর্ডার দিয়েছিল। সেটি আসার কথা ছিল। তাই মেয়েকে নিয়ে থেকে গিয়েছিলেন। আর তাঁর এই ভয়ঙ্কর পরিণতি হল।
যদিও পুলিশ আশ্বস্ত করেছে অপরাধীদের তারা পাকড়াও করে শাস্তি দেবে। কিন্তু সাবিনা মুখের ওপর বলেন পুলিশ কিছুই করবে না। রীতিমত অপদস্ত হয়েই পুলিশ দ্রুত এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে যায়। নদিয়ার এসপি অবশ্য জানিয়েছেন, সদ্যই মহিলা সন্তান হারিয়েছেন। তাই তাঁর মানসিক পরিস্থিতি ঠিক নেই। এজাতীয় কথা বলাই স্বাভাবিক।
সাবিনা ইয়াসমিন আরও দাবি করেছেন, তিনি ও তাঁর পরিবার সিপিএম-এর ভোটার। আর সেই কারণেই তাঁর মেয়ের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালান হয়েছে। যদিও গতকালই এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছিলেন দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত এই ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর জয় নিশ্চিত হতেই বিজয় মিছিল বার করে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। অভিযোগ সেই মিছিল থেকেই সিপিএম কর্মীর বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়া হয়। ঘটনাটি ঘটে কালীগঞ্জের মেলেন্দি এলাকায়। বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হল এক ১৪ বছরের নাবালিকার। ই ঘটনার পরই গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।