বাস্তুশাস্ত্র শব্দটি এসেছে বস্তু থেকে। বাস্তু বলতে সব কিছুকেই বুঝায়- তা একটি স্থান হতে পারে- কিংবা একটা বাড়িও হতে পারে। ভারত উপমহাদেশে প্রায় সভ্যতার সূচনালগ্ন থেকে স্থাপত্য নির্মাণকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সভ্যতার শুরু থেকেই ভারতীও উপমহাদেশে শিল্পচর্চাকে ঊর্ধ্বে স্থান দেয়া হয়েছে। স্থাপত্যশৈলী উপবেদের অন্যতম বিষয়। স্থাপত্য উপবেদ বা স্থাপত্যশাস্ত্র চারটি উপবেদের অন্যতম। প্রায় ৫০০০ বছর ধরে বাস্তুবিদ্যা কালের বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রামে জয়ী হয়েছে। স্থাপত্য উপবেদ বা স্থাপত্য শাস্ত্রের সূত্রগুলো পরবর্তীকালে 'বাস্তুশাস্ত্র' শিরোনামে লিপিবদ্ধ হয়েছে। পরবর্তীতে তা বিস্তার লাভ করে। প্রাচীন যুগে স্থপতিরা কেবল নিছক তৈরির কাজ করতেন না, নির্মাণশৈলী ও পরিকল্পনার বিষয়টিও তদারক করতে হত তাঁদের।
আরও পড়ুন- বাড়ির প্রবেশ দ্বার কেমন হওয়া উচিত, জেনে নিন বাস্তু অনুযায়ী
বাস্তু মেনে যে কোনও নির্মাণ তৈরি করা না হলে তাতে বাস্তুদোষ থাকে বলে মনে করেন বাস্তু বিশেষজ্ঞরা। বাস্তুশাস্ত্র বিশারদরা সেই সব দোষ কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রতিকারের ব্যবস্থা করেন। বাস্তুশাস্ত্র বিশারদদের মতে বাড়িতে বা অফিসে কোনও জিনিস কীভাবে কোথায় রাখা হবে, তার উপর নির্ভর করে শুভ-অশুভ বা ভালো-মন্দ বিষয়। তাই এই বিষয় মাথায় রেখে প্রথমেই সঠিক জমি বাছাই করতে হবে। কারণ জমিতে বাস্তু দোষ থাকলে তার প্রভাব পড়ে নির্মাণের উপর। তাই সঠিক বাস্তু মেনে জমি বাছাই করলে বা কিছু নিয়ম মেনে চললে বাস্তুদোষ কাটানো সম্ভব হয়। তাই বাস্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন বাস্তু সব সময় ভালো করে বিচার করে তারপর যে কোনও নির্মাণ তৈরি করলে তা জীবন শান্তিময় ও সুখকর হয়।
আরও পড়ুন- রাহুর শুধু কু-প্রভাব নয়, জেনে নিন লগ্ন অনুযায়ী এর শুভ ফল
বাস্তুমতে জেনে নেওয়া যাক কোন দিকে ভূমি ঢালু হওয়া শুভ। জমি নির্বাচণের বিষয়ে জেনে নিন বাস্তুর ছোটখাটো বিষয়গুলি। কোন জমির ঢাল যদি পশ্চিম দিকে হয় সে ক্ষেত্রে ধনহানি ও পীড়াদায়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। উত্তর দিকে জমি ঢালু থাকলে তা হবে ধনদায়ী। জমির ঢাল দক্ষিণ দিকে থাকলে তাতে থাকে যশোহানি ও পুত্রহানির যোগ। কোনও জমির ঢাল পূর্ব দিকে থাকলে সেটি হবে ধনদায়ী ও উন্নতিকারী। অগ্নি কোনের দকে জমি ঢালু থাকলে তা কষ্ট, মৃত্যু ও পীড়াদায়ী। নৈঋত কোনে জমি ঢালু থাকলে তা যশোহানি ও পুত্রহানি। ঈশান কোনে জমি ঢালু থাকলে তা বিদ্যা, ধনধান্য ও সুখদায়ী। নৈঋত দিকে জমির ঢাল থাকলে তা যশোহানি ও পুত্রহানি।