নবদ্বীপে মহা সমারোহে পালিত হয় এই উৎসব, জেনে নিন গুরুত্বপূর্ণ এই তিথির তাৎপর্য

  • রাস মূলত বৈষ্ণবীয় ভাবধারায় অনুষ্ঠিত ধর্মীয় উৎসব
  • শ্রীকৃষ্ণের বাঁশিতে মুগ্ধ হয়ে গোপিনীরা সংসারের মোহ পরিত্যাগ করে
  • শ্রীকৃষ্ণের চরণে সকলে নিজেদের সমর্পন করেছিলেন
  • এই দিনেই গোপিনীদের মনের অভিলাষ পূর্ণ করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ


রাস মূলত কৃষ্ণের ব্রজলীলার অনুকরণে বৈষ্ণবীয় ভাবধারায় অনুষ্ঠিত ধর্মীয় উৎসব। তবে নবদ্বীপের রাস প্রধানত শাক্ত রসাশ্রিত। শ্রীকৃষ্ণের সুমধুর বাঁশির সুরে মুগ্ধ হয়ে বৃন্দাবনের গোপিনীরা নিজেদের সমস্ত কাজ বিসর্জন দিয়ে সংসারের সকল মোহ পরিত্যাগ করে বৃন্দাবনে উপস্থিত হয়েছিলেন। শ্রীকৃষ্ণের চরণে নিজেদের সমর্পন করেছিলেন। প্রথমে শ্রীকৃষ্ণ গোপিনীদের নিজেদের ঘরে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। তাঁদের বলেন, নিজেদের সংসার-ধর্ম পালন করা উচিত। কিন্তু গোপিনীরা নিজেদের মতে দৃঢ় ছিলেন। শ্রীকৃষ্ণ গোপিনীদের দৃঢ়ভক্তি দেখে, তাদের মনোকামনা পূরণার্থে রাসলীলা আরম্ভ করেন। কিন্তু যখনই শ্রীকৃষ্ণ তাদের অধীন বলে ভেবে গোপিনীদের মন গর্ব-অহংকারে পূর্ণ হল, তখনই শ্রীকৃষ্ণ গোপিনীদের মধ্য থেকে অন্তর্ধান হয়ে গেলেন। শ্রীকৃষ্ণ যখন রাধাকে নিয়ে উধাও হলেন, তখন গোপিনীবৃন্দ নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন। ভগবানকে একমাত্র আমার বলে ভেবে অহংকারের ফলে শ্রীকৃষ্ণকে তারা হারিয়ে ফেলেছিলেন। 

আরও পড়ুন- এই দিনেই গোপীদের সঙ্গে লীলায় মেতেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ, জেনে নিন রাসপূর্ণিমার নির্ঘন্ট

Latest Videos

যেহেতু ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জগতের জনক, তাই কোনও মায়ার-বন্ধনে তাঁকে বেঁধে রাখা যায় না। তখন গোপিনীবৃন্দ একাগ্রচিত্তে শ্রীকৃষ্ণের স্তুতি করতে শুরু করেন। ভক্তের ভক্তিতে সন্তুষ্ট হয়ে ভগবান গোপিনীদের মানব জীবনের পরমার্থ বুঝিয়ে দিয়ে তাদের অন্তর পরিশুদ্ধ করেন। গোপিনীদের ইচ্ছাকে তিনি সম্মান জানিয়ে ‘যতজন গোপিনী, ততজন কৃষ্ণ’হয়ে গোপিনীদের মনের অভিলাষ পূর্ণ করেছিলেন। গোপীবৃন্দও জাগতিক ক্লেশ থেকে মুক্তিলাভ করেছিলেন। এইভাবে জগতে রাস পূর্ণিমা তিথি  এক মহা উৎসবে পরিনত হয়।

আরও পড়ুন- কেমন কাটবে সপ্তাহের শেষদিন! দেখে নিন আজকের রাশিফল

নবদ্বীপের জনসমাজে আবহমানকাল থেকেই ধর্ম-সংস্কৃতিতে এর প্রাধান্য দেখতে পাওয়া হয়। নবদ্বীপের রাসে ঘটেছে তন্ত্রাচারের পূর্ণ প্রতিফলন। জনশ্রুতি প্রচলিত আছে, নবদ্বীপে চৈতন্যদেব রাধাকৃষ্ণের রাস উৎসবের সূচনা করেছিলেন। সেই হিসাবে ষোড়শ শতাব্দীর প্রারম্ভেই রাসের সূচনা হয়েছিল। তবে চৈতন্যদেবের সন্ন্যাস গ্রহণের পর নবদ্বীপের বৈষ্ণব আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ে।  ভারতের উত্তরপ্রদেশের মথুরা ও বৃন্দাবনে, পশ্চিমবঙ্গের নদীয়াসহ অন্যান্য জায়গায়, ওড়িশা, আসাম ও মণিপুরে রাসযাত্রার উৎসব বিশেষভাবে উদযাপিত হয়। এই উৎসবের অংশ হিসেবে গোপিনীবৃন্দ সহযোগে রাধা-কৃষ্ণের আরাধনা এবং অঞ্চলভেদে কথ্থক, ভরতনাট্যম, ওড়িশি, মণিপুরি প্রভৃতি ঘরানার শাস্ত্রীয় নৃত্য, রাসনৃত্য বিশেষ মর্যাদার অধিকারী।

Share this article
click me!

Latest Videos

পুলিশি অভিযানে বড়সড় সাফল্য! উত্তেজনা রানাঘাটে, দেখুন | Ranaghat News Today
আর ৮ মাস! জুলাই-অগাস্টে রাজ্যে অকাল ভোট হতে চলেছে! জানালেন BJP সাংসদ | BJP News | Samik Bhattacharya
TMC-কে ভোট দিলেই মিলছে ঠোঙা ভর্তি মুড়ি ও চানাচুর! শোরগোল মেদিনীপুরে | Midnapore | WB By election
অসাধ্য সাধন! যথেষ্ট পরিকাঠামো না থাকার সত্ত্বেও ৮০০ গ্রামের শিশুকে বড় করে তুলল বারাসাত মেডিক্যাল
Suvendu Adhikari: 'পুলিশ গরু প্রতি ২০০০ টাকা তোলা তোলে' বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারীর