জগদ্ধাত্রী পূজার নিয়মটি একটু স্বতন্ত্র। দুটি প্রথায় এই পুজা হয়ে থাকে। অনেকে সপ্তমী থেকে নবমী দুর্গাপূজার ধাঁচে পুজা করে থাকেন। আবার অনেকে নবমীর দিনই তিন বার পূজার আয়োজন করে সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী পুজা সম্পন্ন করেন।
জগদ্ধাত্রী বা জগদ্ধাত্রী দেবী, যা দেবী দুর্গার অপর রূপ। উপনিষদে তার নাম উমা হৈমবতী নামে অভিহিত। বিভিন্ন তন্ত্র ও পুরাণ গ্রন্থেও এর উল্লেখ পাওয়া যায়। যদিও জগদ্ধাত্রী আরাধনা মূলতঃ এই বাংলাই প্রচলিত। নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর ও হুগলি জেলার চন্দননগর, গুপ্তিপাড়ার জগদ্ধাত্রী উৎসব তাই জগদ্বিখ্যাত। কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে দেবী জগদ্ধাত্রীর বাৎসরিক পুজা অনুষ্ঠিত হয়। ১২ নভেম্বর ২০২১, শুক্রবার অর্থাৎ আজকের দিনেই নবমী তিথিতে বহু জায়গায় অনুষ্ঠিত হবে এই দেবীর আরাধনা।
আরও পড়ুন- চন্দ্রগ্রহণের পরের দিনেই হতে চলেছে বিশাল এক মহাজাগতিক পরিবর্তন, জেনে নিন এর প্রভাব
জগদ্ধাত্রী দেবী ত্রিনয়না, চতুর্ভূজা ও সিংহবাহিনী। তার হাতে শঙ্খ, চক্র, ধনুক ও বাণ, গলায় নাগযজ্ঞোপবীত বিরাজমান। বাহন সিংহ করীন্দ্রাসুরের সঙ্গে হস্তীরূপী অসুরের পিঠে দণ্ডায়মান দেবী। দেবীর গাত্রবর্ণ উদিয়মান সূর্যের ন্যায়। নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের রাজত্বকাল থেকেই বঙ্গদেশে জগদ্ধাত্রী পূজার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।
আরও পড়ুন- মেষ রাশির ব্যক্তিদের কেমন কাটবে এই মাস, দেখে নিন
জগদ্ধাত্রী পূজার নিয়মটি একটু স্বতন্ত্র। দুটি প্রথায় এই পুজা হয়ে থাকে। অনেকে সপ্তমী থেকে নবমী দুর্গাপূজার ধাঁচে পুজা করে থাকেন। আবার অনেকে নবমীর দিনই তিন বার পূজার আয়োজন করে সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী পুজা সম্পন্ন করেন। এই পূজার অনেক প্রথাই দুর্গাপূজার অনুরূপ।
আরও পড়ুন- শুক্রবারে ৪ রাশির শারীরিক সমস্যা বৃদ্ধির আশঙ্কা, দেখে নিন আজকের রাশিফল
১৭১০ খৃষ্টাব্দে কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির মতে এই পুজা মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায় শুরু করেছিলেন। শোনা যায় তিনি তৎকালীন নবাবের কাছে কোন এক কারণে দুর্গা পূজার সময়ে বন্দি হন এবং পরে দুর্গা পূজার পর ছাড়া পেলে স্বপ্নাদেশে পরের মাসের অর্থাৎ কার্তিক শুক্লা নবমীতে এই পূজার প্রচলন করেন। সময়কাল নিয়ে মতভেদ থাকলেও অনুমানিক সূচনাকাল সর্বপ্রথম কৃষ্ণনগর। এর পর চন্দননগর বা অন্যান্য স্থানে জগদ্ধাত্রীপূজার সূচনা হয়।
আরও পড়ুন- পরিবারে সুখ শান্তি বজায় রাখতে চান, রাতে ঘুমতে যাওয়ার আগে সচেতন হন
অন্যদিকে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পূজার প্রবর্তক ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী। কথিত আছে, রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ ইন্দ্রনারায়ণ ছিলেন চন্দননগরের ফরাসি সরকারের দেওয়ান। প্রায় আড়াইশো বছর আগে, কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির পুজা দেখে মুগ্ধ হয়ে ইন্দ্রনারায়ণ চন্দননগরের লক্ষ্মীগঞ্জ চাউলপট্টির নিচুপাটিতে জগদ্ধাত্রী পূজার প্রচলন করেন। লক্ষ্মীগঞ্জ প্রতিষ্ঠার কিছুকাল পরেই এই পূজার সূচনা। এই পুজা চন্দননগরে আদি পুজা নামে পরিচিত। এখনও পর্যন্ত পুরুষানুক্রমে দেওয়ান চৌধুরীদের উত্তরপুরুষের নামে এই পূজার সংকল্প হয়।